AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Halloween 2022: কখন পালিত হয় হ্যালোইন ইভ? পশ্চিমের ভূত-চতুর্দশীতে কুমড়োর গুরুত্ব এত বেশি কেন?

Christian Feast: ৩১ অক্টোবর কেল্টিক ক্যালেন্ডারের শেষ দিন। তাই কেল্টিকদের মধ্যে এটি নতুন বছরের সূচনা হিসেবেও পালিত হয়। ১ নভেম্বর দিনটি পালিত হয় অল সেন্টস ডে বা অল হ্যালোস ডে হিসেবে।

Halloween 2022: কখন পালিত হয় হ্যালোইন ইভ? পশ্চিমের ভূত-চতুর্দশীতে কুমড়োর গুরুত্ব এত বেশি কেন?
| Edited By: | Updated on: Oct 31, 2022 | 9:52 AM
Share

শনিবার দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিওলের (Seoul Halloween) ইতাওয়ানে একটি জনপ্রিয় হ্যালোইন পার্টি স্পটে বিপুল সংখ্যক লোক জড় হয়। হুড়োহুড়িতে একাধিক ব্যক্তি পদদলিত হয়। হ্যালোইন উৎসবে যোগ দিয়ে সেখানে পদদলিত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১৫০-এরও বেশি। ১৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। করোনার পর দক্ষিণ কোরিয়ায় এই প্রথম নো মাস্ক হ্যালোইন পার্টির আয়োজন কর হয়েছিল। সম্ভবত সেই কারণেই ভিড় চরম আকার নেয়। তবে জানার বিষয় হল, হ্যালোইন (Halloween) উৎসব মূলত পালন করে আমেরিকা, ইংল্যান্ড এবং ইউরোপীয় দেশের নাগরিক। এই উত্সবটির উৎপত্তিস্থল কিন্তু আয়ারল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ড। কয়েক শতাব্দী ধরে সেখানে উৎসবটি পালন করা হয়ে থাকে। সেখানে গ্রীষ্মের শেষ এবং শীতের শুরুকে চিহ্নিত করতে করা হতো বন ফায়ারের আয়োজন। তৈরি করা হতো কুমড়োর লন্ঠন। পরবর্তীকালে তা বিদেহী আত্মাকে তাড়ানোর উৎসবে পরিণত হয়। আসুন জেনে নেই এই উৎসব উদযাপনের কারণ, ইতিহাস এবং এই উৎসব সম্পর্কিত মজার তথ্য।

৩১ অক্টোবর হ্যালোইন ইভ

প্রতি বছর ৩১ অক্টোবর পালিত হয় হ্যালোইন ইভ। হ্যালোইনের নাম শুনলেই আমাদের মনে নানাবিধ ভীতিপ্রদ ছবি ভেসে ওঠে। হ্যালোইন ইভ নানাভাবে পালন করা হয়। এই রীতির মধ্যে রয়েছে আজব ধরনের পোশাক পার্টিতে যোগদান, কুমড়ো খোদাই, গেম খেলা, প্র্যাঙ্কস এবং হ্যালোইন-থিমযুক্ত সিনেমা দেখা। হ্যালোইন শব্দটি এসেছে তার স্কটিশ ‘অল হ্যালোস’ ইভ থেকে। হ্যালোইন শব্দটির অর্থ হল ‘পবিত্র’। অল হ্যালোজ ডে ‘ফিস্ট অব অল সেন্টস ডে’ নামেও পরিচিত। পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তির জন্য এই উৎসব পালিত হয়। সাধারণত কোনও উৎসব অনুষ্ঠানে মানুষ নতুন পোশাক পরেন, কিন্তু এই উৎসবে মানুষ এমন পোশাক পরেন এবং মেক-আপ করেন যাতে তাকে দেখে বাকিরা ভয় পায়। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা আড়ম্বর সহকারে এই উৎসব পালন করেন। অল হ্যালোস ইভ, অল হ্যালোস ইভনিং, অল হ্যালোইন এবং অল সেন্টস ইভ নামেও পরিচিত হ্যালোইন। খ্রিস্ট ধর্ম ছাড়াও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও বিশ্বের অনেক জায়গায় এই উত্সবটি খুব জাঁকজমকের সাথে উদযাপন করেন।

