Rash Mela 2023: ২০০ বছরের প্রাচীন রাসমেলার প্রচারে রাজ্য পর্যটন দফতর, এবারে কী চমক রয়েছে কোচবিহারে?

Cooch Behar: অবিভক্ত বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাসমেলা উপলক্ষে মানুষ কোচবিহার আসতেন। সে সময় বিশেষ ট্রেনও চলত। এখনও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা আসেন। ভারতেরও বিভিন্ন রাজ্য থেকে ব্যবসায়ীরা যোগদান করেন এই মেলায়। প্রায় কয়েক'শ কোটি টাকার কেনাবেচা হয় কোচবিহারের রাসমেলায়। এ বছর রয়েছে আরও চমক।

Rash Mela 2023: ২০০ বছরের প্রাচীন রাসমেলার প্রচারে রাজ্য পর্যটন দফতর, এবারে কী চমক রয়েছে কোচবিহারে?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 26, 2023 | 11:12 AM

রাস্তার দু’পাশ জুড়ে বসেছে মস্ত মেলা। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস তো রয়েছে, তার সঙ্গে হাতে তৈরি করা রকমারি জিনিসপত্র। মেলায় গেলে শখের জিনিসও মেলে, তাই তো দূর-দূরের গ্রাম থেকে মানুষ আসেন মেলায়। জিনিসপত্র কেনাকাটির সঙ্গে মুখরোচক খাবার খাওয়া আর নাগরদোলা চাপার মজাও রয়েছে মেলায়। বাংলার সংস্কৃতি থেকে ধীরে-ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে এই ‘মেলা’। এক সময় রথ, চড়কের মতো বাংলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মেলা বসত। দুর্গাপুজো, কালীপুজোর মতো উৎসবেও মেলা বসতে দেখা যেত। এখন বাংলায় মেলা নিয়ে উন্মাদনা কমেছে। কিন্তু এ রাজ্যে এমন কিছু মেলা এখনও বসে, যার গুরুত্ব ও জনপ্রিয়তা এক চুলও কমেনি। সামনেই রয়েছে রাস। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বসবে রাসের মেলা। কিন্তু কোচবিহারের রাসের মেলাকে টেক্কা দেওয়ার মতো কেউ নেই।

২০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন কোচবিহার রাসমেলা। ১৮৯০ সালে কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণের আমলে মদনমোহন মন্দির স্থাপিত হয়। সেই সময় থেকেই এখানে রাস মেলা হয়। এমনকি দুই শতাব্দী প্রাচীন এই রাসের মেলায় প্রতি বছর হাজার-হাজার মানুষ ভিড় করেন। তাই তো এ বছর কোচবিহারের রাসমেলাকে পর্যটন-মানচিত্রে স্থান দিয়েছে রাজ্য পর্যটন দফতর। কোচবিহার জেলার ও রাসমেলার ইতিহাস, এখানকার দর্শনীয় স্থান মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলার মানুষের পাশাপাশি বাইরের রাজ্যের মানুষের কাছেও যাতে কোচবিহারের রাসমেলার গুরুত্ব পৌঁছায়, তারই চেষ্টায় রয়েছে পর্যটন দফতর থেকে কোচবিহার পুরসভা।

আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে কোচবিহারে রাসের মেলা শুরু। ২৬ নভেম্বর মদনমোহন মন্দিরে রাসচক্র ঘুরিয়ে শুরু হবে উৎসব। কোচবিহারের রাসমেলার প্রধান নিদর্শন ও আকর্ষণীয় বিষয় হল এই রাসচক্র। কারণে এই রাসচক্র হল সর্বধর্ম সমন্বয়ের প্রতীক। রাস উপলক্ষে প্রতি বছর রাসচক্র তৈরি করা হয়। আর এটি করে একটি মুসলিম পরিবার। নৃপেন্দ্রনারায়ণের সময়কাল থেকেই এই নিয়ম চলে আসছে। বর্তমানে রাসচক্র তৈরির দায়িত্বে রয়েছেন সেই পরিবারের আলতাফ মিয়া। এই রাসচক্রে হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন দেবদেবীর ছবি রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে মুসলিমদের তাজিয়া এবং বৌদ্ধ ধর্মের বং-এর ছাপ।

অবিভক্ত বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাসমেলা উপলক্ষে মানুষ কোচবিহার আসতেন। সে সময় বিশেষ ট্রেনও চলত। এখনও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা আসেন। কোচবিহারের রাসমেলায় গেলে ওপার বাংলার জামদানি শাড়ি থেকে শুরু করে পদ্মার ইলিশ ও খেজুরের গুড় সবই মিলবে। ভারতেরও বিভিন্ন রাজ্য থেকে ব্যবসায়ীরা যোগদান করেন এই মেলায়। প্রায় কয়েক’শ কোটি টাকার কেনাবেচা হয় কোচবিহারের রাসমেলায়। এ বছর রয়েছে আরও চমক। বাংলাদেশের পাশাপাশি নেপাল, ভুটান, মালেশিয়া, তাইওয়ান ও ইন্দোনেশিয়ার ব্যবসায়ীরাও যোগদান করতে চলেছে কোচবিহারের রাসমেলায়। ২৭ নভেম্বর শুরু হয়ে প্রায় ২০ দিন ধরে চলবে রাসমেলা। এই প্রাচীন রাসমেলাকে ইউনেস্কোর ‘হেরিটেজ’-এর আওতায় আনতে বিশেষ উদ্যোগ কোচবিহার পুরসভা। তাই তো ২০০ বছরের পুরনো রাসমেলার তথ্যচিত্র তৈরি করার কথাও ভাবা হচ্ছে। তবে, এ বছর কোচবিহারের রাসমেলার প্রচারে উদ্যোগী রয়েছে রাজ্য পর্যটন দফতর।