
জোফ্রা আর্চারকে চেনেন? এ আবার কেমন প্রশ্ন! চিনবেনই না কেন? ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে রাজস্থান রয়্যালসে খেলেন ইংল্যান্ডের এই পেসার। তাঁর জন্ম অবশ্য বার্বাডোজে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে জুনিয়র স্তরে খেলেছেনও। জোফ্রার বাবা ইংল্যান্ডের। নাগরিকত্ব পেতে সমস্য়া হয়নি। জোফ্রা আর্চারের ক্রিকেট জার্নি রূপকথার চেয়ে কম নয়। তবে জোফ্রার জুয়েলারি!
গয়নার শখ শুধুমাত্র মহিলাদেরই থাকে তা নয়। শখ সকলেরই থাকে। কারও সাধ থাকলেও সাধ্য থাকে না। জোফ্রার ক্ষেত্রে সাধ এবং সাধ্য দুই-ই রয়েছে। যাই হোক, জোফ্রার প্রসঙ্গে আসা যাক। ইংল্যান্ডের এই পেসারের গলায় সোনার চেন নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন। সেটা শুধুই শখের নয়। এর মধ্যে রয়েছে সাফল্যের রহস্যও। এটা কিন্তু কোনও সংস্কার কিংবা কুসংস্কার নয়। স্রেফ জেদ এবং সাফল্য।
সোনার চেন অনেক আগে থেকেই পড়েন জোফ্রা। অনেক ক্রিকেটারেরই এই শখ রয়েছে। সেটা সোনার চেনের ক্ষেত্রেই নয়। সহজ করে বললে, অনেক ক্রিকেটারই নানা অ্যাকসেসরি ব্য়বহার করে থাকেন। বার্বাডোজ থেকে ইংল্যান্ডে পাড়ি দেওয়ার পর সাসেক্সের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেটে খেলেছেন জোফ্রা। তখনও দেখা গিয়েছে, ভারী চেন গলায় বোলিং করছেন। কিন্তু ২০১৯ সালের অ্যাসেজ সিরিজের পর পরিস্থিতিটা বদলে যায়।
তার আগের পরিস্থিতিটা একটু ছোট্ট করে বলা যাক। ইংল্যান্ডের হয়ে অভিষেক, বিশ্বকাপে খেলা। কিন্তু টেস্ট খেলার সুযোগ না হলে ক্রিকেট কেরিয়ার যেন অসম্পূর্ণ থাকে। আর ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের কাছে টেস্ট অভিষেক যদি হয় অ্যাসেজ সিরিজে! এর চেয়ে গর্বের কিছু নেই। ২০১৯ সালে ঘরের মাঠে ওয়ান ডে বিশ্বকাপ জেতে ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপের পরই ঘরের মাঠে অ্যাসেজ সিরিজ ছিল অস্ট্রেলিয়ার। আর এই সিরিজেই টেস্ট অভিষেক হয় জোফ্রা আর্চারের।
ক্রিকেটারদের নানা স্পন্সর থাকে। জোফ্রারও রয়েছে। প্র্যাগনেল। দামী গয়না, অ্যাকসেরিস যেমন ঘড়ির সংস্থা। সেই সংস্থার তরফেই জোফ্রা আর্চারকে বলা হয়েছিল, অ্যাসেজ সিরিজে তিনি যতগুলি উইকেট নেবেন, তাঁর গোল্ড চেনে রুবি যোগ হবে। অভিষেক ইনিংসে জোড়া উইকেট নেন জোফ্রা। দ্বিতীয় ইনিংসে নেন তিন উইকেট! তাও যে সে উইকেট নয়। দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর ঝুলিতে ডেভিড ওয়ার্নার, উসমান খোয়াজার মতো দামি উইকেটও।
২০১৯ সালের পাঁচ ম্যাচের সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অভিষেক হয় জোফ্রার। অভিষেক টেস্ট মিলিয়ে সিরিজের চার টেস্টে খেলেছিলেন জোফ্রা। আট ইনিংসে নেন ২২টি উইকেট। জোফ্রার এই চেনের সঠিক দাম প্রকাশ্যে আসেনি। তবে প্র্যাগনেলের নেকলেসের দাম ভারতীয় মুদ্রায় এক কোটিরও বেশি। অনুমান করা যায়, জোফ্রার চেন অন্তত দেড় কোটি টাকা তো হবেই। ভাবা যায়! দেড় কোটির চেন গলায় নিয়েই বোলিং করেন! আসলে এই চেন যে তাঁর সাফল্যের খতিয়ানও…! তাই এর কোনও মূল্য হয় না, বলা যায় অমূল্য। আর এই অমূল্য অর্থ কিন্তু মূল্যহীন নয়। সাফল্য কি আর দাম দিয়ে এর বিচার করা যায়?