AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Manglik Dosh: স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি আর অশান্তি লেগেই রয়েছে? জন্মছকে মাঙ্গলিক দোষ নেই তো?

Married Life: বিবাহ মানুষের একবারই হয় (হিন্দু মতে), তাই নিজের চাহিদার থেকে প্রকৃতির নির্বাচন বা নিজের ভাগ্যকে মানতে শিখুন। এটি আপনার জন্য শুভ বা বরাদ্দ।

Manglik Dosh: স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে  ভুল বোঝাবুঝি আর অশান্তি লেগেই রয়েছে? জন্মছকে মাঙ্গলিক দোষ নেই তো?
| Edited By: | Updated on: Jul 22, 2022 | 7:15 AM
Share

মাঙ্গলিক কথাটির সাধারণ অর্থ মঙ্গলময় বা হিতকর যা কিছু। কিন্তু মাঙ্গলিক দোষ অর্থে আমরা বুঝি জন্ম কুণ্ডলীতে একটি কুপ্রভাবকারী যোগ। অথছ জানার বিষয় হল, মাঙ্গলিক দোষ ‘ভালো’ নাকি ‘খারাপ’ তা অত্যন্ত আপেক্ষিক বিষয়। কীভাবে?

জন্মকুণ্ডলীতে মঙ্গলের লগ্ন, চতুর্থ, সপ্তম, অষ্টম বা দ্বাদশ অবস্থানকে মাঙ্গলিক দোষ হিসেবে ধরা হয়। আবার অনেকে মঙ্গলের দ্বিতীয় অবস্থানকেও মাঙ্গলিক দোষ হিসেবে ধরে থাকেন। প্রথমেই বলে রাখি, মাঙ্গলিক দোষ মূলত জ্যোতিষে দাম্পত্য সুখের প্রসঙ্গেই প্রাসঙ্গিক। জ্যোতিষে মঙ্গল একটি পাপ গ্রহ আর লগ্ন, চতুর্থ, সপ্তম, অষ্টম ও দ্বাদশ ঘরগুলি মূলত দাম্পত্য জীবনের সুখ শান্তি নির্দেশ করে। ওই ঘরগুলির কোন একটিতে মঙ্গল থাকলেই দাম্পত্য সুখে বাধা বিঘ্ন আসে।

বিভিন্ন ঘরে অবস্থানের ফলও বিভিন্নরকম। তবে এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, স্বামীর মাঙ্গলিক দোষ থাকলে স্ত্রী ভুক্ত থাকে। আবার এটি বিপরীত ক্রমেও সত্য। লগ্নে মঙ্গল থাকলে রাগ জেদ ও ঔদ্ধত্যজনিত কারণে দাম্পত্যজীবনে অশান্তিময় হয়। চতুর্থে মঙ্গল থাকলে গৃহে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয়। বাস্তুভিটে দাম্পত্য ও সাংসারিক সুখের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। সপ্তমে মঙ্গল থাকলে স্বামী কিংবা স্ত্রী ক্রোধী ও স্বাধীনচেতা হয়, স্বামী-স্ত্রীর মতের মিল হয় না, ঝগড়া-অশান্তি হাতাহাতি অবধি গড়িয়ে যেতে পারে। অষ্টমে থাকলে স্ত্রী বা স্বামী মারা যেতে পারে বা অসামঞ্জস্য যৌনতা দাম্পত্য কলহের কারণও হতে পারে। দ্বাদশে থাকলে অবৈধ সম্পর্ক বা ডিভোর্স অবধি হয়। তবে বাস্তবে কিছু ব্যতিক্রমও দেখেছি যেমন— লগ্নে মঙ্গল স্বক্ষেত্রে বা বলবান হলে দাম্পত্য জীবন অতটা অশুভ হয় না। বরং প্রতিষ্ঠা, মান-সম্মান বৃদ্ধি পায়। বুধের রাশিতেও মঙ্গল মাঙ্গলিক দোষ সৃষ্টি করতে পারে না। আবার এটাও দেখেছি যে স্বামীর ছকে মাঙ্গলিক কিন্তু স্ত্রীর ছকে মাঙ্গলিক সৃষ্টিকারী ঘরে রাহু বা শনি, সেক্ষেত্রেও দাম্পত্য সুখের হয়।