হ্যালোইনের ইতিহাস

ইতিহাস অনুসারে, হ্যালোইন দিবসটি প্রায় ২০০০ বছর আগে উত্তর ইউরোপ জুড়ে পালিত হতো যা হ্যালোইন সাওয়েন (Halloween Samhain) নামক প্রাচীন কেল্টিক উত্সবের সঙ্গে সম্পর্কিত। কেল্টিক বিশ্বাস অনুসারে এই দিনে মৃতদের আত্মারা জীবিত আত্মার জন্য সমস্যা তৈরি করতে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়। এই অশুভ আত্মাদের তাড়ানোর জন্য জীবিতরা ভূতের মতো পোশাক পরেন। এছাড়া বিদেহী আত্মাদের বিতাড়নের জন্য যত্রতত্র আগুন জ্বালিয়ে রাখা হয়। কিছু ধর্মগুরু এই উৎসবকে খ্রিস্ট ধর্মের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন যার ফলে একই দিনে অল সেন্টস ডে এবং হ্যালোইন ডে পালিত হয়।

কেল্টিক ক্যালেন্ডারের শেষ দিন

৩১ অক্টোবর কেল্টিক ক্যালেন্ডারের শেষ দিন। তাই কেল্টিকদের মধ্যে এটি নতুন বছরের সূচনা হিসেবেও পালিত হয়। ১ নভেম্বর দিনটি পালিত হয় অল সেন্টস ডে বা অল হ্যালোস ডে হিসেবে। তাই অল হ্যালোস ইভ হল অল সেন্টস ডে-এর আগের সন্ধ্যা যা এখন হ্যালোইন ইভ নামে পরিচিত।

কীভাবে হয় হ্যালোইন উদযাপন

হ্যালোইন ডে উদযাপনের পদ্ধতি সম্পূর্ণ আলাদা। আইরিশ লোকেরা হ্যালোইনে কুমড়ো খোদাই করে চোখ, নাক এবং মুখ তৈরি করত। এরপর সেই ফাঁপা কুমড়োর মধ্যে মোমবাতি জ্বালিয়ে এক ধরনের লন্ঠন তৈরি করতেন যার নাম ছিল ‘জ্যাক-ও- ল্যান্টার্নস’। এই লন্ঠনটি ঘরের বাইরে বা গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয় বিদেহী আত্মাদের দূরে রাখার জন্য। পরে এই লন্ঠন মাটির নীচে পুঁতে দেওয়া হয়। এই দিনে লোকেরা ভূতের মতো সাজসজ্জা করে এবং হাতে উপহার নিয়ে প্রতিবেশীদের কাছে যায়। শিশুদের এইদিন প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনরা চকোলেট দেন।

হ্যালোইন পোশাক

এই দিনটি উদযাপনে মানুষ বিভিন্ন ধরনের পোশাক পরেন যা এই উৎসবের সংস্কৃতি। এই দিনে রাক্ষস, শয়তান, ভূত, ভ্যাম্পায়ার, দানব, মমি, কঙ্কাল, ওয়ারউলফ এবং ডাইনির মতো পোশাক পরেন লোকে। একইসঙ্গে চলে পার্টি। প্রতিবেশীরা মিলেমিশে একসঙ্গে অনেক খেলা খেলেন। এমনই একটি খেলা হল অ্যাপল ববিং। এক্ষেত্রে আপেলগুলি জলের টবে রাখা হয়, যে ব্যক্তি প্রথমে দাঁত দিয়ে পাকড়ে সমস্ত আপেল বাইরে বের করতে পারেন তিনিই বিজয়ী হন। এইভাবে মানুষ বিভিন্ন উপায়ে হ্যালোইন উপভোগ করেন।

হ্যালোইন সম্পর্কে মজার তথ্য

হ্যালোইনে, আমেরিকার শিশুরা ভূতের মতো সেজে ‘ট্রিক অর ট্রিট’ উদযাপন করে এবং প্রতিবেশীদের বাড়িতে গিয়ে বলে ‘ট্রিক অর ট্রিট?’ প্রতিবেশীরা তাতে ভয় পাওয়ার ভান করেন ও তাদের ট্রিট বলেন। এরপর ভূত সেজে থাকা খুদেদের হাতে চকোলেট তুলে দেন। আসলে কেল্টিকরা বিদেহী আত্মার অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে এবং তাদের সন্তুষ্ট রাখতে বাড়ির বাইরে খাবার ও পানীয় রেখে দিত। তাদের এই প্রথা থেকে চালু হয়েছে ট্রিক অর ট্রিট প্রথা। মূল ছোটদের আনন্দ দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এমন প্রথা চালু হয়েছে।

হ্যালোইনে কুমড়োর ব্যবহার

এই দিনে লোকেরা তৈরি করেন হ্যালোইন কেক। এছাড়া কুমড়ো, বাদুড় এবং পোকামাকডড়ের আকারের ক্যান্ডিও তৈরি করা হয়। পাশাপাশি কুমড়োর পিঠে, কুমড়োর রুটি, পপকর্ন, পাউন্ড কেক, কুমড়ার পিউরি দিয়ে তৈরি খাদ্য, কুমড়োর বীজ ভাজা এবং মিষ্টি ভুট্টাও তৈরি করা হয়।