
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে এ মরসুমে সফর শেষ বৈভব সূর্যবংশীর। রাজস্থান রয়্যালস এবং ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন প্রাপ্তি বলা যায় বৈভবকে। ১৩ বছরে আইপিএলে টিম পাওয়া। শুধু তাই নয়, অকশনে টেবলে তাঁকে নিয়ে রীতিমতো কাড়াকাড়ি। শেষ অবধি ১ কোটি দশ লক্ষ টাকায় বৈভবকে সই করিয়েছে রাজস্থান রয়্য়ালস। বৈভবের নতুন অ্যাসাইনমেন্ট ভারতের অনূর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে ইংল্যান্ড সফর। সেখানে ভালো পারফর্ম করা মানে আরও নজরে পড়বেন সকলের।
বৈভবের বিধ্বংসী ব্যাটিং সকলেই দেখেছেন। প্রশ্নটা হচ্ছে, বৈভবের খেলার স্টাইল কি বদলে যাবে? হঠাৎ এমন প্রশ্নের কারণ, নতুন কোচ। বৈভবের? তাঁর রাজ্য দল বিহারের কোচ বদল হয়েছে। সুতরাং, বৈভবেরও তো নতুন কোচ।
ফেরা যাক, যেখান থেকে সবটা শুরু হয়েছিল সেখানে। ১৩ বছরেরও কম বয়সে রঞ্জি ট্রফিতে অভিষেক হয়েছিল। সেখান থেকেই নজরে পড়েন। ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে সবচেয়ে কঠিন টুর্নামেন্ট। লাল বল, চারদিনের খেলা, নকআউট পর্ব পাঁচ দিনের। ঘরোয়া ক্রিকেটের টেস্ট ম্যাচ। এখানে শুধু চালিয়ে খেললেই হয় না, পরিস্থিতি অনুযায়ী ধৈর্যও ধরতে হয়। কিন্তু বৈভবের ডিকশনারিতে ডিফেন্স শব্দটাই যেন নেই! এখনও অবধি পাঁচটি মাত্র প্রথম শ্রেনির ম্যাচ খেলেছেন। করেছেন ১০০ রান। সর্বাধিক ৪১। স্ট্রাইকরেট প্রায় ৬৪। কিন্তু ব্যাটিং গড় ১০!
এত পরিসংখ্যানে একটা সিদ্ধান্তে আসা যেতে পারে, বৈভব শুধুমাত্র টি-টোয়েন্টির জন্যই যোগ্য। কিন্তু উত্তর আরও একটা হতে পারে, তাঁকে যদি সঠিক পথ দেখানো যায়, হতেই পারে তিন ফরম্যাটেই সাফল্য পেলেন। এর জন্য নির্ভর করবে রাজ্য দলেও তাঁর খেলার স্টাইলে পরিবর্তন হচ্ছে কি না। তবে খেলার স্টাইল বদলালে হারিয়ে যেতে পারেন। দ্বিতীয় পথ হতে পারে, তাঁর আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের মানসিকতা ধরে রেখে ডিফেন্স টেকনিকে উন্নতি। ইংল্যান্ডে ওয়ান ডে-র পাশাপাশি মাল্টি ডে-ম্যাচও রয়েছে। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরলে তিনি পাবেন নতুন কোচ বিনায়ক সামন্তকে।
মুম্বইয়ের প্রাক্তন কিপার ব্যাটার বিনায়ক সামন্ত বিহারের নতুন কোচ। ক্রিকেট কোচিংয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা কম নয়। মুম্বই টিমের কোচ ছিলেন। কর্নেল সিকে নাইডু ট্রফিতে মুম্বই অনূর্ধ্ব ২৩ দলের কোচের দায়িত্ব সামলেছেন। অসম রাজ্য দলের ফিল্ডিং কোচ এবং তাদের অ্যাকাডেমির দায়িত্বেও ছিলেন। শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে। বেলজিয়াম জাতীয় দলকে কোচিং করিয়েছেন বিনায়ক সামন্ত। হার্ড ওয়ার্ক নয়, বৈভবের ক্ষেত্রে স্মার্ট ওয়ার্কে বিশ্বাসী নতুন কোচ।
পরিষ্কার জানিয়েছেন, বৈভবের খেলার ধরনে বিশাল কোনও পরিবর্তন আনতে চান না। বরং লাল বলের ক্রিকেটে এই স্টাইলেই বৈভবের ব্যাটিং কীভাবে আরও উন্নতি করা যায়, সেদিকেই নজর দেবেন। অন্যান্য ক্রিকেটারদেরও কোচিং করাতে হবে, কিন্তু বিনায়ক যেন অপেক্ষায় বৈভবের। ৩৫ বলে সেঞ্চুরির ইনিংসটায় তিনিও যে মুগ্ধ!