উচ্চ রক্তচাপ সরাসরি প্রভাব ফেলে আমাদের ধমনীতে। এর ফলে রক্ত দ্রুতগতিতে ধমনীর মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে চাপ পড়ে হৃৎপিণ্ডে, আর তখন পাম্প করাও অনেক বেশি কঠিন হয়ে যায়। যে কারণে উচ্চ রক্তচাপ থেকে হতে পারে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও।
বিশ্ব হার্ট দিবসে যে কারণে চিকিরসকেরা বারে বারে সচেতন করছেন। আজকাল মানুষের জীবনে অনেক রকম চাপ থাকে। কর্মক্ষেত্রে চাপ, মানসিক চাপ, ঠিকঠাক বিশ্রাম আর ঘুমের সময় থাকে না। দিনের পর দিন এই মারাত্মক চাপ থেকেই উচ্চ রক্তচাপের মত সমস্যা আসে
তীব্র মাথাব্যথা, মাথার ঠিক মধ্যিখানে ব্যথা, বুকে ব্যথা, মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট, উদ্বেগ, বমি বমি ভাব, অন্যান্য অনেক উপসর্গ থাকে। এসব হল প্রাথমিক উপসর্গ। অনেকের ক্ষেত্রে হাইপারটেনশন আসে পারিবারিক সূত্রে। পারিবারিক ইতিহাসে যদি এমন রেকর্ড থাকে তাহলে উচ্চ রক্তচাপের সম্ভাবনা থেকে যায়।
এছাড়াও রোজকার জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাস এবও প্রভাব ফেলে উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে। যারা নিয়মিত ভাবে বাইরের খাবার খান, ফাস্টফুড বেশি খান কিন্তু কোনও রকম শরীরচর্চা করেন না তাঁদের ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। অনেক সময় ওষুধের কারণেও উচ্চরক্তচাপ হতে পারে
এছাড়াও জটিল কোনও অস্ত্রোপচার হলে, ধমনীর মধ্যে দিয়ে রক্ত প্রবাহে বাধা পেলে,হরমোনের ভারসাম্যহীনতা হলে, থাইরয়েড গ্রন্থি ঠিকমতো কাজ না করলে সেখান থেকেও উচ্চরক্তচাপের সম্ভাবনা থেকে যায়। অনেকের ক্ষেত্রে এমন সমস্যা থাকে যে ওষুধ দিয়েও তা নিয়ন্ত্রণে আনা যায় না। আর তাই রোগ শনাক্ত করে রোগীকে প্রথম থেকেই ওষুধ দিতে হবে
সবচেয়ে মারাত্মক অবস্থা হয় যদি ম্যালিগন্যান্ট হাইপারটেনশন থাকে। এর ফলে হঠাৎ করে রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং এখান থেকে একাধিক অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে। বয়স্কদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় সিস্টোলিক হাইপারটেনশন। ধমনী শক্ত হওয়ার কারণে এই সমস্যা হতে পারে
140/90 mm Hg- হল স্বাভাবিক রক্তচাপ। যদি রক্তচাপের রিডিং 130-139 mm Hg বা 80-89 mm Hg হয় তাহলেও কিন্তু রক্তচাপের সম্ভাবনা থেকে যায় এবং ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। তবে এমন সমস্যা হলে নিয়মিত ওষুধ খাওয়া, ব্যায়াম, ডায়েট, কম সোডিয়াম গ্রহণ, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা এসবের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়
উচ্চরক্তচাপে হার্টের উপর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থাকে অনেক বেশি। এর ফলে শরীরের অন্যান্য অঙ্গেও পর্যাপ্ত পরিমাণ রক্ত পৌঁচ্ছয় না। এখান থেকে হার্ট ফেলিওয়ের সম্ভাবনা থেকে যায়। নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম আহার, মানসিক চাপ কমানো, ধূমপান ছেড়ে দেওয়া, অ্য়ালকোহল সম্পূর্ণ বাদ দেওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং রুটিন চেকআপের মধ্যে থাকলে তবেই সুস্থ থাকতে পারবেন