
বসন্ত মানের প্রেমের মাস। চারিদিকে প্রকৃতিও সেজ ওঠে নতুন রূপে। গাছে গাছে রঙের ছোঁয়া। তবে এই সব স্বাদ শহরে কংক্রিটের মাঝে বসে আর কতটুকই বা পাওয়া যায়? তার চেয়ে বরং এই দোলে তিন দিনের যে ছুটি পেয়েছেন তাতেই হাওয়া বদল করে আসুন। আদিবাসী সংস্কৃতি, নির্মল বাতাস, শান্ত পরিবেশ, সুন্দর ছোট্ট একটা গ্রাম, আর ভীষণ ভাল সেই গ্রামের মানুষজন। যেতে খরচ মাত্র ৩০০টাকা। সঙ্গে উপরি পাওনা শিমুল এবং পলাশের মাঝে প্রেম।
কথা হচ্ছে বাঁকুড়ার শুশুনিয়া পাহাড়ের। পাহাড়ের কোলেই রয়েছে সবুজে ঘেরা বন। এখানকার সব গ্রামের এক একটা নিজস্ব সংস্কৃতি রয়েছে। গ্রামের মাটির বাড়ি, খড়ের চাল, আর দেওয়ালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রাচীন চিত্রকলার নিদর্শন। ফুটে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী নাচ এবং গান পরিবেশনা তথা উৎসবের ছবি। যেন প্রতিটা বাড়ির জানলায় টোকা মারলেই বেরিয়ে আসবেন এক একেক জন তাবড় তাবড় শিল্পী। এতটাই সুচারু এবং পটু তাঁদের হাতের কাজ। তার উপরে লাল পলাশের আবরণ পড়ন্ত বিকেলের সূর্যের কমলা বা গোলাপি আভা মিলে যেন এক রচনা করা এক মায়ার। যে মায়ার জাল কেটে বেড়িয়ে আসা প্রায় অসম্ভব!
আবার ট্রেকিং ভালবাসলেও যেতে পারবেন এই জায়গায়। পাহাড়ি রাস্তা ছোট ছোট নুড়ি পাথর ভর্তি, মাঝে মাঝেই দকেহা দিচ্ছে ছোট বড় নানা ঝর্ণা। সঙ্গে প্রকৃতির গায়ে বসন্তের চাদর, সব মিলিয়ে ঘুরতে যাওয়ার আনন্দটা দ্বিগুণ হয়ে ওঠে। সাইট সিনের জন্য রয়েছে বেশ কিছু প্রাচীন মন্দির, ঐতিহাসিক এবং আধ্যাত্মিক স্থানও।
শুশুনিয়া পাহাড় সংলগ্ন ট্যুরিস্ট স্পট গুলিতে রয়েছে যুব আবাস সহ একাধিক থাকার জায়গা। নেটে আগেই তার মধ্যে থেকে বেছে নিন যে কোনও একটি। এই সব হোটেলের দৈনিক ভাড়া ৩০০ টাকা থেকেও শুরু হয়। তবে যেহেতু এটা ঘুরতে যাওয়ার মরসুম তায় হোলি, তাই খানিকটা দাম বেশিও থাকতে পারে।
কী ভাবে যাবেন – কলকাতা থেকে যে কোনও ট্রেন ধরে চলে আসুন বাঁকুড়া। সেখান থেকে বাসে করে ছাতনা হয়ে সহজে পৌঁছে যেতে পারবেন শুশুনিয়ায়। চাইলে বাঁকুড়া স্টেশন থেকে প্রাইভেট গাড়িও বুক করে নিতে পারেন।
দু’দিনেই ঘুরে দেখে নিতে পারবেন শুশুনিয়া, শিউলিবোনা, ভরতপুর ও অনান্য দর্শনীয় স্থান। বিশেষ করে শিউলিবোনা যাওয়ার যাত্রাপথের সৌন্দর্য্য অপরূপ বললেও কম বলা হয়। চাইলে আস্তানা গাড়তে এখানেও।