কানাডার ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলছেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরই বোর্ডের থেকে ছুটি নেন সাকিব। আমেরিকার মেজর লিগ ক্রিকেটেও খেলেন। এরপর কানাডার টি-টোয়েন্টি লিগে। পারফরম্যান্সের দিক থেকে স্বস্তির জায়গায় থাকলেও দেশের পরিস্থিতি নিয়ে অস্বস্তিতে। বাংলাদেশে পালাবদল হয়েছে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়েছেন। এরপরই বাংলাদেশে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা হয়েছে। দেশের প্রাক্তন অধিনায়ক মাশরাফি মোর্তাজার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সাকিব আল হাসানের পার্টি অফিসেও আগুন দেওয়া হয়। কানাডার টি-টোয়েন্টি লিগে খেলার মাঝে চূড়ান্ত অপমানের শিকারও হন সাকিব। এ বার প্রশ্ন তাঁর আন্তর্জাতিক কেরিয়ার নিয়েই।
মাশরাফি মোর্তাজা ক্রিকেট থেকে অবসরের পর রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, আওয়ামি লিগের তরফে দাঁড়ানো মাশরাফি নরাইল-২ কেন্দ্রের সাংসদ এবং হুইপ পদেও ছিলেন। সরকার ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামি লিগের নেতাদের বাড়ি ভাঙচুরের নানা ঘটনা ঘটেছে। সাকিব আল হাসানও একই পার্টির তরফে সাধারণ নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন। সাংসদও হয়েছিলেন। তবে তিনি প্রাক্তন ক্রিকেটার নন। খেলার মাঝেই রাজনীতিতে যোগ দেন।
বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। একটা সময় বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমীদের চোখের মণি ছিলেন সাকিব। পরিস্থিতি বদলেছে। এখন আর সাকিব সেই সম্মানের জায়গায় নেই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর বোর্ডের থেকে ১২ অগস্ট অবধি ছুটি নিয়েছিলেন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে খেলার জন্য। সামনে বাংলাদেশ এ দলের পাকিস্তান সফর রয়েছে। এরপরই সিনিয়র দল যাবে পাকিস্তানে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্গত দু-ম্যাচের টেস্ট সিরিজও রয়েছে।
শুধু তাই নয়, পাকিস্তান সফর শেষে ভারতেও আসার কথা বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের। ভারতের মাটিতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্গত দুটি ম্যাচ দিয়ে সফর শুরু। এরপর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। বাংলাদেশের আপাতত যা পরিস্থিতি, তাতে সাকিব আল হাসান দেশে ফিরবেন কিনা, এ নিয়েই সংশয় রয়েছে। একই ভাবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাঁকে জাতীয় দলেও সুযোগ দেওয়া হবে কিনা এ নিয়েও প্রশ্নচিহ্ন।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, আওয়ামি লিগের নেতা-মন্ত্রীরা প্রকাশ্যে নেই। সাকিব বিদেশে থাকায় তাঁর উপর সেই অর্থে কোনও আঁচ পড়েনি। ১২ অগস্ট ছুটি শেষ হচ্ছে তাঁর। পাকিস্তান সিরিজের স্কোয়াডে সুযোগ পেলে দলে যোগ দেওয়ার কথা। তিনি সুযোগ পাবেন কিনা, এটি যেমন প্রশ্ন, তেমনই সাকিব নিজেও খেলতে চাইবেন কিনা এ নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।
দল ঘোষণার আগে সাকিব দেশে না ফিরলে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড যে অন্য চিন্তা-ভাবনা করবে তা পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার কথা ভেবে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়াও কঠিন সাকিবের ক্ষেত্রে। পাকিস্তান সফরের দল এখনও ঘোষণা হয়নি। সরকার পড়ে যাওয়ায় সাকিবের পরিচয় এখন শুধুই ক্রিকেটার। তারপরও ব্যক্তিগত নিরাপত্তার প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে!