IPL 2022: ঋদ্ধি-রশিদ দুই হায়দরাবাদ প্রাক্তনীতে জয় হার্দিকের টাইটান্সের

১৪ পয়েন্ট অর্জন করে আইপিএলের পয়েন্ট টেবলের শীর্ষে উঠে গেল হার্দিকের দল।

IPL 2022: ঋদ্ধি-রশিদ দুই হায়দরাবাদ প্রাক্তনীতে জয় হার্দিকের টাইটান্সের
IPL 2022: ঋদ্ধি-রশিদ দুই হায়দরাবাদ প্রাক্তনীতে জয় হার্দিকের টাইটান্সের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 28, 2022 | 12:10 AM

সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ১৯৫-৬ (২০ ওভার)

গুজরাত টাইটান্স ১৯৯-৫ (২০ ওভার)

মুম্বই: শীর্ষে ওঠার লড়াইয়ে আজ অরেঞ্জ আর্মির বিরুদ্ধে ওয়াংখেড়েতে নেমেছিল টাইটান্সরা। ম্যাচের শেষ বলে আজ ভাগ্য নির্ধারিত হল হার্দিক পান্ডিয়ার গুজরাত টাইটান্সের (Gujarat Titans)। বল হাতে আজ পুরনো দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের (Sunrisers Hyderabad) বিরুদ্ধে রশিদ যাদু দেখা না গেলেও, শেষ ওভারে রশিদের ব্যাটেই বাজিমাত হার্দিকের দলের। ফের লিগ টেবলের মগডালে উঠে পড়লেন সামিরা। জেতার পরই ব্যাট উচিয়ে মাঠে যেভাবে দৌড়ালেন রশিদ, ছবিটা আইপিএলে (IPL) বেশ স্মরণীয় হয়ে থেকে যাবে। রান তাড়া করতে নেমে জয়ের ভিতটা গড়ে দিয়ে গিয়েছিলেন হায়দরাবাদের এক প্রাক্তনী ঋদ্ধিমান সাহা। আর শেষ অবধি গুজরাতকে জেতালেন আর এক হায়দরাবাদের প্রাক্তনী রশিদ খান।

আজ ঋদ্ধিদের বিরুদ্ধে কাজে এল না উমরান মালিকের ফাইফার। তবে আরও একবার নজর কেড়ে নিলেন তিনি। কাশ্মীরি তারকা ক্রিকেটার উমরান গতির সদ্ব্যবহার তো করেনই, পাশাপাশি প্রতিটা ম্যাচে তিনি আরও পরিণত হচ্ছেন। ১৫২ কিমি/ঘণ্টা গতিবেগে বল করে ফর্মে থাকা ঋদ্ধির উইকেট তুলে যখন তুলে নিলেন উমরান, ডাগআউটে ডেল স্টেইনকে দেখা গেল মুচকি মুচকি হাসছেন। বুঝতে অসুবিধা হয় না। ভারতের এই উঠতি তারকাকে নিজের মন্ত্র বেশ ভালোই শেখাচ্ছেন স্টেইন।

আজও ফর্মে ছিলেন না হায়দরাবাদের ক্যাপ্টেন। মাত্র ৫ করে যান কেন উইলিয়ামসন। এ বারের আইপিএলে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাদের মতো সিনিয়র প্লেয়াররা যেমন ছন্দে নেই, তেমনই অরেঞ্জ আর্মির অধিনায়কও ছন্দে নেই। টসে জিতে হায়দরাবাদকে ব্যাট করতে পাঠান হার্দিক। ওপেনিং জুটিকে জমাট হতে দেননি মহম্মদ সামি। শুরু থেকেই নিজামের শহরের দলকে চেপে রেখেছিলেন সামিরা। ফর্মে থাকা রাহুল ত্রিপাঠী আজ ব্যর্থ। তিনি করে যান ১০ বলে ১৬ রান। তবে শুধু রাহুল নন ফর্মে থাকা নিকোলাস পুরানকেও (৩) আজ প্যাভিলিয়নের রাস্তা দেখান মহম্মদ সামি। তবে অভিষেক শর্মার সঙ্গে আজ জুটি বাঁধেন এইডেন মার্করাম। তৃতীয় উইকেটে ৬১ বলে ওঠে ৯৬ রান।

