থাইপুসাম (Thaipusam), মালয়ালম ভাষায় থাই পুসাম (Poosam) নামেও পরিচিত। তামিলনাড়ুএবং কেরালায় পালিত একটি জনপ্রিয় হিন্দু উৎসব (Hindu festival) । পূর্ণিমার দিনে এই উত্সব পালন করা হয়। সাধারণত পুষ্য নক্ষত্রের (Pushya star) সঙ্গে মিলে যায়,তাই পুষম নামেও পরিচিত। এই বছর, ১৮ জানুয়ারি,কেরালায়, তামিলনাড়ুতে বেশ ধুমধাম করে পালিত হচ্ছে। থাইপুসাম শব্দটি হল মাসের নামের সংমিশ্রণ, থাই এবং একটি তারার নাম, পুসাম। এই উত্সবের সময়, এই তারাটি তার সর্বোচ্চ স্থানে থাকে। দেবী পার্বতী ভগবান কার্তিকেয়কে ( Lord Kartikeya), দক্ষিণ ভারতে মুরুগান (Lord Murugan) নামেও পরিচিত, একটি ভেল (অস্ত্র) প্রদান করেন। দুষ্ট রাক্ষস সূরপদম ( Soorapadam ) এবং তার ভাইদের হত্যা করার জন্য দেবী মুরুগানের হাতে অস্ত্র তুলে দেন। এছাড়াও, একটি বিশ্বাস আছে যে, থাইপুসাম ভগবান মুরুগানের জন্মবার্ষিকীকে (birth anniversary of Lord Murugan) চিহ্নিত করে। এই বিশ্বাসের সঙ্গে কোনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই। থাইপুসাম শুধু ভারতেই নয়, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, মরিশাস এবং সিঙ্গাপুরের মতো তামিল ভাষার জনগোষ্ঠীর দেশগুলিতেও পালিত হয়।
তারিখ এবং শুভ মুহুর্ত
তারিখ: ১৮ জানুয়ারি, মঙ্গলবার
পুষম নক্ষত্রাম শুরু হয় – ১৮ জানুয়ারি ভোর ৪টে ৩৭ মিনিট থেকে শুরু
পুষম নক্ষত্রাম শেষ হবে – ১৯ জানুয়ারি সকাল ৬টা ৪২ মিনিটে
তাৎপর্য
স্কন্দ পুরাণ অনুসারে, ভগবান মুরুগান এবং থিরুপুগালের কিংবদন্তি, যা মুরুগানের ঐশ্বরিক আত্মা, শৈব নীতিগুলি মেনে চলে। ভগবান মুরুগান হলেন শিবের আলো এবং জ্ঞানের মূর্ত প্রতীক। জীবনের নানান বাধা অতিক্রম করার জন্য ভক্তরা তাঁকে পূজা করেন।, কারণ তিনি মন্দের ঐশ্বরিক বিজয়ী। তাই যারা এই দিনে ভগবান মুরুগানের উপাসনা করেন তারা তাঁর আশীর্বাদ প্রাপ্ত হন। খারাপ দিকগুলি থেকে মুক্তি পান। এছাড়াও, শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ করে তুলতে এবং কর্মের ঋণ শোধ করতে এই দেবতার পুজো করে থাকেন।
উদযাপন
পবিত্র দিনটিকে মাথায় রেখে এই দিনে ভক্তরা কাভাদি আত্তম (কাভাদি মানে নৃত্য) ও ভক্তিমূলক বলিদানের একটি আনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন। কাভাদি আট্টম হল একটি অর্ধবৃত্তাকার, সজ্জিত ছাউনি যা একটি কাঠের রড দ্বারা গঠিত। সেগুলি নিয়ে কাঁধে মন্দিরে নিয়ে যায়। কাভাদি-ধারকদের এই দিনে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করতে হয় এবং তাঁদের শরীর ও মন পরিষ্কার রাখার নিয়ম রয়েছে। কাভাডি ধারকদের ব্রহ্মচর্য মেনে বিভিন্ন ভক্তিমূলক কর্মে নিযুক্ত থাকার নিয়ম রয়েছে। দিনে একবার শুধুমাত্র সাত্ত্বিক খাদ্য গ্রহণ করতে পারেন তাঁরা। এছাড়াও, কেউ কেউ একটি ছোট বর্শা দিয়ে তাদের জিহ্বা বা গালে বিদ্ধ করে। এই অনুষ্ঠান দক্ষিণ ভারতে বেশ জনপ্রিয়।