কালী পূজা প্রাচীন নয়। ১৭৭৭ খ্রিষ্টাব্দে কাশীনাথ রচিত শ্যামাসপর্যাবিধি গ্রন্থে এই পূজার সর্বপ্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়।[২২] কথিত আছে, নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় অষ্টাদশ শতকে তার সকল প্রজাকে শাস্তির ভীতি প্রদর্শন করে কালীপূজা করতে বাধ্য করেন। সেই থেকে নদিয়ায় কালীপূজা বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে। কৃষ্ণ চন্দ্রের পৌত্র ঈশান চন্দ্রও বহু অর্থব্যয় করে কালীপূজার আয়োজন করতেন।
কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে হয় দীপান্বিতা কালীপূজা। মাঘ মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশীতে করা হয় রটন্তী কালীপূজা। এ প্রসঙ্গে রটন্তী কালীপূজার কাহিনী বনর্ণার প্রয়োজন রাখে। রটন্তী কালীপূজোর শুরুর সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণ এবং রাধিকা বিশেষভাবে জড়িয়ে আছে। জ্যৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশীতে পালন করে ফলহারিনী কালীপূজা। এছাড়াও শনি ও মঙ্গলবারে, অন্যান্য অমাবস্যায় বা বিশেষ কোনো কামনা পূরণের উদ্দেশ্যেও কালীর পূজা করা হয়।
গৃহে বা মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত কালী প্রতিমার নিত্যপূজা হয়। এছাড়াও বিশেষ বিশেষ তিথিতেও কালীপূজার বিধান আছে। দীপান্বিতা কালীপূজা বিশেষ জনপ্রিয়। এই উৎসব সাড়ম্বরে আলোকসজ্জা সহকারে পালিত হয়। সাধারণত মধ্য রাত থেকে পূজা শুরু হয় এবং ভোররাতে এ পূজা সম্পন্ন হয়ে থাকে। সাধারণত আরতি ,আহ্বান এবং পুষ্পাঞ্জলির দ্বারা এই পূজা সম্পন্ন করা হয়। ধ্যানের মাধ্যমে দেবী কালীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে আবাহন ও পুষ্পাঞ্জলির মাধ্যমে দেবী কালীর পূজা পদ্ধতি সম্পন্ন হয়ে থাকে। জবা ফুল, চন্দন ,পুষ্প, ধূপ, দীপ ও লেখনি দোয়াত ইত্যাদি কালী পূজার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। দেবী কালী শুধু জবা ফুলেই সন্তুষ্ট হন। সোমরস এই পুজোয় প্রধান ভোগ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। লেখনি দোয়াত বা কালী দোয়াতগুলিতে অনামিকা অঙ্গুলি দিয়ে স্বস্তিক অঙ্কন করতে হয় এবং এর সাথে লাল চন্দনবাটা ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুন: Kali Puja 2021: তন্ত্রশাস্ত্রের মতে, কালী হলেন দশমহাবিদ্যা! কত রূপে পূজিত হন দেবী কালী?