Buddha Amritwani: একজন মানুষ কেন ভালো বা মন্দ হন? বুদ্ধের এই কাহিনিই তার প্রমাণ

Gautam Biddha: মানুষের প্রবণতা যখন খারাপ হয়ে যায় তখন পৃথিবীও মন্দতায় ভরে যায়। গৌতম বুদ্ধের এক কাহিনি থেকে জানা যাবে যে কেন একজন মানুষ খারাপ হয়ে যায় ও খারাপ কাজ করতে শুরু করে।

Buddha Amritwani: একজন মানুষ কেন ভালো বা মন্দ হন? বুদ্ধের এই কাহিনিই তার প্রমাণ
গৌতম বুদ্ধের এক কাহিনি থেকে জানা যাবে যে কেন একজন মানুষ খারাপ হয়ে যায়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 31, 2023 | 1:18 PM

ভালো-মন্দ হচ্ছে ব্যক্তির প্রবণতা, বৈশিষ্ট্য। কিন্তু প্রশ্ন হল একজন মানুষ কেন এবং কীভাবে ভালো বা মন্দ হয়? একই সঙ্গে, আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল কীভাবে একজন ভাল মানুষ হওয়া যায়। আজ পৃথিবীর সর্বত্রই শুধু মন্দ। দাঙ্গা, মারামারি, খুন ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের খবরের কমতি নেই। এর কারণ হল মানুষ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। মানুষের প্রবণতা যখন খারাপ হয়ে যায় তখন পৃথিবীও মন্দতায় ভরে যায়। গৌতম বুদ্ধের এক কাহিনি থেকে জানা যাবে যে কেন একজন মানুষ খারাপ হয়ে যায় ও খারাপ কাজ করতে শুরু করে। এই বিশেষ কাহিনিতে আপনি কীভাবে একজন ভাল মানুষ হয়ে উঠবেন, তাও জানতে পারবেন।

বুদ্ধের অমৃতবাণী

এক গ্রামে এক চতুর চোর ছিল। সেই চোরের কুকীর্তির কথা গোটা গ্রাম জানত। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাকে কেউ ধরতে পারেনি কখনও। সেই দুষ্ট চোর সারাজীবন চুরি করে কাটিয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, আশপাশের গ্রাম ও শহরে তার সমকক্ষ কোনও চোর ছিল না। এমনকি দুষ্ট চোরের ছেলেও চোর পরিণত হয়। ওই চোরের একটা ছেলে ছিল, যাকে সে নিজের মতো দুষ্টু চোর বানাতে চেয়েছিল। তাই তিনি তার ছেলেকে সব সময় বলতেন যে, কোনও সন্ন্যাসীর প্রচারে কখনও কান দেবে না। কেউ কিছু বললে কান বন্ধ করে সেখান থেকে পালাও। ছোটবেলা থেকেই ছেলে বাবার কাছ থেকে এসব কথা শুনে আসছে, যার কারণে এসব কথা তার মনেও গেঁথে যায়। এভাবে বড় হয়ে ছেলেটাও বাবার মতো দুষ্টু চোরে পরিণত হয়।

একদিন সে খুব লোভী হয়ে চুরির উদ্দেশ্যে রাজার প্রাসাদে দিকে রওনা দেয়। তখনই পথে লোকের ভিড় দেখতে পেল। চোর দেখল বহু মানুষ এক সন্ন্যাসীর পায়ে পড়ে আশীর্বাদ নিচ্ছেন। সেই সন্ন্যাসী আর কেউ নন, তিনি স্বয়ং গৌতম বুদ্ধ। চোর তার বাবার কাছ থেকে শিখেছিল বলে সন্ন্যাসীদের থেকে দূরে থাকত। কিন্তু ভগবান বুদ্ধকে দেখে তিনি তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হয়। এর কারণ এই যে, তিনি প্রথমবারের মতো একজন উজ্জ্বল ব্যক্তির দর্শন পেয়েছিলেন। হঠাৎ তার বাবার কথা মনে পড়ে যে ঋষিদের তপস্বী থেকে দূরে থাকতে হবে।

চোর সন্ন্যাসীর কাছে যাবে নাকি চুরি করতে যাবে তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যায়। হঠাৎ তার মনে প্রশ্ন আসে, বাবা কেন ঋষি-সাধুদের থেকে দূরে থাকতে বলেছেন? উত্তর জানতে একজন চোরও মানুষের মাঝে বসে ভগবান বুদ্ধের বাণী ও কথা শুনতে শুরু করে।