জন্ম ছকে মাঙ্গলিক দোষ থাকল কি না থাকল এটা তো আমাদের হাতে নেই। সবটাই প্রকৃতির সৃষ্টি। আবার মাঙ্গলিক দোষ না অন্য কোনও বার্তা সেটিও ভাববার বিষয়। কারণ দেখেছি যে ছকে মাঙ্গলিক দোষ থাকলে দেরিতে বিবাহ হয়। আর দেরিতে বিবাহ হওয়ার জন্যই ওই বিয়ে শুভ হয়। কম বয়সে বিশেষ করে ৩২ বছরের আগে বিয়ে করলেই সেক্ষেত্রে অশান্তি হয়। এমনকী বিচ্ছেদও হতে পারে। তাই জন্ম ছকে মাঙ্গলিক থাকলেই বুঝতে হবে যে জাতক বা জাতিকা কম বয়সে বিবাহের জন্য উপযুক্ত নয় বা প্রকৃতি চাইছে সে যেন দেরিতে বিবাহ করে। এখন কেউ যদি প্রকৃতির নিয়ম লঙ্ঘন করে বিবাহ করে তবে তাকে বাধার সম্মুখীন প্রকৃতির নিয়মেই হতে হবে।

বিবাহ মানুষের একবারই হয় (হিন্দু মতে), তাই নিজের চাহিদার থেকে প্রকৃতির নির্বাচন বা নিজের ভাগ্যকে মানতে শিখুন। এটি আপনার জন্য শুভ বা বরাদ্দ। দেখা গেল যে একটি ছেলে খুবই ভালো, প্রতিষ্ঠিত, উদার ইত্যাদি। কিন্তু ভালো হলেই যে সে ভালো স্বামী হবে তার গ্যারান্টি কে দিয়েছে! আমার নিজের ভালো আমি নিজে যা বুঝব তার থেকে মাতৃতুল্য প্রকৃতি অনেক বেশি বোঝে। আমরা মানুষ জাতিটা ভোগবাদে বিশ্বাসী। শুধু লাভ লোকসানটাই বুঝি। কিন্তু প্রকৃতি নিজের ছন্দেই চলবে, আমার বা আপনার স্বার্থে নয়। ছকে মাঙ্গলিক থাকলে সমবয়সি বিবাহ করবেন না। স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে ৫ থেকে ১০ বছরের বয়সের পার্থক্য শুভ হয়। বিবাহ হল এককথায় প্রয়োজন ও পরিস্থিতি, সময় হলেই হবে। পরিশেষে এটাই বলব যে মাঙ্গলিক কোনও দোষ নয়। এটিও প্রকৃতির একটি সাবধানবাণী।

মাঙ্গলিক মানেই মনে রাখবেন যে, বিবাহ বা দাম্পত্যজীবনে মঙ্গলের হঠকারিতা ও উগ্রতা থাকবেই। তাই যোটক বিচারে উপযুক্ত পাত্র/পাত্রীর সাথেই জুটি করুন। তাড়াহুড়ো করবেন না। মনে রাখবেন যে দুষ্ট গোরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো। তাই মাঙ্গলিক দোষ আপনাকে চিরকুমার বা চিরকুমারী রাখলেও সেটি আপনার মানসিকতা বা আপনার কর্মফল অনুযায়ী প্রকৃতির সেরা নির্বাচন। তাই মানসিকতা পরিবর্তন করুন। সুখে থাকুন। বিভ্রান্ত হবেন না।

ডঃ আকাশদীপ কর্মকার, জ্যোতিষ ও গণিত গবেষক