শুকনো ফলের মধ্যে বাঙালির মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেজুর। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণাবলী। পায়েস থেকে চাটনি, এই উপাদান যেন সবেতেই বেশ মানানসই।
আবার খেজুরের রয়েছে বহু স্বাস্থ্য উপকারীতাও। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন প্রতিদিন দুটি খেজুর খেলে শরীরে বেশ কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। জানেন, প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুটি করে খেজুর খেলে কী কী হতে পারে আপনার সঙ্গে? কী প্রভাব পড়বে আপনার স্বাস্থ্যের উপরে? জেনে নিন এই প্রতিবেদনে।
খেজুরে প্রচুর ফাইবার থাকে। এক সপ্তাহ টানা দিনে দুটি খেজুর খেলে তা হজমশক্তি উন্নত করতে এবং সঠিকভাবে মলত্যাগে সাহায্য করে। খেজুরের ফাইবার মল নরম করে, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকেও মুক্তি মেলে। শরীর থেকে ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে।
খেজুরে আছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কোষকে ফ্রি র্যাডিক্যালের হাত থেকে বাঁচাতে রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। এই ফ্রি র্যাডিক্যাল, মুক্ত মৌল কোষকে ধ্বংস করে বিভিন্ন রোগ তৈরি করে।
এত আছে ফ্ল্যাভোনয়েড, ক্যারোটিনয়েড ও ফেনোলিক অ্যাসিড। ফ্ল্যাভোনয়েড ডায়াবেটিস, আলঝেইমারস ডিজিজ ও কয়েক ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। এটি শরীরে প্রদাহ রোধে ভূমিকা রাখে। ক্যারোটিনয়েড চোখের অসুখবিসুখ থেকে আপনাকে সুরক্ষা প্রদান করে। ফেনোলিক অ্যাসিড হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
মিষ্টিজাতীয় ও শর্করাসমৃদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও ডায়াবেটিক রোগীদের খেজুর খেতে বাধা নেই। ২০২০ সালে একটি গবেষণা চলাকালীন টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ১০০ রোগীকে বাছাই করা হয়। তাঁদের ১৬ সপ্তাহ টানা দিনে তিনটি করে খেজুর খেতে বলা হয়। পরে দেখা যায়, এসব রোগীর রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের (এলডিএল) পরিমাণ কমেছে। বরং ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বেড়েছে। খেজুর টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে। খেজুরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাও বাড়ায় না।
খেজুরে প্রচুর খনিজ থাকে। এর মধ্যে আছে কপার, ম্যাঙ্গানিজ ও সেলেনিয়াম। এসব পদার্থ হাড়কে শক্তিশালী করে। অস্টিওপরোসিসের মতো কঠিন রোগের হাত থেকে বাঁচাতে যুদ্ধ করে। কপার, ম্যাঙ্গানিজ ও সেলেনিয়াম সুস্থ হাড় গঠনে ভূমিকা রাখে।
খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইটো হরমোন বা উদ্ভিদ হরমোন। এই হরমোন বলিরেখা প্রতিরোধ করে ত্বককে তরতাজা ও তারুণ্যে ভরপুর রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের যত্নে বানানো বিভিন্ন প্রসাধনী তৈরিতে এই হরমোন ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে মধ্যবয়সী মহিলা, যাঁদের ত্বকে অল্প অল্প করে বয়সের ছাপ পড়তে শুরু করেছে তাঁদের জন্য অত্যন্ত উপকারী খেজুর।