দুবাই: চলতি বছরের শুরুর দিকে লুধিয়ানায় পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন যখন, কথা ছিল দ্রুত ফিরে যাবেন ওমান (Oman)। জাতীয় শিবিরে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু কোভিডের কারণে তা সম্ভব হয়নি। তিনমাস কাটাতে হয়েছিল লুধিয়ানায়। তারপর ‘দেশে’ ফিরেছিলেন জ্যোতিন্দর সিং (Jatinder Singh )। সেই তিনিই কিনা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেমে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছেন, পাপুয়া নিউ গিনির বিরুদ্ধে ৪২ বলে নট আউট ৭৩ রানের ইনিংস খেলে।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ক্রিকেটার ওই ম্যাচেই একটা ক্যাচ ধরে শিখর ধাওয়ানের মতো থাই-ফাইভ দিয়েছিলেন। জ্যোতিন্দর বলছেন, এই বিশ্বকাপে তাঁর পরিবার দুটো দেশকে সমর্থন করবেন। প্রথমটা অবশ্যই জ্যোতিন্দরের ওমান। দ্বিতীয়টা বিরাট কোহলির ভারত।
জ্যোতিন্দর বলেছেন, ‘এটা আমার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপে খেলা যে কোনও টিমের কাছে স্বপ্ন থাকে। আমাদের কাছেও ব্যাপারটা তা-ই। এর জন্য আমি যথেষ্ট পরিশ্রম করেছি। কোভিডের কারণে লুধিয়ানায় আটকে যাওয়ার পর আমি সিপি ক্রিকেট গ্রাউন্ড ও মালওয়া ক্রিকেট ক্লাবে ট্রেনিং করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজের সর্বোচ্চ রান করতে পেরেছি। ওটা আমার কাছে স্পেশাল ছিল বলেই শিখরপাজির স্টাইলে সেলিব্রেট করেছি।’
১৯৭৫ সালে লুধিয়ানা থেকে ওমান চলে যান জ্যোতিন্দর সিংয়ের বাবা গুরমেল সিং। ওমানের রয়্যাল পুলিশ ফোর্সে ছুতোরের কাজ নিয়েছিলেন। স্ত্রী পরমজিৎ কৌর ও তিন ছেলে-মেয়েকে ডেকে নেন ২০০৩ সাল নাগাদ। পরের বছরই ওমানের মাসকটের ক্রিকেট টিম অফ ইন্ডিয়ান স্কুলে যোগ দেন জ্যোতিন্দর। কয়েক বছরের মধ্যে ওমানের অনূর্ধ্ব ১৯ টিমে সুযোগও পেয়ে যান উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। ২০১২ সালে ওমানের হয়ে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয়েছিল জ্যোতিন্দরের।
তিনি বলেছেন, ‘ভারতে থাকাকালীনই আমার ক্রিকেটের প্রতি ঝোঁক ছিল। বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে গলি ক্রিকেট খেললাম। সচিন তেন্ডুলকর, বীরেন্দ্র সহবাগদের ব্যাটিং দেখতে দারুণ লাগত। ওমানে কর্পোরেট ক্রিকেটই বেশি জনপ্রিয়। দেশের হয়ে খেলার জন্য খুব বেশি টাকাও পাওয়া যায় না। যে কারণে চাকরি করতে হয়।’
ওমানের হয়ে সব মিলিয়ে ১৯টা ওয়ান ডে ম্যাচ খেলেছেন। সেই সঙ্গে ২৯টা টি-টোয়েন্টি। ওয়ান ডে-তে ৪৩৪ রান করার পাশাপাশি টি-টোয়েন্টিতে করেছেন ৭৭০ রান। চারটে হাফসেঞ্চুরি সহ। গত মাসেই নেপালের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে ম্যাচে ৬২ বলে ১০৭ রান করেছিলেন তিনি।
জ্যোতিন্দরের কথায়, ‘ওমানের হয়ে যখনই খেলতে নামি, আমার পরিবারকে বলি, দুটো দেশকে এখন সাপোর্ট করো। ওমানের পাশাপাশি ভারতকেও।
আরও পড়ুন: T20 World Cup 2021: শিশির ফ্যাক্টর দেখেই দলের কম্বিনেশন ঠিক করব: শাস্ত্রী