Kolkata Tram and Book Store: উত্তরের মতো দক্ষিণেও এবার বইপাড়ার স্বাদ! দোসর সেই হেরিটেজ ট্রামের কামরা

Kolkata Travel: আড্ডা, খাওয়া-দাওয়া, বই পড়া, গান, বাজনা সব একসঙ্গে পাওয়ার পরিবেশ এবার হাতের কাছেই। কলকাতার নয়া প্রজন্মের হাত ধরেই রূপ বদলের প্রয়াস।

Kolkata Tram and Book Store: উত্তরের মতো দক্ষিণেও এবার বইপাড়ার স্বাদ! দোসর সেই হেরিটেজ ট্রামের কামরা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 25, 2022 | 8:18 PM

প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো ইতিহাস, ঐতিহ্যকে সঙ্গী করে মহানগরের (Kolkata) বুকে আজও জ্বলজ্বল করছে হেরিটেজ যান, ট্রাম (Kolkata Tram)। পরিবেশবান্ধব তো বটেই, কলকাতার ঐতিহ্যের কথা ভেবে এই যানকে তুচ্ছ করতেও নারাজ বিভিন্ন মহল। দূষণ কমাতে বিদেশের বহু জায়গায় ট্রাম ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ব্রিটিশ আমলে এই প্রাচীন যান লুপ্তপ্রায় হলেও এই যানের মাহাত্ম্যকে আঁকড়ে ধরেই বাঁচতে চায় তিলোত্তমা। তবে কলকাতায় আরও একটি জিনিস রয়েছে, যা আর কোথাও এমন প্রেমিক মানুষে পাওয়া দুষ্কর। বইপাড়া (College Street)। ভূভারতে এমন পাড়া নেই। যেখানে বইপ্রেমীদের গিজগিজ আর নতুন বইয়ের গন্ধে মম করছে। বইপোকা বাঙালি ঐতিহ্যপ্রিয়। তাই উভয়কেই সংযোজন করার একটি ছোট্ট প্রচেষ্টা।

এবার আরও এক নতুন জিনিস নিয়ে নবকলেবরে হাজির হচ্ছে কলকাতার ট্রাম। ট্রামের সঙ্গে বইপোকাদের মিলিয়ে দেওয়ার নজিরবিহীন ঘটনা। তবে উত্তুরে নয়, কলেজ স্ট্রিটের আমেজ মিলবে এবার দক্ষিণেও। রাজ্য পরিবহণ দপ্তর ও পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের যৌথ প্রচেষ্টায় পরিত্যক্ত ট্রামের কামরায় তৈরি হচ্ছে আস্ত একটি বইপাড়া। কলেস স্ট্রিটের আমেদ নিললেও সেখানকার মত বিশাল জায়গা হয়তো পাওয়া যাবে না, কিন্তু ফিলিংস পাবেন ষোলোআনা। যাতায়াতের সুবিধার কথা মাথায় রেখেই, আপাতত​ কেবল টালিগঞ্জ ডিপোতে এমন ব্যবস্থা চালু করা হবে। টালিগঞ্জ ডিপোর বইপাড়া জনপ্রিয়তা পেলেই বেহালা ট্রাম ডিপোতেও বইয়ের দোকান দেওয়া হবে। বছরের শেষে দোকানের মালিককে পরিবগন দপ্তরকে ভাড়া গুনতে হবে। তবে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কিন্তু এমনটা হলে কোনও অংশেই ক্ষতি তো নয়ই আধুনিকতার মোড়কে নয়া পরিবেশ তৈরি হবে এই কলকাতার বুকে।

কলকাতার ট্রাম নিয়ে বেশ কয়েকবার কয়েকটি সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। যে হারে জনসংখ্যা ও গাড়ির সংখ্যা বেড়ে তলেছে, তাতে ট্রাফিক কমাতে কলকাতার সব রাস্তায় ট্রাম চালানো সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়েছেন পরিবহণ মন্ত্রী। তাঁর কথায়, যেখানে বেশি গতিতে গাড়ি চলে, যে রাস্তায় চ্রাম চললে যানজট তৈরি হয় না, সেখানে সেখানে চ্রাম চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর অর্থ হল, কলকাতার সব জায়গায় এবার থেকে ট্রামের দেখা মিলবে না। হেরিটেজ হিসেবে ট্রাম চালানোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি মহানগরের বুকে পরিবেশ-বান্ধব হিসেবে আরও বেশি বৈদ্যুতিক বাস চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে । বর্তমানে ১০০টি বৈদ্যুতিক বাস রয়েছে। সামনের বছর আরও ৪০০টি বাস নামানো হতে পারে।

বিধানসভায় ট্রাম নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ফিরহাদ বলেছেন, “যেখানে দ্রুতগামী গাড়ি চলাচল করে সেখানে যানজটের জন্য ট্রাম চালানো সম্ভব নয়। কারণ কলকাতার অনেক রাস্তা চওড়া করা সম্ভব হয় না। ট্রাম যেখানে রাখা সম্ভব সেখানে থাকবে। হেরিটেজ হিসেবে রেখে দিচ্ছি। এই মুহূর্তে ট্রাম চললে চিৎপুর, গড়িয়াহাটে যানজট হয়। ওখানে জায়গা ছোট। আমরা টালিগঞ্জ ট্রামডিপো, এসপ্ল্যানেড, খিদিরপুর থেকে ট্রাম চালাচ্ছি। যেখানে বড় রাস্তা রয়েছে, সেখানে ট্রাম রাখছি।” ফলে কলকাতার বুকে আনাচে কানাচে বই ঠাসা ট্রামের কামরা দেখতে পেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

প্রাথমিকভাবে একেকটি কামরায় একেকটি বুকস্টল গড়া হবে বলে ভাবা হয়েছে। মানে একটি ট্রামে ২টি বইয়ের দোকান থাকবে। প্রথম দফায় দশটি ট্রামে এমন অভিনব বইয়ের স্টল দেওয়ার কথা হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী কামরার সংখ্যা বাড়ানো হবে। শুধু বই বিকিকিনি নয়, থাকবে ক্যাফেটেরিয়াও। আড্ডা, খাওয়া-দাওয়া, বই পড়া, গান, বাজনা সব একসঙ্গে পাওয়ার পরিবেশ এবার হাতের কাছেই। কলকাতার নয়া প্রজন্মের হাত ধরেই রূপ বদলের প্রয়াস। টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো এবার নতুনের মোড়কে, নয়া আদলে দেখা যাবে।