UNESCO World Heritage Site: শান্তিনিকেতনের পরে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় কর্ণাটকের হোয়সালা, এই মন্দিরের বিশেষত্ব জানেন?
Hoyasala Temple, Karnataka: কর্ণাটকের বেলুর, হালেবিদ এবং সোমনাথপুরার মন্দির নিয়ে হোয়সালা। মন্দিরগুলো শিবের প্রতি উৎসর্গীকৃত। মহীশূর থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই হোয়সালা মন্দির। এখানকার স্থাপত্য, ভাস্কর্যের টানেই বহু পর্যটক ভিড় করেন হোয়সালায়।

ইউনেস্কো হেরিটেজের তালিকায় শান্তিনিকেতনের পাশাপাশি কর্ণাটকের হোয়সালা মন্দির অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। শান্তিনিকেতন বেড়াতে যায়নি, এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া কঠিন। শনি-রবিবারের ছুটিতে, সোনাঝুরি হাটের টানে বহু মানুষ ভিড় করে শান্তিনিকেতনে। কিন্তু এবার শান্তিনিকেতনের পাশাপাশি ভারতের ৪২তম ইউনেস্কো হেরিটেজ সাইট ঘুরে দেখার পালা। অর্থাৎ এবার ছুটি পেলে চলে যান কর্ণাটকে। ঘুরে দেখুন হোয়সালা মন্দির।
কর্ণাটকের বেলুর, হালেবিদ এবং সোমনাথপুরার মন্দির নিয়ে হোয়সালা। মন্দিরগুলো শিবের প্রতি উৎসর্গীকৃত। মহীশূর থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই হোয়সালা মন্দির। এখানকার স্থাপত্য, ভাস্কর্যের টানেই বহু পর্যটক ভিড় করেন হোয়সালায়। এই হোয়সালা মন্দিরগুলি তৈরি করা হয়েছিল দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ শতাব্দীতে। হোয়সালা রাজা দ্বাদশ শতাব্দীতে এই মন্দিরগুলো নির্মাণের সূচনা করেন। সেই সময় হোয়সালা রাজবংশের রাজধানী ছিল এই জায়গাটি। শিল্প ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বিবেচিত হত হোয়সালা। এখন এই জায়গাটির সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে এএসআই।
হয়সালা মন্দিরের সোমনাথপুরার চেন্নাকেসাভ নির্মিত হয়েছিল ১২৬৮ খ্রিস্টাব্দে তীয় নরসিংহের তত্ত্বাবধানে। কর্ণাটকের হাসান জেলার বেলুড়ে কেশব মন্দির তৈরি করেছিলেন বিষ্ণুবর্ধন। এই মন্দিরের দেওয়ালে দেবতা, দেবী ও সঙ্গীতশিল্পীদের অবয়ব খোদাই করা হয়েছে। তবে, হোয়সালা সাম্রাজ্যের দ্বারা নির্মিত বৃহত্তম শিব মন্দির হল হোয়সালেশ্বর মন্দির। নক্ষত্রের আকারে তৈরি এই মন্দির দুটো মন্দির একসঙ্গে নিয়ে তৈরি। এখানকার মন্দিরের দেওয়ালে খোদাই করা রয়েছে হিন্দু দেবতা, ঋষি, পাখি, শৈলীযুক্ত প্রাণী এবং হোয়সালা রাজাদের জীবনকে সুন্দর করে চিত্রের আকারে সাজানো রয়েছে। এছাড়া মন্দিরের বাইরের দেওয়ালে রয়েছে রামায়ণ, মহাভারত ও ভগবত গীতা। ভারতীয় মহাকাব্যগুলো সুন্দরভাবে চিত্রায়িত করার জন্য হোয়সালা জনপ্রিয়।
শিবের মন্দির হওয়ায় এখানে দুটি নন্দী রয়েছে। নন্দীমন্তপ ঠিক মন্দিরের সামনে অবস্থিত। আরেকটি সুবিশাল নন্দি পাথরের অলংকার দ্বারা সজ্জিত। নন্দীমন্তপের ঠিক পিছনের দিকে সূর্যকে উৎসর্গ করা একটি উপাসনালয় রয়েছে, যেখানে ২ মিটারের লম্বা সূর্য মূর্তি রয়েছে।
হালেবিদ, পূর্বে দ্বারসমুদ্র নামে, হোয়সালাদের প্রাচীন রাজধানী হিসেবে পরিচিত ছিল। বেলুর থেকে মাত্র ১৭ কিলোমিটার দূরত্বে এটি অবস্থিত। হোয়সালা রাজবংশ হিন্দু ও জৈন উভয় ধর্মের মন্দির নির্মাণ করেছিল। কিন্তু ১৪ শতকে, আলাউদ্দিন খিলজি এবং মুহম্মদ তুঘলকের আক্রমণের ফলে বিপুল পরিমাণ সম্পদ লুন্ঠিত ও নষ্ট হয়ে যায়। তারপর এই শহর সেই ১২ ও ১৩ শতকের জৌলুস আর ফিরে পায়নি। ধীরে-ধীরে ক্ষয় যেতে থাকে মন্দিরগুলো। কিন্তু মন্দিরের কারুকার্য ও সৌন্দর্যের টানে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে। আর এখন এই হোয়সালা মন্দির জায়গা করে নিয়েছে ইউনেস্কো হেরিটেজ সাইট হিসেবে।