
জোহানেসবার্গ ২০১৩, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১১৯: দীর্ঘ ১৩ মাসের ব্যবধানে টেস্ট খেলতে নেমেছিল ভারত। বিদেশে এরপরও চারটি সিরিজ। তার টোন সেট করে দিয়েছিল বিরাটের ইনিংস। মন্থর শুরুর পর ১১৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। যা দেখে ইংল্যান্ডের তৎকালীন বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড বলেছিলেন, 'আমাকে সচিনের কথা মনে করাল।' পেস বোলিংয়ের পরিস্থিতিতে স্টেইন, মর্কেল, ফিলান্ডারদের সামলে স্পিনারদের আক্রমণ।

ওয়েলিংটন ২০১৪, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১০৫*: ওয়েলিংটনে সেই ম্যাচে দুর্দান্ত জায়গায় ছিল ভারত। কিন্তু এরপরই কলকাতার সেই দ্রাবিড়-লক্ষ্মণের মতো অবিশ্বাস্য় জুটি ম্যাকালাম-ওয়াটলিংয়ের। ভারতকে হার বাঁচানোর মতো পরিস্থিতিতে ফেলে দেয়। সেখানে সময় কাটাতে হত ভারতীয় ব্যাটারদের। কিন্তু বিরাট কোহলির দুর্দান্ত ইনিংসে ড্র করেছিল ভারত।

অ্যাডিলেড ২০১৪, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১৪১: টেস্ট ক্যাপ্টেন হিসেবে প্রথম ম্যাচ। প্রথম ইনিংসেও সেঞ্চুরি করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়া আক্রমণাত্মক মানসিকতা থেকে ভারতকে ৩৬৪ রানের টার্গেট দিয়ে দান ছাড়ে। ড্র নয়, জয়ের জন্য ঝাঁপিয়েছিলেন কোহলি। মিচেল জনসনের ডেলিভারিতে আঘাতও পান। স্লেজিংও সামলাতে হয়। এরপরই বিধ্বংসী ইনিংস। ৮০-র উর স্ট্রাইকরেটে ১৪১ রান। বিরাট যখন আউট হন, ৬০ রান প্রয়োজন ছিল ভারতের।

মেলবোর্ন ২০১৪, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১৬৯: অ্যাডিলেডে দু-ইনিংসেই সেঞ্চুরির পর মেলবোর্ন। বিশ্ব ক্রিকেটের নাট্যমঞ্চে অবিশ্বাস্য একটা ইনিংস বিরাট কোহলি ব্যাটে।

মুম্বই ২০১৪, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২৩৫: নেভিল কার্ডাস সেই কবেই বলে গিয়েছিলেন স্কোরবোর্ড গাধা। বিরাটের এই ইনিংস স্কোরবোর্ডে দেখে তাই মনে হয়েছিল। ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৪০০ করে। পিচে স্পিন। তৃতীয় দিন থেকে আরও বেশি টার্ন। এরকম একটা পরিস্থিতিতে ৫১৫ মিনিট ব্যাটিং! ২৩৫ রানের ক্লাস ইনিংস। শেষ অবধি ভারত ৬৩১ রান তোলে। বিরাটের অন্যতম সেরা ইনিংস।

কলকাতা ২০১৭, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ১০৪*: এরপরই দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থাকায় গ্রিন টপ বানানো হয়েছিল কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে। বৃষ্টির কারণে পরিস্থিতি আরও কঠিন। মারাত্মক সুইং। প্রথম ইনিংসে ১৭২ রানেই অলআউট ভারত। জবাবে শ্রীলঙ্কা করে ২৯৪। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের শুরুটা ভালো হলেও পরপর উইকেট পতন। একদিক আগলে রাখেন বিরাট কোহলি। ১০৪ রানের অপরাজিত ইনিংসে। ৮ উইকেটে ৩৫২ রানে ডিক্লেয়ার করে ভারত। শ্রীলঙ্কার জন্য টার্গেট দাঁড়ায় ২৩১। যদিও বৃষ্টির কারণে ড্র হয় ম্যাচ। সে সময় শ্রীলঙ্কা ৭৫-৭। আর কয়েকটা ওভার পেলে ভারত ম্যাচটা জিততেও পারত।

সেঞ্চুরিয়ন ২০১৮, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১৫৩: টিমের বাকি সদস্যদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বাধিক স্কোর ছিল ৪৬। এখান থেকে যেন কিছুটা আন্দাজ করা যায়, পরিস্থিতি কতটা কঠিন ছিল। আর সেরকম একটা পরিস্থিতিতেই এই ইনিংস খেলেছিলেন কিং কোহলি।

এজবাস্টন ২০১৮, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৪৯: মাস্টারক্লাস ইনিংস। এজবাস্টনের সেই ইনিংসের পরই আইসিসি টেস্ট ক্রমতালিকায় স্মিথকে সরিয়ে শীর্ষে উঠেছিলেন বিরাট কোহলি। সচিনের (২০১১) পর প্রথম ভারতীয় ব্যাটার হিসেবে টেস্টে শীর্ষে।

পারথ ২০১৮, অস্ট্রেলিয়র বিরুদ্ধে ১২৩: বিশ্বের সবচেয়ে গতিময় ইনিংস বলা হয়। এই পিচে ব্যাটারদের 'ক্লাস' নেওয়া হয়। আর সেখানেই অবিশ্বাস্য এই ইনিংস কিং কোহলির।

অ্যাডিলেড ২০২০-২১, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৭৪: পিঙ্ক-বল টেস্ট। ২০২০-২১ অস্ট্রেলিয়া সফরে সেই লজ্জার ৩৬ অলআউট। প্রথম ইনিংসে বিরাট কোহলি দুর্দান্ত ব্যাট করছিলেন। রাহানের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন। এরপরই ভারতের সমস্যা বাড়ে। রাহানেও পরে আক্ষেপ করেছিলেন, সেই রানআউটে তাঁরই ভুল ছিল, কোহলি আউট না হলে ম্যাচটা অন্যরকম হতে পারত। সব ছবি : GETTY IMAGES