যে কোনও পুজো করার আগে সবার প্রথমে গনেশ পুজো দিয়ে সূচনা করা হয়। হিন্দু পুরাণে যে সকল দেব দেবীর উল্লেখ করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে ভগবান গণেশ হল সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও গনেশ মূর্তি দেখতে পাওয়া যায় ও গনেশ চতুর্থী উপলক্ষ্যে দেশ ও বিদেশে অত্যন্ত ধুমধামের সঙ্গে পালন করা হয়। হিন্দুদের মতে, গনেশ ভগবান গণেশ অন্যতম শ্রদ্ধেয় দেবতা। হিন্দুরা পূজা করার আগে বা নতুন সূচনা করার আগে তাঁকে শ্রদ্ধা জানায়। তাই তাকে প্রথম পূজানিয়া বলা হয় (যার অর্থ প্রথম পূজা করা হয়)। ভগবান গণেশ, যিনি বিনায়ক, গণপতি, বিঘনেশ্বর এবং আরও বেশ কয়েকটি নামে পরিচিত, তিনি হলে মহাদিদেব শিব এবং দেবী পার্বতীর কনিষ্ঠ পুত্র। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ভাদ্রমাসে শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে গনেশের জন্মদিন উপলক্ষ্যেই গনেশ চতুর্থী হিসেবে পালন করা হয়।
সাধারণত, অগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসেই এই শুভতিথিটি পালন করা হয়। তবে তারিখটি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। এবছর গনেশ চতুর্থী পালিত হবে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর মাসে। চতুর্থীর শুভতিথির সূচনা হবে সকাল ১২.১৮ মিনিটে এবং শেষ হবে রাত ৯.৫৭ মিনিটে। অন্যদিকে ওই দিন পুজোর শুভ মুহূর্ত সূচনা হবে সকাল ১১.০৩ মিনিটে ও শেষ হবে ১.৩৩ মিনিটে। অনেকেই হয়তো জানেন না গনশ চতুর্থীর দিন চাঁদ দেখা এড়িয়ে যেতে হয়। সেই শুভক্ষণের সূচনা হবে সকাল ৯.১২ মিনিট থেকে। শেষ হবে বিকেল ৫.৪৩ মিনিট নাগাদ। গনেশ চতুর্থীর দিন চাঁদ দেখা বারণ, কারণ ওইদিন চাঁদকে অশুভ বলে মনে করা হয়। হিন্দুদের বিশ্বাস, ঈশ্বরের অভিশাপের কারণে চাঁদের মিথ্যা দোষের জন্য মানুষ আকৃষ্ট হতে পারে। অন্যদিকে ভাদ্রমাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে গণেশ প্রথম জন্মলাভ করেছিলেন, আর তাই ভক্তদের কাছে এই দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রসঙ্গত, ভগবান গণেশকে বিঘ্নহার্তা (যিনি বাধা দূর করেন) হিসাবে সমাদৃত করা হয়। অতএব, বিয়ে, সন্তানের নামকরণ অনুষ্ঠান বা গৃহপ্রবেশের মতো একটি নতুন উদ্যোগ, কাজ বা শুভ সূচনা করার আগে তাঁকে প্রথমে পূজা করা হয়।