জন্মমাসে বিবাহ করলে বিবাহিত ব্যক্তির ধনপুত্র নাশ হয়। সেই ব্যক্তি মহাদুঃখে দিনপাত করে থাকে। অবশ্য বশিষ্টমুনি বলেন, পুরো জন্মমাস নয়। কেবল জন্ম তিথিতেই বিবাহ হলে ঐসব বাধাবিঘ্ন উপস্থিত হয়ে থাকে। সে জন্যে জন্মতিথিতে বিয়ে না করারও বিধান দিয়েছেন প্রাচীন যুগের মানুষরা। তবে এর পিছনে কোনও বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনা নেই।
সবটাই লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ে একটা বিশ্বাস তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। আর সেই বিশ্বাস থেকে মানুষ জন্মমাসে বিবাহ করে না। শুধু জন্মমাসে বিবাহই নয়, অনেক কিছুই করেন না অনেক মানুষই। যেমন চুল কাঁটা, কোনও শুভ কাজ।
প্রাচীনকালের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী নিজের জন্মমাসে বিয়ে করাও সামাজিক রীতি ছিল না। জন্মমাসে বিবাহ করলে পাত্র-পাত্রী মহাদুঃখে পতিত হতে পারেন, এই রীতিকে মান্যতা দিয়ে। আবার বঙ্গদেশে বৈশাখ থেকে আষাঢ় মাস পর্যন্ত চলে প্রবল ঝড়-বাদল, প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সুতরাং, বিবাহের জন্য উপযুক্ত ঋতু অবশিষ্ট থাকল অগ্রহায়ণ, মাঘ ও ফাল্গুন। নভেম্বর থেকে জানুয়ারি, বাংলায় বললে অগ্রহায়ণ থেকে মাঘ মাসকে ‘বিয়ের ঋতু’ হিসেবে চিন্তা করা হয়। অর্থাৎ, বিয়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে নিজেদের অজান্তেই। আবার, পৌষমাসে বিয়ে হলে নাকি কন্যা আচার ভ্রষ্টা এবং স্বামী বিয়োগিনী হতে পারে, এমন কুসংস্কারও প্রচলিত রয়েছে। শরৎকালে বিয়ে করতে গেলেও পড়তে হয় কুসংস্কারের খপ্পরে। গ্রাম বাংলায় প্রচলিত রয়েছে- ভাদ্র মাসে বিয়ে করতে নেই, এ মাস অপয়া-অশুভ!
অতীতের রীতিনীতি অনুযায়ী সেই বিয়েকে তিনভাগে ভাগ করা যায়। এক- চলন্ত বিয়ে, দুই- নামন্ত বিয়ে এবং তিন- ঘরজামাই বিয়ে। বর যদি কনের বাড়ি গিয়ে বিয়ে করেন, তাহলে সেটা চলন্ত। বর যদি কনেকে নিজের বাড়িতে নিয়ে এসে বিয়ে করেন, সেটা নামন্ত। আর বর বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে থেকে গেলে সেটিকে ঘরজামাই বিয়ে বলা হয়।
আরও পড়ুন: Shaadi Shubh Muhurat January 2022: জানুয়ারিতে বিয়ের জন্য দারুণ শুভদিন কোন কোন দিন, জানুন এখানে