
বর্তমানের ব্যস্ত জীবনে আমরা শারীরিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিলেও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকটা ভুলে যাই। অথচ, একজন মানুষের সামগ্রিক সুস্থতা নির্ভর করে তার মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর। মানসিক চাপ, উদ্বেগ, একাকীত্ব, হতাশা বা অবসাদের মতো সমস্যা আমাদের জীবনের স্বাভাবিক ছন্দকে ব্যাহত করতে পারে। তাই সময়মতো মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার উপায় জানা ও তা চর্চা করা অত্যন্ত জরুরি।

মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল ঘুম। পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের মস্তিষ্ককে পুনরায় সংগঠিত হতে এবং প্রতিদিনের চাপ কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন।

আপনি যা খান, তা শুধু শরীর নয়, মনকেও প্রভাবিত করে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল, শাকসবজি, পূর্ণ শস্য ও প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া মানসিক শক্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখে। ক্যাফেইন ও চিনি বেশি খেলে উদ্বেগ বেড়ে যেতে পারে, তাই এসব নিয়ন্ত্রণে রাখা ভালো।

ব্যায়াম শুধু শরীরের জন্য নয়, মনকেও চাঙ্গা করে। হাঁটা, দৌড়, যোগব্যায়াম বা নাচ, যেকোনো ধরণের শারীরিক ক্রিয়াকলাপ এন্ডরফিনের নিঃসরণ ঘটায়, যা আমাদের 'হ্যাপি হরমোন' নামে পরিচিত। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করলে মন উৎফুল্ল থাকে।

নিজের অনুভূতি, চাহিদা ও সীমাবদ্ধতা বোঝা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন কিছু সময় নিজের জন্য রাখুন। বই পড়া, গান শোনা, ধ্যান বা স্রেফ চুপচাপ বসে থাকা। এতে মন পরিষ্কার হয় এবং নিজেকে ভালোভাবে বোঝার সুযোগ তৈরি হয়।

মানসিক চাপ বা বিষন্নতা বাড়ে যখন আমরা নিজেকে একা ভাবি। প্রিয়জন, বন্ধু বা সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলা, সময় কাটানো মানসিক ভারসাম্য রক্ষা করে। প্রয়োজনে কাউন্সিলরের সাহায্য নেওয়া মোটেও দুর্বলতার পরিচয় নয়।

মানসিক শান্তির পথে বড় বাধা হল অপরাধবোধ ও অতীত ভুলে আটকে থাকা। নিজেকে ছোট না করে, শেখা এবং এগিয়ে যাওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন কিছু ইতিবাচক কথা নিজেকে বলুন।

ঘন ঘন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার আত্মতুলনা, অসন্তুষ্টি এবং মানসিক চাপের কারণ হতে পারে। সময় নির্ধারণ করে ব্যবহার করা এবং মাঝে মাঝে ডিজিটাল ডিটক্স নেওয়া মনকে বিশ্রাম দেয়।