
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের সেনসেশন। মাত্র ১৩ বছরে আইপিএলে টিম পাওয়া, কোটিপতি হয়ে ওঠা। আর আইপিএল অভিষেক মাত্র ১৪ বছরেই। বিস্ময়বালক বৈভব সূর্যবংশীকে নিয়ে আগ্রহের অন্ত নেই। সেটাই যেন প্রত্যাশিত। আইপিএলের মেগা অকশনে তাঁকে ১.১ কোটিতে নিয়েছিল রাজস্থান রয়্যালস। এরপর থেকেই প্রতীক্ষা। রাজস্থান রয়্যালস অ্যাকাডেমিতে প্রস্তুতি শুরু করেন, এরপর মূল টিমের সঙ্গেও। তবে এই মরসুমেই আইপিএল খেলার সুযোগ পাবেন এমনটা শুরুতে ভাবা যায়নি। অবশেষে লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে অভিষেক হয় তাঁর। এরপর থেকে দুর্দান্ত কিছু ইনিংস উপহার দিয়েছেন।
আইপিএলের ইতিহাসে এ মরসুমের আগে অবধি ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ছিল ইউসুফ পাঠানের। ৩৭ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন ১৪ বছরের বৈভব। ঘরের মাঠে গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে মাত্র ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করেন বৈভব। এ মরসুমে রাজস্থান রয়্যালসের শেষ ম্যাচেও হাফসেঞ্চুরি প্লাস ইনিংস খেলেছেন। বৈভবকে আর নতুন করে পরিচয় করানোর নেই। তবে তাঁকে নিয়ে আগ্রহ কমেনি বিন্দুমাত্র। বিধ্বংসী ব্যাটিং নিয়ে না আলোচনা চল। তাঁর স্কুল জীবন নিয়েও আগ্রহ রয়েছে।
কয়েকদিন আগের ঘটনা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে, বৈভব সূর্যবংশী বোর্ড পরীক্ষায় ফেল করেছেন। যদিও পরবর্তীতে খতিয়ে দেখা যায়, তিনি বোর্ড পরীক্ষা দেনইনি। ফলে ফেল করার প্রশ্নই আসছে না। বৈভব ক্লাস এইট-এ পড়েন! হ্যাঁ, চমকে দেওয়ার মতোই। বিহারের সমস্তিপুর জেলার একটি গ্রাম তাজপুর। সেখানকার ডাঃ মুক্তেশ্বর সিনহা মডেস্টি স্কুলের ছাত্র বৈভব সূর্যবংশী। এবার কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
নয় বছরেই পাটনার জেনেক্স ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করা হয় বৈভবকে। সেখানে মণীশ ওঝার কোচিংয়ে ক্রিকেট প্রশিক্ষণ নেন। সক্কাল বেলা তাঁর টিউশন থাকত। এরপর ক্রিকেট ট্রেনিং। মাঝে স্কুল। কখনও সকালেও ক্রিকেট অনুশীলন করতেন। তাঁর স্কুল লাইফ নিয়েই না হয় আরও একটু খোঁজ নেওয়া যেতে পারে। আচ্ছা তাঁর স্কুলের খরচ কেমন?
মুক্তেশ্বর সিনহা মডেস্টি স্কুলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের তথ্য অনুযায়ী স্কুলে টিউশন ফি হিসেবে ২১০০ টাকা, পরীক্ষার ফি ৮০০ এবং অন্যান্য অ্যাক্টিভিটির জন্য ২৪০০ টাকা ফিস দিতে হয়। অর্থাৎ স্কুলে সব মিলিয়ে তাঁর জন্য খরচ পাঁচ হাজার ৩০০ টাকার মতো।
অনেক ক্রিকেটারই খেলার দুনিয়ায় কিছুটা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলে সেটাতেই এগিয়ে যাওয়ার ভাবনা-চিন্তা করেন। পড়াশোনা ছেড়েও দেন অনেকে। বৈভবের অবশ্য তেমন পরিকল্পনা নেই। তিনি বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে যা জানিয়েছেন, সেই অনুযায়ী অন্তত ক্লাস টেন অবধি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চান বৈভব। খেলার সঙ্গে পড়াশোনাকেও গুরুত্ব দিতে চান। এরপরও যদি সব দিক মানিয়ে নিতে পারেন, পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন। শুধু আইপিএলেই খেলা নয়। ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব ১৯ দলেরও প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সব কিছু ঠিক থাকলে ভারতের অনূর্ধ্ব ১৯ দলের ইংল্যান্ড সফরেও দেখা যেতে পারে বৈভবকে। আপাতত আইপিএল মরসুম শেষ। বৈভব ফিরছেন পড়াশোনা এবং ক্রিকেট কোচিং সেন্টারেই।