বুদ্ধ মানুষকে মিথ্যা বলা ও বিশ্বাসঘাতকতা সম্পর্কে বেশ কিছুক্ষণ ধরে কথা বনে। জীবনের দিশা ও বাণী শোনা শেষ হলে সবাই যার যার ঘরে ফিরে যায়, ও চোরও চুরি করতে রাজপ্রাসাদে চলে যায়। কিন্তু সারাটা পথ সে ভাবতে থাকে যে, সেই সন্ন্যাসীর ধর্মোপদেশে বলা কথাগুলো কেন একবারের জন্য বিবেচনা করা যায় না।

এভাবে চুরি করতে রাজপ্রাসাদের দেওয়ালে ঝাঁপ না দিয়ে সে প্রাসাদের গেট দিয়ে প্রবেশ করে। তাকে দেখে প্রাসাদের দারোয়ানরা তাকে থামিয়ে ভেতরে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করে। চোর বলে, আমি চোর, আমি রাজপ্রাসাদে চুরি করতে যাচ্ছি। তার কথা শুনে দারোয়ানরা হাসতে থাকে ও বলে সে নিশ্চয়ই রাজপ্রাসাদের চাকর বা সেবক, তাই তাদের সঙ্গে মজা করছেন। এই ভেবে তারা তাকে প্রাসাদের ভিতরে প্রবেশ করার অনুমতি দেয়।

যার লবণ খাওয়া হয়েছে তার সঙ্গে কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করা উচিত নয়

রাজপ্রাসাদে যাওয়ার পর চোর ধনসম্পদ সম্বলিত খিলানের কাছে পৌঁছে ভল্ট ভেঙ্গে টাকা-পয়সা ও গহনা বান্ডিলে ভরে পালাতে শুরু করে, তখনই তার চোখ পড়ে রাজপ্রাসাদের রান্নাঘরের দিকে। রাতের কারণে রাজপ্রসাদের সকলেই ঘুমানোর ফলে রান্নাঘরে কেউ থাকে না। এদিকে চোর ছিল খুব ক্ষুধার্ত, তাই রান্নাঘরে গিয়ে অনেক খাবার খেয়েও নিল সে। এর পর খাওয়া দাওয়া করে সেখান থেকে চোর চলে যায়। এই কারণেই বুদ্ধের উপদেশে শোনা দ্বিতীয় কথাটি তার মনে পড়ে যে ‘যার লবণ খাওয়া হয়েছে তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা উচিত নয়’।

চোর মনে মনে ভাবে যে, আমি এই রাজবাড়ির নুন খেয়েছি, তাই তার টাকা চুরি করে তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করব! বলেই চোর চুরির টাকা রান্নাঘরে রেখে যেতে শুরু করে। রাজপ্রাসাদে এক ব্যক্তি চোরকে দেখে হঠাত করে শোরগোল শুরু করে। পরবর্তীকালে সেই চোরকে পাকড়াও করে রাজার কাছে নিয়ে যায়। রাজা চোরকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি যখন চুরি করেছিলে তাহলে সেই জিনিসপত্র আবার রেখে দিলে কেন? চোর তখন সেই সন্ন্যাসীর বাণীর কথা বলেন।

রাজা চোরের কথায় মুগ্ধ হয়ে যান। রাজা চোরকে বলেন, ছোটবেলা থেকে এমন শিক্ষা শুনলে কখনও চোর হতে পারতেন না। একথা বলে রাজা তাকে শাস্তি না দিয়ে চলে গেলেন। কিন্তু রাজা তাকে একটা কথা মনে রাখতে বললেন, ‘সঠিক সঙ্গ এবং সঠিক প্রচারের মাধ্যমেই একজন মানুষ ভালো মানুষ হয়। ছোটবেলা থেকেই ভুল সঙ্গ ও ভুল শিক্ষা পেয়ে সে খারাপ মানুষ হয়ে যায়। পরিবার এবং প্রচার একজন ব্যক্তির জীবন পরিবর্তন করে।

(Disclaimer: এখানে উপলব্ধ তথ্য শুধুমাত্র বিশ্বাস এবং তথ্যের উপর ভিত্তি করে। এখানে উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে টিভিনাইন বাংলা কোনও বিশ্বাস বা তথ্য নিশ্চিত করে না। কোনও তথ্য বা বিশ্বাস অনুশীলন করার আগে একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন।)