তবে দুরন্ত ছন্দে থাকা হায়দরাবাদের ওপেনার অভিষেক শর্মাকে শেষ অবধি মাঠে থাকতে দেননি আলজারি জোসেফ। ৪২ বলে ৬৫ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে যান অভিষেক। ৬টি চার ও ৩টি ছয় দিয়ে ইনিংস সাজিয়েছিলেন অভিষেক। ৫৬ রান করে যান দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা ক্রিকেটার এইডেন মার্করাম। শেষ বেলায় ৬ বলে ২৫ রানের অপরাজিত ঝোড়ো ইনিংস খেলে যান শশাঙ্ক সিং। যার মধ্যে ছিস ১টি চার ও ৩টি ছয়। ৮ রানে অপরাজিত থাকেন মার্কো জ্যানসেন। ৪ ওভার বল করে ৩৯ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট পেয়েছেন মহম্মদ সামি। ১টি করে উইকেট পান যশ দয়াল ও আলজারি জোসেফ। তবে পুরনো দলের বিরুদ্ধে আজ ৪৫ রান হজম করলেও উইকেটের দেখা পাননি আফগান তারকা স্পিনার রশিদ খান। পুরান-ত্রিপাঠী-উইলিয়ামসনরা আজ খেলে দিতে পারলে আরও বড় টার্গেট ঝুলত হার্দিকদের সামনে।

১৯৬ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেন গুজরাতের দুই ওপেনার। ওপেনিং জুটিতে ৬৯ রান ওঠে। শুরু থেকেই গুজরাতের ওপর একের পর গতিময় বল দিয়ে চাপ ধরে রাখার চেষ্টা করছিলেন উমরান। কিন্তু একা উমরান কী বা করবেন! ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৫টি উইকেট নিয়েও দলকে জেতাতে পারলেন না। শুভমন ওপেনিংয়ে করে গেলেন ২২ রান। হার্দিকের ব্যাট থেকে আজ আসে মাত্র ১০ রান। ডেভিড মিলারকে (১৭) নিজের ছন্দেই পৌছতে দেননি উমরান। তবে আজ ফর্মে ছিলেন ঋদ্ধি। ২৮ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন বাংলার তারকা উইকেটকিপার-ব্যাটার। এবং শেষ পর্যন্ত ৩৮ বলে ৬৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে যান পাপালি। তবে শেষবেলায় মনে হচ্ছিল ম্যাচ হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে গুজরাতের। কিন্তু ক্রিজে ছিলেন রশিদ খান আর রাহুল তেওয়াটিয়া। এই জুটি মিলে দলকে জেতালেন। ২৪ বলে ৫৯ রান তুলে। ২১ বলে ৪০ রানে অপরাজিত থাকলেন রাহুল তেওয়াটিয়া। আর ১১ বলে ৩১ রানে নট আউট আফগান তারকা রশিদ খান। শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২২ রান। ২০তম ওভারে মার্কো জ্যানসেনকে ৪টি ছয় মেরে দলকে জিতিয়ে হিরো হলেন রশিদ।

ম্যাচের শেষে ক্যাপ্টেন হার্দিক যেভাবে জড়িয়ে ধরলেন রশিদকে তাতে বেশ স্পষ্ট রশিদ ঠিক কতটা খুশি করেছেন দলকে। এবং হায়দারাবাদকে হারিয়ে একটা বদলাও নিয়ে নিল গুজরাত। কারণ এখনও অবধি ৮ ম্যাচে খেলে মাত্র ১টা ম্যাচেই হেরেছিলেন হার্দিকরা। আর সেটা ছিল উইলিয়ামসনের দল। আজ ফিরতি ম্যাচেই বদলা নিয়ে নিলেন রশিদরা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: হায়দরাবাদ ১৯৫-৬ (অভিষেক শর্মা ৬৫, এইডেন মার্করাম ৫৬, মহম্মদ সামি ৩-৩৯, যশ দয়াল ১-২৪)। গুজরাত ১৯৯-৫ (ঋদ্ধিমান সাহা ৬৮, রাহুল তেওয়াটিয়া ৪০ রশিদ খান ৩১*, উমরান মালিক ৫-২৫)।