কলকাতা: ঘরে ফিরতে পারেন, শোনা যাচ্ছিল। ঘর মানে, যে রাজ্য থেকে উত্থান। যে রাজ্য থেকে ভারতীয় দলে খেলা। সেই বাংলাতেই আইপিএল খেলতে দেখা যেত তাঁকে। শুরু থেকে লড়াইয়েও ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। শেষ পর্যন্ত সরেও গেল। গুজরাটকে আইপিএল জেতানো মহম্মদ সামি নতুন সূর্যোদয়ের খোঁজে চলে গেলেন হায়দরাবাদ। ১০ কোটি টাকায় অভিজ্ঞ পেসারকে কিনল সানরাইজার্স। সঞ্জয় মঞ্জরেকরের মতো প্রাক্তন ক্রিকেটার নিলামের আগে মন্তব্য করেছিলেন, এ বার তেমন দর উঠবে না সামির। চোটপ্রবণতার কারণেই টিমগুলো তাঁর প্রতি অনীহা দেখাতে পারে। মঞ্জরেকরের ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হয়নি।
সামির জন্য প্রথম বিড শুরু করেছিল কলকাতা। দ্রুতই প্রবেশ চেন্নাই সুপার কিংসের। ৮ কোটিতে ময়দানে প্রবেশ লখনউ সুপার জায়ান্টসের। ত্রিমুখী লড়াই চলে সামির জন্য। লখনউ আউট হয়ে যায়। কলকাতা কিন্তু থেকে গিয়েছিল লড়াই। তারা দর দেয় ৯.৭৫ কোটি। মহম্মদ সামির জন্য আরটিএম ব্যবহার করতে চায়নি গুজরাট। তখন থেকেই সানরাইজার্স ঢোকে লড়াইয়ে। ১০ কোটিতে দান ছাড়ে কলকাতা। সানরাইজার্স ১০ কোটি দর তোলে সামিকে। গতবার সামির দর ছিল ৬.২৫ কোটি। প্রায় ৪ কোটির মতো দর বেড়েছে তাঁর।
চোট সারিয়ে সামির মাঠে ফেরা কিন্তু গল্পকেও হার মানাবে। ঘরের মাঠে ওয়ান ডে বিশ্বকাপ ফাইনাল হারের পর মহম্মদ সামি ভেঙে পড়েছিলেন। সর্বস্ব দিয়েও ট্রফি জিততে না পারলে হৃদয় ভাঙারই কথা। তার মাঝে বিশ্বকাপের পর থেকেই চোটের কারণে বাইরে। একটা বছর হতাশায় কেটেছিল। এ মরসুমে তাঁকে গুজরাট টাইটান্স রিটেন করেনি।
দেশেরই শুধু নয়, বিশ্বের অন্যতম সেরা পেসার। তিন ফরম্যাটেই সাফল্য পেয়েছেন। বিশ্বকাপের মঞ্চে বরাবর জ্বলে ওঠেন। গত বছর ঘরের মাঠে ওয়ান ডে বিশ্বকাপের পরই চোটের কারণে ছিটকে গিয়েছিলেন। ফলে আইপিএলেও খেলতে পারেননি। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে তাঁর প্রবেশ অনেক আগেই। ঘরোয়া ক্রিকেটে অনবদ্য পারফরম্যান্সের জেরে সেই ২০১১ সালে কলকাতা নাইট রাইডার্স তাঁকে নিয়েছিল। যদিও ম্যাচ খেলার সুযোগ পান ২০১৩ সালের আইপিএলে। মাত্র তিন ম্যাচ খেলেন।
পরের বছরই নতুন দল। সামিকে নেয় দিল্লি ডেয়ারডেভিলস (বর্তমানে দিল্লি ক্যাপিটালস)। ২০১৪-২০১৮ দিল্লির টিমেই ছিলেন সামি। দিল্লির জার্সিতেও সেই অর্থে সুযোগ পাচ্ছিলেন না। ২০১৯ সালের আইপিএলে তাঁকে নেয় পঞ্জাব কিংস। এখান থেকেই আইপিএলে যেন নতুন সামিকে পাওয়া যায়। ২০১৯ সালে ১৪ ম্যাচে ১৯টি, ২০২০ আইপিএলে ১৪ ম্যাচে ২০টি এবং ২০২১-এর আইপিএলে ১৪ ম্যাচে ১৯ উইকেট।
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ২০২২ সালে নতুন দুটি দল যোগ হয়। একটি গুজরাট টাইটান্স। মহম্মদ সামিকে নিয়েছিল টাইটান্স। হার্দিক পান্ডিয়ার নেতৃত্বে অভিষেক মরসুমেই চ্যাম্পিয়ন। ২০২৩ সালে রানার্স। দু-বারই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন মহম্মদ সামি। টাইটান্সের হয়ে পরপর দু-মরসুম ১৬ ও ১৭ ম্যাচে নিয়েছেন যথাক্রমে ২০ ও ২৮ উইকেট। এর বেশির ভাগই পাওয়ার প্লে-তে। যে কারণে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে সামিকে পাওয়ার প্লে স্পেশালিস্টও বলা হয়ে থাকে।