
প্রখ্যাত বলি অভিনেতা আয়ুষ্মান খুরানার স্ত্রী তাহিরা কাশ্যপ। নিজেও একজন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখক। তাঁর অদম্য শক্তি এবং নির্ভীক মনোভাবের জন্যও তিনি সমানভাবে পরিচিত। আসলে দীর্ঘ লড়াইয়ের পড়ে ক্যানসার জয় করেছিলেন তিনি। কিন্তু আবারও, তাহিরার জীবনে ফিরে এসেছে এই মারণ রোগ। সম্প্রতি তিনি তাঁর ইনস্টাগ্রামে জানিয়েছেন, সাত বছর পর আবারও তাঁর স্তন ক্যানসার ফিরে এসেছে।

২০১৮ সালে প্রথমবার তাহিরার স্তন ক্যানসার ধরা পড়েছিল। সেই সময় তাঁর লড়াই অকপটে প্রকাশ করেছিলেন তিনি। কেমোথেরাপির সময় মাথা মুড়িয়ে ফেলা, সাক্ষাৎকার দেওয়া এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া থেকে শুরু করে সকলকে নিজের স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিতে আহ্বান জানান। তাঁর দৃঢ় সংকল্প এবং শক্তি অসংখ্য নারীর অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে। বর্তমানে মহিলাদের মধ্যে এই ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতাও সবচেয়ে বেশি। কিন্তু কখন সাবধান হবেন? কী ভাবে বুঝবেন এই রোগ আপনার শরীরে বাসা বাঁধছে কিনা?

বুক খুলে আয়নার সামনে দাঁড়ান। কোনও দৃশ্যমান পরিবর্তন যেমন- ফুলে ওঠা, গর্ত হওয়া, আকারে পরিবর্তনের মতো কিছু হচ্ছে কিনা তা লক্ষ্য করুন। ত্বকের লালচে ভাব, র্যাশ বা টানটান ভাবও খেয়াল করুন। এমন কিছু দেখলে তা কয়েক দিন নজরে রাখুন।

দুই হাত মাথার ওপরে তুলে আবারও দেখুন স্তনের আকারে কোনও পরিবর্তন হয়েছে কিনা বা কোথাও ফোলাভাব আছে কিনা। আপনার আঙ্গুলের ডগা ব্যবহার করে বৃত্তাকার গতিতে স্তনের বাইরের দিক থেকে স্তনের কেন্দ্রীয় দিকে আসুন এবং চাপ দিয়ে দেখুন কোনও লাম্পস অনুভব হচ্ছে কিনা।

শুয়ে থাকা অবস্থায় স্তন টিস্যু সমানভাবে ছড়িয়ে যায়। বিপরীত হাত ব্যবহার করে প্রতিটি স্তন ভালোভাবে পরীক্ষা করুন। হালকাভাবে প্রতিটি স্তনবৃন্ত চাপ দিন এবং দেখুন কোনও তরল বেরোচ্ছে কিনা (যেমন- রক্ত, পুঁজ বা দুধের মতো তরল)।

শক্ত গাঁট বা ঘনত্ব অনুভব করলে, স্তনের কোনও নির্দিষ্ট অংশে ব্যথা হলে, স্তনবৃন্ত থেকে অস্বাভাবিক তরল বের হলে, ত্বকের গঠন বা রঙের পরিবর্তন হলে, স্তনবৃন্ত ভিতরের দিকে ঢুকে গেলে সাবধান হন। এগুলি ফেলে রাখবেন না। অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

ক্যানসার সেরে গেলেও কিন্তু নিশ্চিন্ত হওয়া যায় না সব সময়। গবেষকরা জানাচ্ছেন রোগ সেরে যাওয়ার ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যে সেই একই জায়গায় অথবা ভিন্ন জায়গায় ক্যানসার কোষ আবারও মাথাচাড়া দিতে পারে। অন্তত ২৫ শতাংশ সম্ভাবনা থাকে ক্যানসার ফিরে আসার।

অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, একটি স্তনের ক্যানসার সেরে যাওয়ার অন্তত ৬ বছর পরে অন্য স্তনে ফের ম্যালিগন্যান্ট টিউমার তৈরি হয়েছে। ‘আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি’-র গবেষণা তেমনই বলছে। সে ক্ষেত্রে বারংবার রেডিয়োথেরাপির প্রয়োগে ক্যানসার নির্মূল করার চেষ্টা করেন চিকিৎসকেরা।