Marriage: বিয়ে হোক বা পার্টনারশিপে ব্যবসা— যোটক বিচার কেন গুরুত্বপূর্ণ?
Diligence : জ্যোতিষে সাধারণভাবে মানুষের বৈশিষ্ট্যগুলিকে পর্যবেক্ষণ করে ১২টি রাশি ও লগ্নে ভাগ করা হয়েছে। মানসিক ও শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলিও বিভিন্ন রাশির ক্ষেত্রে বিভিন্নরকম।

কথায় আছে— ‘জন্ম-মৃত্যু-বিবাহ, বলতে না পারে বরাহ’। আসলে জন্ম-মৃত্যু-বিবাহ এই তিন ঘটনা অনুমান করা জ্যোতিষে খুবই শক্ত কাজ। জন্ম-মৃত্যু বাদ দিয়ে আমাদের প্রসঙ্গ যেহেতু বিবাহ যোটক বিচার, তাই আমরা বিবাহ নিয়ে আলোচনা করব।
জ্যোতিষে বিবাহের সময়, পাত্র-পাত্রীর রূপ চেহারা শুভ-অশুভ বিচার করা গেলেও কেউ বিবাহের আগে দাবি করে বলতে পারবেন না যে এই দু’জনের বিবাহ হবেই। অর্থাৎ যার সঙ্গে কথাবার্তা হল সেই নির্দিষ্ট ব্যক্তিই আমার বউ বা স্বামী হবে— এই নিশ্চয়তা জ্যোতিষশাস্ত্র দিতে পারে না। প্রশ্ন হল, জ্যোতিষে কী আছে তবে? এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, কে আপনার পত্নী বা স্বামী হবে তা বলা না গেলেও হবু বর বা বউ-এর চারিত্রিক গুণাবলী কেমন হওয়ার সম্ভাবনা আছে তা জ্যোতিষ বলতে পারে। এখন ওই নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলি ১০ জন মেয়ে বা ছেলের মধ্যে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকতেই পারে। জ্যোতিষে সাধারণভাবে মানুষের বৈশিষ্ট্যগুলিকে পর্যবেক্ষণ করে ১২টি রাশি ও লগ্নে ভাগ করা হয়েছে। মানসিক ও শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলিও বিভিন্ন রাশির ক্ষেত্রে বিভিন্নরকম। যেমন মিথুন রাশি লগ্নের মানুষরা মধ্যম উচ্চতার, বিচক্ষণ, চঞ্চল, বালকসুলভ, গণনা ও উপদেশপ্রিয় হন। আবার মকর রাশির ব্যক্তিরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন, লম্বা ও রাজনীতি পরিচালনায় দক্ষ হন। এখন এই রাশির বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যেও পরস্পর বিরোধী বৈশিষ্ট্য আছে বা থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই জ্যোতিষে দু’জন ব্যক্তি বা স্ত্রী ও পুরুষের মধ্যে বিয়ের পরে কতটা মিল অমিল হবে তা বোঝা যায় যোটক বা কুণ্ডলীর মিল দেখে। এভাবে দু’জনের স্বভাব ও ভবিষ্যতে পথ চলার ধরনটির আগাম আভাস দেওয়া যায়। এগুলির গুরুত্ব বিবাহ, পার্টনারশিপ ব্যবসা বা রাজনীতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে যথেষ্ট রয়েছে। এখন যোটক বিচারের কিছু পরীক্ষিত সূত্র বলব।
প্রথমত, মেষের সঙ্গে মিথুন, কন্যা, কুম্ভ রাশি ও লগ্নের মনের মিল হয় না। বৃষের সঙ্গে কর্কট, ধনু, মীন লগ্নের মিল হয় না। মিথুনের ক্ষেত্রে কর্কট, কন্যা, বৃশ্চিকের মিল হয় না। কর্কটের মিথুন, তুলা, মকর, কুম্ভ লগ্নের মিল হয় না। সিংহের ক্ষেত্রে মকর, তুলা, কুম্ভের মিল হয় না। কন্যার ক্ষেত্রে বৃশ্চিক, মেষ, মিথুনের মিল হয় না। তুলার ক্ষেত্রে সিংহ, কর্কট, ধনু রাশির অশুভ। বৃশ্চিকের ক্ষেত্রে অশুভ মকর, কুম্ভ, মিথুন, কন্যা। ধনুর ক্ষেত্রে অশুভ বৃষ, তুলা। মকরের ক্ষেত্রে বৃশ্চিক, কর্কট অশুভ। কুম্ভের ক্ষেত্রে অশুভ সিংহ, কর্কট। মীনের ক্ষেত্রে বৃষ, তুলা রাশি লগ্নের মিল হয় না।
দ্বিতীয়ত, উভয়ের শুক্র-মঙ্গল এর কোনও সংযোগ থাকলে (বিবাহের ক্ষেত্রে) ও রবিচন্দ্রের কোন মিল, যোগাযোগ থাকলে (পার্টনারশিপের ক্ষেত্রে) যোটক ভালো হয়।
তৃতীয়ত, সপ্তমভাবের সহযোগী বা শুভ দশা চললে জুটি ভালো হবে। যেমন একজনের বৃহস্পতি ও অপরজনের শনি চললে শুভ। আবার একজনের মঙ্গল ও অপরজনের রাহু চললে ঝামেলা হবে। উভয়ের সপ্তম ভাব শুভকাম্য।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, যে যোটক পয়েন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ যোটক পয়েন্ট শুধু মাত্র চন্দ্রের উপর নির্ভর করে। কিন্তু আমি মনে করি যে বাকি গ্রহগুলির ওপরেও সমান গুরুত্ব দেওয়া দরকার। আবার মাঙ্গলিক দোষ উভয়ের থাকলে ভালো। একজনের মাঙ্গলিক ও অপরজন অমাঙ্গলিক শুভ নয়। গণও খুবই নগণ্য কারণ একজনের নর ও অপরজনের রাক্ষস হলে একজন মারা যায় একথাও সত্য নয়। পরিশেষে বলব যে দাম্পত্য সুখ কপালে থাকতে হয়, না হলে শত চেষ্টাতেও হয় না। যার সাথে যার যেখানে লেখা থাকবে সেখানেই তার সঙ্গে বিয়ে হবে। তবে যোটক বিচারে মানসিক ও দাম্পত্য জীবনের সুখ শান্তির কিছুটা সাম্যতা আনা সম্ভব। অবশ্য খুব বড় পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়।
ডঃ আকাশদীপ কর্মকার জ্যোতিষ ও গণিত গবেষক
