ডারউইনের আর্চ এখন বিবর্তনের স্তম্ভ! নেটমাধ্যমে পোস্ট করা ছবি নিয়ে উত্তাল বিশ্ব
প্রকৃতির আজব খেয়ালে, বায়ুপ্রবাহের কারণে তৈরি হওয়া অপরূপ সেই কাঠামোর টানে প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটকরা বোটে চেপে ভেসে আসেন দ্বীপের কাছাকাছি।
গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে মানুষের আগ্রহের অন্ত নেই। ভিন্ন প্রজাতির দৈত্যাকার কচ্ছপ, সমুদ্রসিংহ, সমুদ্র টিকটিকি, ফ্লেমিংগো, পেঙ্গুইন এবং নানা আকারের জলজ উদ্ভিদের দেখা মেলে এই দ্বীপসমষ্টিতে। দুর্লভ সেই প্রকৃতির রূপ দেখার জন্য প্রতি বছরই হাজার হাজার পর্যটক পাড়ি জমান গালাপাগোসে। সম্প্রতি সেই দ্বীপপুঞ্জেই ঘটে গিয়েছে বিরল এক ঘটনা।
আরও পড়ুন: অজানা বাঁধ-পাহাড়-জঙ্গল-জলপ্রপাতে ঘেরা এক রহস্যময় অচেনা ওড়িশা!
দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের উত্তর-পশ্চিম অংশের একটি দেশ হল ইকুয়েডর। দেশটির মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ৯৬৫ কিমি পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগরেই রয়েছে গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ যা ইকুয়েডরের সীমানাভুক্ত। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে লাভা জমে তৈরি হয়েছে গালাপাগোসের টুকরো টুকরো দ্বীপগুলি। সেখানেই সোমবার একদল দর্শনার্থীদের গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিল একটি ভ্রমণ সংস্থা। পর্যটকরাও বোটে ভেসে, ছবি তুলছিলেন ডারউইন আর্চের। হঠাৎই তাঁদের চোখের সামনে, স্থানীয় সময় বেলা ১১ টা ২০ মিনিটে সেই আর্চের উপরের অংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে মহাসাগরে। দাঁড়িয়ে থাকে শুধু দুটি স্তম্ভ। পর্যটকরা সেই ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গে তা ভাইরাল হয়ে যায়। পরে ইকুয়েডরের পরিবেশ মন্ত্রকের তরফে এই খবরের সত্যতা স্বীকার করে নেওয়া হয়। বহু মানুষ এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন। কারণ বহু ব্যক্তির সুখ-স্মৃতির সঙ্গে জড়িয়ে ছিল তোরণটি। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক কারণেই ভেঙে পড়েছে তোরণের মাথা।
আরও দেখুন: দীর্ঘ ৭০ বছর পর, ইতালির এই হ্রদ থেকে উদ্ধার হল গোটা গ্রামের ধ্বংসাবশেষ! দেখুন সেইসব ছবিগুলি…
Informamos que hoy 17 de mayo, se reportó el colapso del Arco de Darwin, el atractivo puente natural ubicado a menos de un kilómetro de la isla principal Darwin, la más norte del archipiélago de #Galápagos. Este suceso sería consecuencia de la erosión natural.
?Héctor Barrera pic.twitter.com/lBZJWNbgHg
— Ministerio del Ambiente y Agua de Ecuador (@Ambiente_Ec) May 17, 2021
ইতিহাস
কথিত আছে, ১৯ শতকের ইংরেজ জীববিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের জীববৈচিত্র্য দেখে বিবর্তনবাদের ধারণা পান ও পরে সেই পর্যবেক্ষণকে ব্যাখ্যা করেন ‘অরিজিন অব স্পিসিস’ বইয়ে। সেই বিজ্ঞানীর সম্মানার্থে গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে একটি দ্বীপের নাম রাখা হয় ‘ডারউইন আইল্যান্ড’। তবে শুধু জীববৈচিত্র্য বা আন্ডারওয়াটার ডাইভিং নয়, গালাপাগোসের দ্বীপগুলির অন্যতম আকষর্ণ হল সমুদ্রের বুকে ভেসে থাকা পাথুরে কাঠামো! জনমানবশূন্য ডারউইন আইল্যান্ডের অদূরে, সাগরের বুকেও রয়েছে এমন এক অদ্ভুত পাথরের কাঠামো বা ‘প্রস্তর তোরণ’। উত্তাল নীল সমুদ্রের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা সেই তোরণকে তোরণকে সাক্ষী রেখে তোলেন ছবি, সেলফি! এমনকী আদর করে সেই তোরণের নাম দেওয়া হয়— ‘ডারউইন আর্চ’। ইতিমধ্যেই শোক ভুলে অত্যুৎসাহী পর্যটক এবং ভ্রমণ সংস্থাগুলি থামগুলির নামকরণও করে ফেলেছেন। তাঁরা এখন ওই স্তম্ভদুটিকে ডাকছেন ‘দি পিলারস অফ এভোলিউশন’ বা ‘বিবর্তনের স্তম্ভ’ বলে!