AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Motorcycle Ride: মোটরসাইকেল ডায়েরিজ়: তৃতীয় পর্ব, সুন্দরবনের যে বিশাল অংশ কভার করা যাবে বাইক নিয়েই

বাইক নিয়ে ভেসেল অথবা নৌকার ওপর উঠিয়ে, কখনও পাকা রাস্তা আবার কখনও মাটি, কাদার উপর দিয়ে তার সঙ্গে চারপাশে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বাইক চালানোর অভিজ্ঞতা। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার একটি জাতীয় উদ্যান, ব্যাঘ্র প্রকল্প ও বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ।

Motorcycle Ride: মোটরসাইকেল ডায়েরিজ়: তৃতীয় পর্ব, সুন্দরবনের যে বিশাল অংশ কভার করা যাবে বাইক নিয়েই
| Edited By: | Updated on: May 21, 2023 | 9:59 AM
Share

এই পৃথিবীর যা কিছুই বিলুপ্তির পথে যেমন জায়গা, কাজ, সময়… ইত্যাদি এই জীবদ্দশায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করে নেওয়াই শ্রেয়। কারও দোষ না দিয়ে বরং বলি পৃথিবীর জলবায়ুর পরিবর্তনের নিয়ম এই কিছু জায়গা যেমন রুপিন পাশ-এ পড়ে থাকা মানুষের কঙ্কাল অথবা মাথার খুলি, চাদর ট্রেক, সুন্দরবনের এই বিশাল ব-দ্বীপ আজ ধ্বংসের পথে। চলুন আজ এই সুন্দরবনের বিশাল ব-দ্বীপ ঘুরে আসি। জেনে আসি এখানকার পশুপাখির জীবনযাত্রা, ম্যানগ্রোভ অভয়ারণ্য, সরকারি উদ্যোগে নেওয়া কিছু প্রকল্প, মানুষের জীবনধারা ও জীবিকা, প্রতিনিয়ত নদী বা সমুদ্রের গর্ভে চলে যাওয়া একাধিক ভূখণ্ড।

পৃথিবীর এই বিশাল ব-দ্বীপের বেশিরভাগ অংশই বাংলাদেশে। তাই ভিসার প্রয়োজন না নিয়ে আমাদের দেশেই যেটুকু ব-দ্বীপ আছে, তাকেই একটু ঘুরে দেখি। জনপ্রিয় কিছু জায়গা যেমন কাকদ্বীপ নামখানা বকখালি গঙ্গাসাগর না গিয়ে বরং একটু ভিন্ন জায়গার স্বাদ নিই। চলুন বেড়িয়ে আসি রায়দিঘি, পাথরপ্রতিমা, সীতারামপুর, মানা দ্বীপ, বনি ক্যাম্পের জঙ্গলের মধ্যে রাত্রিনিবাস ইত্যাদি। আর সব থেকে মজার জিনিস হল বাইক নিয়ে ভেসেল অথবা নৌকার ওপর উঠিয়ে, কখনও পাকা রাস্তা আবার কখনও মাটি, কাদার উপর দিয়ে তার সঙ্গে চারপাশে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বাইক চালানোর অভিজ্ঞতা।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার একটি জাতীয় উদ্যান, ব্যাঘ্র প্রকল্প ও বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ। বৃহত্তর সুন্দরবন সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনভূমি হিসেবে অখণ্ড বন যা বিশ্বের সর্ববৃহৎ। ১৮৭৮ সালে সুন্দরবনের বর্তমান ভারতীয় অংশটি সংরক্ষণের কাজ আরম্ভ হয়। ১৯৭৩ সালে মূল এলাকাটি সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প হিসেবে ঘোষিত হয়। গোটা সুন্দরবনকে জালের মতো জড়িয়ে রয়েছে সামুদ্রিক স্রোতধারা, কাঁদাচর এবং ম্যানগ্রোভ বনভূমির লবণাক্ততা-সহ ছোট-ছোট দ্বীপ। বনভূমিটি স্বনামে বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার ছাড়াও নানা ধরনের পাখি, চিত্রাহারিন, নোনা জলের কুমির, কচ্ছপ, স্বাদু জলের কুমির ও সাপ-সহ অসংখ্য প্রজাতির প্রাণীর অবস্থান হিসেবে পরিচিত। এই অঞ্চলের নদীর জোয়ারের জলে সিক্ত লবণাক্ত মাটি গাছের প্রয়োজনীয় জল শোষণ করতে পারে না, তাই এখানকার গাছের বৈচিত্র অন্যদের থেকে আলাদা। গরান, গাওয়া, সুন্দরী, গর্জন, হেতাল, গোলপাতা ইত্যাদি সুন্দরবনের গাছপালা। এছাড়া এখানকার মানুষের প্রধান জীবিকা হল মাছধরা ও জঙ্গলে গাছে-গাছে মৌমাছির বানানো মৌচাক দিয়ে মধু সংগ্রহ করা। বছরে একবারই এখানকার জমিতে ধান চাষ করা হয়ে থাকে কারণ বর্ষাকালে বাঁধ ভেঙে সমুদ্রের নোনা জল চাষের জমিতে ঢুকে যায় বলে চাষ-আবাদ হয় না।

