Jalpesh Temple: মর্মান্তিক ঘটনার পরও ভিড়ে কমেনি জল্পেশে! শ্রাবণ মাসে এই মন্দিরের এত গুরুত্ব কেন?
Sawan 2022: ইতিহাসের পাতায় জানা যায়, দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে এই মন্দিরের হাতি বিক্রি করা হত। এছাড়া এই মন্দিরকে ঘিরে দেশ-বিদেশের কৌতূহল ছিল চরম।
শ্রাবণ মাসে দক্ষিণবঙ্গের তারকেশ্বর মন্দিরের শিবলিঙ্গের মাথায় জল ঢালার জন্য ভক্তদের আকুতি দেখলে যেমন চক্ষু ছানাবড়া হওয়ার জোগার, তেমনি উত্তরবঙ্গের প্রাচীন জল্পেশ মন্দিরেও শিবভক্তদের মাতামাতি দেখলে অবাক হবেন। শিবরাত্রির দিন এই মন্দিরে শুধু কলকাতা থেকে নয়, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকেও ভক্তরা পুজো দিতে আসেন। অসম, ভুটান, নেপাল থেকেও ময়নাগুড়ি থেকেও মানুষজন আসেন পুজো দিতে। বলতে গেলে শিবপুজোর পাশাপাশি মেলার আকার ধারণ করে। শ্রাবণ মাসেও এই মন্দিরের তাত্পর্য ও গুরুত্ব রয়েছে।
প্রসঙ্গত, এখানে শিবলিঙ্গ হল জল লিঙ্গ। জলপাইগুড়ির এই মন্দিরের শিবলিঙ্গ এখানে গর্তের মধ্যে থাকে। যাকে অনাদিও বলা হয়। ময়নাগুড়ির জরদা নদীর তীরে অবস্থিত এই জল্পেশ মন্দিরটির একটি ইতিহাস রয়েছে। ভ্রামরী শক্তিপীঠের ভৈরব হলেন জল্পেশ। ১৫২৮ সালে জল্পেশ মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা হলেন কোচরাজা বিশ্ব সিংহ। পরবর্তীকালে ১৫৬৩ সাল মন্দিরটি মহারাজা নরনারায়ণ পুনর্নিমাণ করেন। প্রতিষ্ঠানের পরবর্তী সময়ে ১৩৯ বছর পর ১৬৬৩ সালে এই মন্দিরটি ফের পুননির্মাণ করেন রাজ প্রাণনারায়ণ। এই মন্দিরের মহাশিবরাত্রি হল এই মন্দিরের প্রধান উত্সব। এছাড়া শিবের কাছে বিশেষ পুজো করার জন্য শ্রাবণী মেলায় তীর্থযাত্রীরা বাবার মাথায় জল ঢালতে ভিড় করেন। জানা যায়, সপ্তদশ শতকে মন্দির তৈরির পর থেকেই শিবরাত্রিতে বিখ্যাত মেলা শুরু হয়। প্রসঙ্গত উত্তরবঙ্গের প্রাচীন মন্দিরগুলির মধ্যে জল্পেশ মন্দিরের মেলা হল পর্যটক ও স্থানীয়দের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মেলায় যোগ দিতে কয়েক লক্ষ মানুষ ভিড় করেন। ইতিহাসের পাতায় জানা যায়, দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে এই মন্দিরের হাতি বিক্রি করা হত। এছাড়া এই মন্দিরকে ঘিরে দেশ-বিদেশের কৌতূহল ছিল চরম।
অনেকেই বলেন, দিল্লির মুসলিম স্থপতিরা এই মন্দিরটি সংস্কার করেন। পুরাম অনুযায়ী, এই মন্দির নাকি হাজার বছরের প্রাচীন। মন্দিরটি ১২৪ ফুট দীর্ঘ ও ১২০ ফুট প্রসস্থ। মন্দিরের চূড়া এখনও গম্বুজাকৃতি। মন্দিরের শিবলঙ্গটি মাটির তলায় অবস্থিত। শ্রাবণ মাসে লক্ষ লক্ষ শিবভক্ত অনেকেই মানত করে তিস্তা থেকে হেঁটে কাঁধে বাঁক নিয়ে এই প্রাচীন ও পবিত্র মন্দিরে পুজো দিতে যান।