Vaishno Devi: শ্রীরামের সঙ্গে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন দেবী বৈষ্ণো! ভক্তদের কাছে দেবীর জনপ্রিয়তা এত তুঙ্গে কেন?

মহাকালী, মহাসরস্বতী এবং মহালক্ষ্মী, এই তিন দেবীর শক্তি এক হয়ে অসুর শক্তিগুলিকে নির্মূল করেছিল। এই মহাশক্তিই পরবর্তীকালে মহাবিশ্বে একটি আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। তাই অসুরদের অত্যাচারের অবসান ঘটাতে বৈষ্ণোদেবী রূপ ধারণ করেন।

Vaishno Devi: শ্রীরামের সঙ্গে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন দেবী বৈষ্ণো! ভক্তদের কাছে দেবীর জনপ্রিয়তা এত তুঙ্গে কেন?
ভক্তদের কাছে দেবীর জনপ্রিয়তা এত তুঙ্গে কেন?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 21, 2022 | 3:36 PM

নতুন বছরের শুরুই করেছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিখ্যাত বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে পুজো দিয়। মন্দিরের ঐতিহ্যবাহী লাল রঙের স্কার্ফ যা লাল চুনরি নামে পরিচিত, সেই চুনরি গায়ে দিয়ে দোলনায় দুলেছেন সুন্দরী অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া। দেবীর দর্শন পেয়ে তিনি যে সত্যিই ভাগ্যবান, তা সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন বাহুবলীর নায়িকা। তবে আশ্চর্যের হল, এই মন্দিরে দেবী তিনটি পাথরের আকারে একে অপরের পাশে আবির্ভূত। বৈষ্ণোদেবী নিয়ে আরও অজানা তথ্য রয়েছে, যা অনেকেই জানেন না। সেগুলি কী কী , এখানে দেখে নিন একনজরে…

কাটরার মহিমান্বিত ত্রিকুটা পাহাড়ে অবস্থিত, বৈষ্ণো দেবী মন্দির হল দেবী দূর্গাকে উৎসর্গ করা অন্যতম বিখ্যাত হিন্দু মন্দির। বেস ক্যাম্প থেকে ৫২০০ ফুট উচ্চতায় এবং ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। প্রচণ্ড মহাকালী, সবচেয়ে জ্ঞানী মহা সরস্বতী এবং সবচেয়ে উদার মহা লক্ষ্মীর মহামিলনের এক রূপ বলে মনে করা হয়।

একটি জনপ্রিয় কিংবদন্তি অনুসারে, মহাকালী, মহাসরস্বতী এবং মহালক্ষ্মী, এই তিন দেবীর শক্তি এক হয়ে অসুর শক্তিগুলিকে নির্মূল করেছিল। এই মহাশক্তিই পরবর্তীকালে মহাবিশ্বে একটি আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। তাই অসুরদের অত্যাচারের অবসান ঘটাতে বৈষ্ণোদেবী রূপ ধারণ করেন। বৈষ্ণোদেবী ধার্মিকতা বজায় রাখার জন্য জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

পৃথিবীতে তার আগমন রত্নাকরের কন্যা হিসেবে। তার নাম ছিল বৈষ্ণবী এবং তিনি ছিলেন ভগবান বিষ্ণুর প্রবল ভক্ত। এই ঘটনাটি ঘটেছিল রামায়ণের সময়, যখন লঙ্কার রাক্ষস রাজা রাবণ রামের পত্নী সীতাকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিলেন। সীতার খোঁজে আত্মহারা রাম।

বৈষ্ণবী আধ্যাত্মিকপ্রবণ ছিলেন এবং কঠোর তপস্যা করে বছর কাটিয়েছিলেন। একটি কিংবদন্তি অনুসারে, বৈষ্ণবী শ্রী রামকে বিয়ে করতে আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু যেহেতু তিনি ইতিমধ্যেই সীতার সঙ্গে বিবাহিত ছিলেন, তাই শ্রী রাম বিনয়ের সঙ্গে তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। অবশেষে, তিনি বলেছিলেন যে তিনি তার কাছে ফিরে আসবেন, এবং যদি তিনি তাকে চিনতে পারেন তবে তিনি তার ইচ্ছা পূরণ করবেন।

পরে রাম বৈষ্ণবীকে তার কথার সম্মান জানাতে একজন বয়স্ক মানুষের বেশে দেখতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। অন্য আরেকটি গল্পে, বৈষ্ণবী তার সৃষ্টিকর্তা শ্রী রাম (বিষ্ণু) এর সঙ্গে মিলিত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। সঠিক সময় এটা নয়, তাই ভগবান রাম তাকে কলিযুগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছিলেন।

কিন্তু বৈষ্ণবী তার তপস্যা চালিয়ে যান। সাধবী হিসাবে জীবনযাপন করতে পছন্দ করেন। বহু বছর পরে, গোরক্ষনাথ, একজন মহাযোগী, যিনি জানতেন যে বৈষ্ণবী এবং শ্রী রামের মধ্যে কী ঘটেছিল, তিনি তাঁর শিষ্য ভৈরন নাথকে তপস্বী দেখার জন্য পাঠিয়েছিলেন।তাকে দেখে ভৈরননাথ তার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তাকে বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ভৈপননাথের উন্মত্ততা দেখে তিনি মহাকালীর রূপ ধারণ করে তাঁর মাথা ছিন্ন করেছিলেন। পাপের জন্য শাস্তি পাওয়ার পর, ভৈরননাথ সমস্ত সীমা অতিক্রম করার জন্য অনুতপ্ত হয়ে তার কাছে প্রচুর ক্ষমা চান। শেষ পর্যন্ত, যখন তিনি বৈষ্ণবী রূপে ফিরে আসেন, তিনি তাকে ক্ষমা করেন এবং তাকে তার মন্দির রক্ষা করতে বলেন। তাই বিশ্বাস করা হয় যে, ভৈরননাথের মন্দির দর্শন ছাড়া বৈষ্ণো দেবীর যাত্রা অসম্পূর্ণ। অবশেষে, দেবী তিনটি ছোট শিলা (পিণ্ড) আকারে ত্রিকুটা পাহাড়ের একটি গুহায় অবস্থান করতে থাকেন।

মানুষের ইচ্ছাপূরণের জন্য তিনি সবসময় সমাদৃতা। তাই, ভক্তরা তাকে ‘মুহ মাঙ্গি মুরাদিনে গরিব করেনে ওয়ালি মাতা’ বলেও সম্বোধন করে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে শুধুমাত্র যারা মাতার ডাক পান, তারাই তার মাজারে যাওয়ার সুযোগ পান। তাই, স্থানীয়রা প্রায়শই “মা আপ বুলান্দি” বলেন, যার অর্থ মা ডাকে।

আরও পড়ুন: Vastu For Pooja Room: গৃহে লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পেতে পুজোর ঘর সাজান বাস্তুমতে! রইল কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য