বাড়ি থেকে সকালে ভারি ব্রেকফাস্ট করে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন বারুইপুর জয়নগর হয়ে রায়দিঘি ইকো ট্যুরিজম পার্কের উদ্দেশ্যে, যা আনুমাননিক কলকাতা থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। রাস্তা মোটামুটি ভালই বলা যায়। শহরের কোলাহল থেকে খানিকটা দূরে অবস্থিত এই রায়দিঘি গ্রাম। রায়দিঘি ইকো ট্যুরিজম পার্কের ভেতরে চারপাশের পরিবেশ গাছপালা এবং নানা ধরনের ফুলের সমাহার আপনাকে মুগ্ধ করবে আর এখানে মুগ্ধ করবে এই পার্কের সুবিশাল জলাধার। এই পার্কে কিছুটা সময় কাটিয়ে চলে আসুন প্রবাহমান মানি নদী এবং ঠাকুরানি নদীর আঁকাবাঁকা গতিপথ উপভোগ করতে। এই ২টি নদীর আঁকাবাঁকা গতিপথের পাশে অসংখ্য পিকনিক স্পট আছে। এই ২টি নদী হল রায়দিঘির প্রধান নদী, যা মাতলা নদীরই শাখা নদী। এই নদীর পরিষ্কার জল আর দু’পাশে ছড়িয়ে থাকা বিস্তীর্ণ বন জঙ্গল আপনাকে মুগ্ধ করবে। তারপর চলে আসুন জটার দেউল নামে একটি স্থাপত্য মন্দির বা টাওয়ারের কাছে। এই স্থাপত্য নিয়ে নানা মানুষের মধ্যে বিভিন্ন কথা আছে, এটি ৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে বিক্রমপুরের চন্দ্রবংশের তৎকালীন রাজা জয়চন্দ্রের সময়ে সৃষ্টি। আবার এই রকম স্থাপত্য বীরভূম, মুর্শিদাবাদ জেলাতেও পাওয়া যায়। এই স্থাপত্যের সঙ্গে ওড়িশার দেউল স্থাপত্যের মিল আছে। যাই-ই হোক, এই স্থাপত্যের চারপাশে একটু সময় কাটালে আপনার ভাল লাগবে, ভাল লাগবে এখানকার বিস্তীর্ণ সবুজ ঘাস আর চারপাশে বড়-বড় গাছের বৈচিত্র্য।

এরপর বাইক নিয়ে সোজা চলে আসুন রামগঙ্গা দু’নম্বর ফেরিঘাটে। এটি রাজ্য সড়কের একটি অংশ, যা জটার দেউল থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। চারপাশে ছোট ছোট গ্রামের উপর দিয়ে আপনার বাইক চালাতে বেশ ভালই লাগবে। নদী পার করে পাথরপ্রতিমা আইল্যান্ড হয়ে চলে আসুন ভগবতপুর কুমির প্রকল্পে। এই ১২ কিলোমিটার রাস্তাটি একটু খারাপ। এই প্রকল্পটি তৈরি হয় ১৯৭৬ সালে। সুন্দরবনের কুমিরের সংরক্ষণ মূলত সুন্দরবনের নদীতে কুমিরের সংখ্যা বৃদ্ধি করতেই এই প্রকল্প গড়ে তোলে। বর্তমানে নানা বয়সের নানা প্রজাতির তিনশরও বেশি কুমির রয়েছে, যা বড় মাঝারি ছোট নানা মাপের কুমির। এখানে কীভাবে ডিম থেকে কুমির ধীরে-ধীরে বড় হয় এবং দিনের সংখ্যা হিসাবে আলাদা-আলাদা কাঁচের বোতলে সংরক্ষণ করে রাখা আছে। ধীরে-ধীরে কুমিরের বাচ্চাগুলো ছোট থেকে বড় হলে আবার তাদের নদীতে ছেড়ে দেওয়া হয়। এই জায়গাটি সম্পূর্ণ ঘুরে দেখতে মোটামুটি এক থেকে দু’ঘন্টা সময় লাগবে।

