Durga Puja 2023: বোধন দিয়েই শুরু বাঙালির প্রাণের পুজো! জানুন ষষ্ঠীর নির্ঘণ্ট ও তাত্পর্য
Goddess Durga: অকালে দেবতাদের বন্দনা করার জন্য তাঁদের জাগ্রত করতে হয়। আর এই জাগ্রত করার কৌশল ও রীতিকে বোধন বলা হয়। বিভিন্ন শাস্ত্র ও পুরাণে উল্লেখ রয়েছে, রাবণ বধের আগে মহামায়ার আশীর্বাদ ও সাহায্য পেতে অকালেই বোধন করে দেবীপুজো করেছিলেন।

হিন্দুশাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে, শিব-পত্নী সর্বজায়াঅ হলেন আদ্যাশক্তি। মহামায়া। যখনই দুষ্ট ও অশুভ শক্তির বিনাস করার সময় এসেছে, তখনই বিভিন্ন রূপ নিয়ে গোটা বিশ্বসংসারকে রক্ষা করে আগলে রেখেছেন। ভক্তের মনোবাসনা পূর্ণ করার জন্য প্রতিবছর আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের নবমী তিথিতে আদিশক্তির আবির্ভূতা হন। আর মহাশক্তির মহাপুজো শুরু হয় বোধনের মধ্য দিয়ে। পঞ্জিকা অনুসারে, কাল মহাষষ্ঠী। দেবীপক্ষের ষষ্ঠীর শুভলগ্নে আদ্যাশক্তির প্রাণ প্রতিষ্ঠা করার রীতি রয়েছে। মহাসপ্তমীর আগেই দেবীর বোধনের মাধ্যমে মহাশক্তিকে মর্ত্যে আহ্বান জানানো হয়। হিন্দু বিশ্বাস, শরত্কাল মানেই দক্ষিণায়ন। তাই দেবীপক্ষে আদিশক্তির পুজো করতে হলে আগে দেবতাদের জাগাতে হয়। কালিকাপুরাণ মতে, রাবণবধের আগে ও বধ করতে শ্রীরামকে সাহায্য করা জন্য রাত্রে দেবীর বোধন করেছিলেন ব্রহ্মা। তারপর থেকেই এই রীতি মেনে চলে আসছে হিন্দুরা।
উত্তরায়ন ও দক্ষিণায়ন, এই হল পুরাণ মতে দুটি সময়কাল। ছয় মাস করে প্রতিটি কাল পালিত হয়। উত্তরায়নের অর্থ হল বিষুবরেখা থেকে সূর্য ক্রমশ উত্তরে গমন করে। সূর্যের এই গমন করতে সময় লাগে মোট ছয় মাস। এই ছয়মাসই দেবতাদের কাছে একদিনের সমান। দিনের বেলায় জেগে থাকেন দেব-দেবীরা। তাই এই সময় শাস্ত্র অনুযায়ী দেবতাদের পুজো করার রেওয়াজ। অন্যদিকে, দক্ষিণায়নের সময় হল দেবতাদের কাছে রাত্রি। এই সময় বিষুবরেখা থেকে সূর্য ক্রমশ দক্ষিণদিকে গমন করে। দক্ষিণায়নের ছয় মাস হল দেবতাদের কাছে একটি গোটা রাতের সমান। এই সময় দেব-দেবীরা নিদ্রায় যান। তাই এই কারনে পুজো করার রীতি নেই। নিয়ম অনুসারে, শরত্কাল হল দক্ষিণায়নের অন্তর্গত। এই সময় দেবতারা নিদ্রাগমন করেন। ফলে শরত্কাল পুজো করার জন্য একেবারেই উপযুক্ত নয়। তাই একে অকাল বলা হয়। অকালে দেবতাদের বন্দনা করার জন্য তাঁদের জাগ্রত করতে হয়। আর এই জাগ্রত করার কৌশল ও রীতিকে বোধন বলা হয়। বিভিন্ন শাস্ত্র ও পুরাণে উল্লেখ রয়েছে, রাবণ বধের আগে মহামায়ার আশীর্বাদ ও সাহায্য পেতে অকালেই বোধন করে দেবীপুজো করেছিলেন।
শাস্ত্র অনুসারে, রাবণ বধের আগে রামচন্দ্র দেবী পার্বতীর কাছে আশীর্বাদ প্রার্থনা করে বিল্ববৃক্ষতলে বোধনের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজা করেছিলেন। শরৎকাল দেবপুজোর ‘শুদ্ধ সময়’ নয় বলে রাম যে দুর্গাপুজো করেছিলেন বলে দেবী পার্বতীর বোধন ‘অকালবোধন’ নামে পরিচিত হয়। মহাষষ্ঠীতিথির সন্ধ্যের সময় প্রথমে দেবীর বোধন করা হয়, তারপরে অধিবাস ও আমন্ত্রণ করা হয়৷
মহাষষ্ঠীর শুভতিথি
২ কার্তিক, (ভাঃ ২৮ আশ্বিন), ইং ২০ অক্টোবর, শুক্রবার, সূর্যোদয় ঘ ৫|৬, পূর্বাহ্নে ঘ ৯|২৮। ষষ্ঠী রাত্রি ঘ ৯|৮ পর্যন্ত। মহাষষ্ঠী। পূর্বাহ্নের মধ্যে কিন্তু বারবেলানুরোধে দিবা ঘ ৮| ৩১ মধ্যে দুর্গাদেবীর ষষ্ঠ্যাদিকল্পারত ও ষষ্ঠীবিহিত পুজো প্রশস্তা। সায়ংকালে দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস।
