
ক্রিকেট কোচেরা কেমন হন? মনে এ আবার কী ধরনের প্রশ্ন! ম্যাচের আগে স্ট্র্যাটেজি তৈরি থেকে প্র্যাক্টিস। সবেতেই তো থাকেন। ম্যাচের সময়? সাধারণত ডাগআউটেই থাকেন। কোনও বার্তা দেওয়ার হলে, ড্রিঙ্কস ব্রেকে প্লেয়ারের মাধ্যমে তা পৌঁছে দেন ক্যাপ্টেনকে। আবার কখনও ডাগআউট থেকেও ইশারায় বোঝান। বেশির ভাগ কোচের ক্ষেত্রে এমনই দেখা যায়।
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ বা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে একটু আলাদা। এখানে স্ট্র্যাটেজিক টাইম আউট থাকে। সে সময় মাঠে এসে প্লেয়ারদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু ফুটবলের ক্ষেত্রে বিষয়টা অন্য থাকে। ম্যাচের সময় টেকনিক্যাল এরিয়ায় থাকেন। প্লেয়ারদের সারাক্ষণই কিছু না কিছু নির্দেশ দিয়ে যান। পুরো খেলার মধ্যে ডুবে থাকেন। সারাক্ষণই সক্রিয় দেখায়। হাতে গোনা ফুটবল কোচই ডাগআউটে বসে থাকেন। ক্রিকেটেও কি ধীরে ধীরে এমনটা হতে পারে? বলা যায় না…।
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে অভিষেকেই চ্যাম্পিয়ন, এমন রেকর্ড রয়েছে দুটি দলের। ২০০৮ সালে শুরু হয়েছিল আইপিএল। ধীরে ধীরে তা হয়ে উঠেছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট। উদ্বোধনী সংস্করণে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল রাজস্থান রয়্যালস। ২০২২ সালে আরও একটি দল এই তালিকায় নাম লেখায়। সেটা উদ্বোধনী না হলেও তাদের অভিষেক মরসুম। বাইশের আইপিএলে দুটি নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি টিম যোগ করা হয়েছিল। লখনউ সুপার জায়ান্টস ও গুজরাট টাইটান্স।
নতুন দল, সেভাবেই সাজিয়েছিল গুজরাট টাইটান্স। হার্দিক পান্ডিয়াকে ক্যাপ্টেন করে আনা হয়। টিমে একঝাঁক তারকা। বোলিংয়ে প্রাইম টাইমের মহম্মদ সামি। দুর্ধর্ষ টিম। অভিষেক মরসুমেই আইপিএল চ্যাম্পিয়ন। পরের মরসুমে অর্থাৎ ২০২৩ সালেও ফাইনালে উঠেছিল টাইটান্স। সে বার রানার্স। একটা টিম আইপিএলে যোগ দিয়ে চ্য়াম্পিয়ন এবং পরের বার রানার্স, এই সাফল্য একেবারেই হেলাফেলার নয়।
প্লেয়ারদের কথা সব সময়ই আলোচনায় আসে। তবে টাইটান্সে কিন্তু একজন মাস্টারমাইন্ডও রয়েছেন। আশিস নেহরা। অকশন থেকে অ্যাকশন, সর্বত্র রয়েছেন। প্লেয়ার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ভূমিকা নেন। স্ট্র্যাটেজি তৈরি…এরপরও তাঁকে আরও একটা ভূমিকায় দেখা যায়। ঠিক যেমনটা ফুটবলের কোচের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে। পার্থক্য একটাই, তাঁকে কোনও টেকনিক্যাল এরিয়ায় আটকে রাখা যায় না।
ক্যাপ্টেন যদি লং অনে ফিল্ডিং করেন প্রয়োজনে সেখানে গিয়েও কথা বলেন। আবার ক্যাপ্টেন স্কোয়ার লেগ বাউন্ডারিতে ফিল্ডিং করলেও। স্ট্র্যাটেজিক টাইম আউট তো রয়েইছে, এর বাইরেও তাঁকে সারাক্ষণ এদিক-ওদিক দেখা যায়। কোনও বোলার রান খরচ করে আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগছেন! তিনি যদি বাউন্ডারি লাইনে থাকেন, সেখানেই চলে যা নেহরাজি। কাঁধে হাত রেখে কথা বলেন। যেন ছেলেবেলার বন্ধু। ক্রিকেট মাঠে নেহরাজিকে যেন ফুটবল কোচও বলা যায়!