আবার বাইক নিয়ে চলে আসুন পাথরপ্রতিমা ঘাটে। যে নৌকা তেতুলতলা ঘাট হয় চাঁদমারি ফেরিঘাটের উদ্দেশ্যে যাচ্ছে, সেই নৌকায় উঠে পড়ুন। সুন্দরবনকে কাছ থেকে দেখতে গেলে একমাত্র সম্বল নৌকা। তার কারণ এখানকার ছোট-ছোট আইল্যান্ডগুলো এখনও ওভারব্রিজের মাধ্যমে রাস্তার সঙ্গে যুক্ত নেই। ছোট-ছোট নদী পারাপারের একমাত্র সম্বল নৌকা। এই নৌকাগুলিতে বাইক তুলতে কোন অসুবিধেই হবে না, তার কারণ এখানকার আঞ্চলিক মানুষেরা এভাবেই যাতায়াত করেন। চাঁদমারি ফেরিঘাটে নেমে নদীর পাশ দিয়ে চলে আসুন সীতারামপুর গোবর্ধনপুর সমুদ্র সৈকত এবং এই অঞ্চলের শেষ পয়েন্ট বিশ্বেশ্বর পয়েন্ট। এখানকার সমুদ্র সৈকত আপনাকে মুগ্ধ করবে, আর মুগ্ধ করবে এখানকার রংবেরঙয়ের কাঁকড়া, রাশি-রাশি গাছপালা আর দূরে বিসৃত বঙ্গোপসাগর। এই সমুদ্র সৈকতে মানুষের আনাগোনা কম বলে এখানে এখনও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বজায় আছে। মানুষের যেই অঞ্চলে বেশি যাতায়াত সেই অঞ্চল বেশি আমরা নোংরা করে থাকি তার ফলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেমন সেখানকার গাছপালা পশুপাখি প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট করে থাকি এবং তা দূষিত করে থাকি। তাই নিজেকে আগে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে, এই পরিবেশ সবার। তাই এই পরিবেশে বাঁচার অধিকারও সবার আছে, তাই কোনও জায়গায় গিয়ে প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট না করে চলুন তার সৌন্দর্য উপভোগ করি। এই মুক্ত খোলা সমুদ্র এসে মনে হয় যেন আরও কিছুটা সময় তার কাছে থেকে যাই।

এরপর আপনি চাঁদমারি ফেরিঘাট হয়ে আবার কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারেন। আর তা না করে যদি সুন্দরবনকে আরও কাছ থেকে দেখতে চান তাহলে নৌকা বুক করে চলে আসুন কলস ক্যাম্প কিংবা বনি ক্যাম্পে রাত কাটাতে। এই ২টি ক্যাম্পসাইড হল সুন্দরবনের কোর জায়গা। বনি ক্যাম্পের সম্বন্ধে একটু কথা বলি, এই ক্যাম্পে থাকার জন্য ছোট-ছোট কটেজ আছে, একটি বড় ওয়াচ টাওয়ার আছে যার উপর থেকে উঠে চারপাশে সুন্দরবনকে দেখতে অদ্ভুত সুন্দর লাগে। এই সুন্দরবন অঞ্চল দূর থেকে দেখতে যতটাই সুন্দর কাছ থেকে ততটাই কঠিন। এখানে নৌকা পারাপারের সময় মাঝেমাঝে জলে ঝুপ করে কুমির নেমে যেতে দেখবেন, মাঝিরা এখানকার জলে হাত দিতে বারণ করে, তার কারণ কিছু মাছ আছে যারা জলের মধ্যে থাকা অংশ কেটে নিয়ে চলে যায়। আর এখানে প্রতি বছর বাঘ লোকালয়ে চলে আসে। আর বাকি থেকে যায় সাপের কথা। তা না বলাই ভাল। এই ক্যাম্পে প্রচুর হরিণ এবং শিয়াল দেখতে পাবেন। রাতে গাঢ় কালো অন্ধকারের মাঝে ঝিঁঝি এবং তার সঙ্গে শেয়ালের ডাক আপনার কান বন্ধ করতে বাধ্য করবে।

