সকালে ঘুম থেকে উঠে পাখির কিচিরমিচির শুনতে সকলেরই ভালো লাগে। পাখির ডাক মনকে পবিত্র করে দেয়। এছাড়া সকালে পাখিকে দানাপানি খাওয়াতেও আমরা অনেকেই পছন্দ করি। এই কারণে অনেকেই সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর পাখিকে গমের দানা এবং পাত্রে রেখে জল খাওয়ান। কিছু কিছু বাড়িতে এই কারণে সকাল থেকেই পাখিদের আনাগোনা শুরু হয়। প্রায় সব পাখির ক্ষেত্রেই আমাদের এহেন স্নেহ চাগাড় দিয়ে ওঠে। ব্যতিক্রম শুধু ঘুঘু (Pigeon Nest)। এই পাখি দেখলেই অনেকের মনে বিতৃষ্ণার এসে ভিড় করে। এমনকী বাড়িতে বা বাড়ির কাছাকাছি ঘুঘু পাখি (Pigeon) বাসা বাঁধলেও কিছু লোক অস্বস্তিতে ভুগতে থাকেন। ঘুঘুর তৈরি করা বাসা (Pigeon Nest in House) ভেঙে দেন তারা। বাসা ভেঙে দেওয়ার পিছনে কারণ হিসেবে অনেকেই বলেন, বাড়িঘর বড্ড নোংরা করে ঘুঘু পাখি। তবে এই যুক্তিই যে শেষ কথা তা নয়। অনেকেই বিশ্বাস করেন, ঘুঘুপাখি নেতিবাচক শক্তির (Negetive Power) প্রতীক। বাড়িতে ঘুঘু পাখি বাসা বাঁধলে তা অশুভ। প্রশ্ন সত্যিই কি তাই? এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন জ্যোতিষী ও বাস্তুশাস্ত্র ( Vastu Shastra) বিশারদ।
শুভ না অশুভ সংকেত?
বাস্তু শাস্ত্র অনুসারে, যে কোনও গৃহে পাখি বাসা বাঁধলে তা অত্যন্ত শুভ ও সৌভাগ্যের প্রতীক বলেই মনে করা হয়। সুতরাং বাড়িতে কোনও পাখি বাস বাঁধলে কখনওই তা ভেঙে দেওয়া উচিত নয়। কারণ গৃহে তাদের আগমন থেকেই সৌভাগ্যের সূচনা হয়। গৃহস্বামীর জীবনে শুরু হয় উন্নতি। ভবিষ্যৎ হয়ে ওঠে উজ্জ্বল। এখানেই শেষ নয়, মনে করা হয় বাড়িতে চড়ুই পাখি বাসা বাঁধলে তা ১০ টি নির্দিষ্ট ধরনের বাস্তুর সমস্যা নিরাময় করে। এছাড়া খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন হিন্দু সনাতন ধর্মে সিংহভাগ দেবতারই বাহন হল পাখি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কার্তিকের বাহন ময়ূর, দেবী সবস্বতীর বাহন রাজহাঁস, বিষ্ণুর বাহন গড়ুর, শনিদেবের বাহন কাক, লক্ষ্মী মায়ের বাহন প্যাঁচা ইত্যাদি। এই কারণে, দেবী ও দেবতার পূজার সময় তাদের বাহনেরও পূজা করা হয়।
সাধারণভাবে দেখা যায় চড়ুই এবং ঘুঘু সাধারণত মানুষের বাসস্থান বা তার বাড়িঘরের নিকটেই বাসা বাঁধে। জানলে অবাক হবেন, প্রচলিত ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে ঘুঘু পাখি দেবী লক্ষ্মীর ভক্ত। সুতরাং বাড়িতে ঘুঘু আসার অর্থ হল আপনার দুর্ভাগ্য এবার সৌভাগ্যে বদলে যেতে চলেছে। যে গৃহে তারা থাকে, সেই গৃহ সর্বদা আনন্দ ও সমৃদ্ধিতে পূর্ণ থাকে। সুতরাং, কোনওদিন যদি দেখেন ঘুঘু পাখি বাড়িতে বাসা বাঁধার চেষ্টা করছে তাহলে তাকে তাড়িয়ে দেবেন না। বাসাও ধ্বংস করবেন না। বাসা তৈরি হয়ে গেলে বড়জোর তার স্থান বদলে দিতে পারেন। এমনকী ঘুঘুকে রোজ খাবার জন্য শস্যদানা ও পানের জন্য জল দিন। কারণ ঘুঘুর আসার অর্থ হল আপনার বাড়িতে কোনও অভাব আর থাকবে না।