শ্রী কৃষ্ণের (Sri Krishna) সহধর্মিণী রাধা (Radha) বরসানায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলে হিন্দু ধর্মে জানা যায়। বর্তমানে আধুনিক উত্তর প্রদেশের একটি অংশ। রাধাকে উৎসর্গ করা মন্দিরটি শ্রী রাধারানী মন্দির (Sri Radharani Temple) নামে পরিচিত। শুধু শ্রী রাধারানী মন্দির হিসেবেই নয়, শ্রীজি মন্দির ও শ্রী লাদলি লাল মন্দির নামেও পরিচিত। ২৫০ মিটার উচ্চতার ভানুগড় পাহাড়ের উপরে অবস্থিত এই মন্দিরটি সারা বিশ্ব থেকে প্রচুর ভক্তদের আগমন হয়। বিশেষ করে রাধাষ্টমী (Radhasatami), শ্রী কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী (Janmashtami) এবং লাঠমার হোলিতে (Holi) এই মন্দিরে ভক্তদের ভিড় চোখে পড়ার মত।
শ্রীকৃষ্ণের পৌত্র বজ্রনাভ প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে এই জায়গায় আদি মন্দির তৈরি করেছিলেন। বর্তমান স্মৃতিস্তম্ভটি মুঘল আমলের এবং রাজা টোডরমল ও নারায়ণ ভট্ট (চৈতন্য মহাপ্রভুর একজন শিষ্য) দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। মন্দিরটি রাধা ও কৃষ্ণের জন্মবার্ষিকীতে এবং হোলির দিনে ভক্তদের একটি বিশাল সমাগম হয়। নন্দগাঁও থেকে পুরুষরা এই অঞ্চলের মহিলাদের সঙ্গে হোলি খেলতে বারসানায় যান৷ আর এর মাধ্যমে তারা ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। আরও চমত্কার হল, এই মন্দিরে কৃষ্ণ একজন মহিলার পোশাক পরেন। এর কারণ হল , হিন্দু পুরাণ মতে, কৃষ্ণকে রাধার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি, তাই তিনি তার প্রিয়তমাকে দেখতে একজন মহিলার মতো সেজেছিলেন। লোককাহিনী অনুসারে, মথুরা ত্যাগের পর শ্রীকৃষ্ণ কখনো বাঁশি বাজাননি। পরিবর্তে, তিনি বাদ্যযন্ত্রটি রাধার হাতে তুলে দিয়েছিলেন, যিনি তাঁর অনুপস্থিতিতে এটি বাজাতেন।
তবে শ্রী কৃষ্ণ মথুরা ছেড়ে যাওয়ার পর রাধার কী হয়েছিল সে সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায়নি। কেউ কেউ বলেন, রাধা কৃষ্ণের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল এবং তাদের পিতারা একটি ঘনিষ্ঠ বন্ধন ভাগ করেছিলেন। রাধার সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য কিংবদন্তি থেকে জানা যায় যে তিনি কৃষ্ণের চেয়ে বড় ছিলেন। তাই শ্রী কৃষ্ণ কখনোই রাধাকে আলাদা সত্তা হিসাবে বিবেচনা করেননি এবং নিজেকে তার স্ত্রী হিসাবে পরিচিত করতে চেয়েছিলেন। তাই নাম রাধা-কৃষ্ণ।