তারপর সকালে বনি ক্যাম্পে ব্রেকফাস্ট শেষ করে চলে আসুন ঝড়খালি ফেরিঘাটে। ঝড়খালি বাসন্তী ক্যানিং বারুইপুর হয়ে আবার কলকাতা। এর আনুমানিক দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার। এই সার্কিটটা কমপ্লিট করলে সুন্দরবনের একটি বিশাল অংশ আপনি বাইক রাইডের মাধ্যমে দেখতে পারবেন। আর এই অভিজ্ঞতা, প্রকৃতির মাঝে করে আসা অ্যাডভেঞ্চার আপনাকে ভাবিয়ে তুলবে। তবে এই জায়গা বর্ষাকালে না যাওয়াই ভাল। কারণ এখানকার উত্তাল নদী, রাস্তাঘাট আর ভয়ংকর প্রকৃতির মাঝে যখন-তখন বিপদের সম্মুখীন হতে পারেন।

বড়দিনের আগের রাতে গির্জায় প্রার্থনাসভায় যোগ দিলেন মমতা
বড়দিনের আগের রাতে গির্জায় প্রার্থনাসভায় যোগ দিলেন মমতা
এবার বাংলাদেশে তৈরি হবে বিপ্লবী সরকার? ঢাকায় গুঞ্জন
এবার বাংলাদেশে তৈরি হবে বিপ্লবী সরকার? ঢাকায় গুঞ্জন
'ব্রাহ্মণের মেয়েকে' সরিয়ে বালিগঞ্জে নতুন মুখ আনলেন হুমায়ুন
'ব্রাহ্মণের মেয়েকে' সরিয়ে বালিগঞ্জে নতুন মুখ আনলেন হুমায়ুন
শুনানিতে যেতে না পারলে কী হবে? অকূলপাথারে বর্ধমানের মুখোপাধ্যায় পরিবার
শুনানিতে যেতে না পারলে কী হবে? অকূলপাথারে বর্ধমানের মুখোপাধ্যায় পরিবার
'এরা বাংলাকে বাংলাদেশ তৈরি করতে চাইছে...', তৃণমূলকে তোপ মিঠুনের
'এরা বাংলাকে বাংলাদেশ তৈরি করতে চাইছে...', তৃণমূলকে তোপ মিঠুনের
তৃণমূলকে এনেছিলাম, এবার বিজেপিকে আনব: শুভেন্দু
তৃণমূলকে এনেছিলাম, এবার বিজেপিকে আনব: শুভেন্দু
'বাবরি পাহারা দিচ্ছে পুলিশ...', বাংলা নিয়ে তোপ BJP নেতার
'বাবরি পাহারা দিচ্ছে পুলিশ...', বাংলা নিয়ে তোপ BJP নেতার
কারা হচ্ছেন মাইক্রো অবজার্ভার, উদ্দেশ্য কী?
কারা হচ্ছেন মাইক্রো অবজার্ভার, উদ্দেশ্য কী?
মদ্যপান, ছোট পোশাকে নাচ নাকি ব্রাহ্মণের মেয়ে বলে বাদ পড়লেন নিশা?
মদ্যপান, ছোট পোশাকে নাচ নাকি ব্রাহ্মণের মেয়ে বলে বাদ পড়লেন নিশা?
মেয়ে হারিয়েছেন, হাঁসখালিকাণ্ডে সাজা শুনে কী বললেন নির্যাতিতার মা?
মেয়ে হারিয়েছেন, হাঁসখালিকাণ্ডে সাজা শুনে কী বললেন নির্যাতিতার মা?