IPL 2021: শাহরুখের কেকেআরকে হারিয়ে প্লে অফের আশা জিইয়ে রাখল প্রীতির পঞ্জাব

ভেঙ্কটেশ আর লোকেশ রাহুলের মধ্যে আজকের ম্যাচে একটা বড়সড় মিল রয়েছে। দু'জনই লড়ে গেছেন দলের জন্য। করেছেনও একই রান (৬৭)। কিন্তু আজ ভাগ্য সাথ দিল না নাইটদের। ফলে কাজে এল না নাইটদের নতুন তারা ভেঙ্কির দুরন্ত ইনিংস।

IPL 2021: শাহরুখের কেকেআরকে হারিয়ে প্লে অফের আশা জিইয়ে রাখল প্রীতির পঞ্জাব
IPL 2021: শাহরুখের কেকেআরকে হারিয়ে প্লে অফের আশা জিইয়ে রাখল প্রীতির পঞ্জাব
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 01, 2021 | 11:56 PM

কলকাতা নাইট রাইডার্স ১৬৫-৭ (২০ ওভারে) পঞ্জাব কিংস ১৬৮-১ (১৯.৩ ওভারে)

দুবাই: প্লে অফে ওঠার জন্য আজকের ম্যাচে দু পয়েন্ট প্রয়োজন ছিল দুই দলেরই। দিল্লিকে গত ম্যাচে বোলিং বিভাগের দাপটের কারণে আটকে দিয়েছিল কেকেআর (KKR)। কিন্তু দুবাইতে আজ পঞ্জাবের (PBKS) বিরুদ্ধে সেটাই পারল না মর্গ্যানের দল। এ বারের আইপিএলে (IPL) পঞ্জাবের জন্য শেষ ওভারের নাটক যেন বরাদ্দ হয়ে গিয়েছে। শুরু থেকে শেষ অবধি থেকে দলকে জেতাতে চেয়েছিলেন লোকেশ রাহুল। কিন্তু শেষ ওভারে ভেঙ্কটেশ আইয়ারের দ্বিতীয় বলে এসে উইকেট দিয়ে বসেন পঞ্জাব অধিনায়ক। দর্শকরা যখন মনে করছে আরও একটা জেতা ম্যাচ তা হলে কি হারতে বসেছে পঞ্জাব? ঠিক সেইসময় শাহরুখ খান উদ্ধার করলেন প্রীতি জিন্টার দলকে।

টসে হেরে আজ শুরুতে ব্যাটিং করতে হয়েছে কেকেআরকে। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট খুইয়ে ১৬৫ রান তোলে নাইটরা। নেপথ্যে ভেঙ্কটেশ আইয়ার-রাহুল ত্রিপাঠী-নীতিশ রানা। ক্যাপ্টেন ইওন মর্গ্যান আজও ব্যাট হাতে চূড়ান্ত ব্যর্থ। অন্যদিকে ভেঙ্কটেশ আইয়ার সত্যিকার অর্থেই কেকেআরের ক্রাইসিস ম্যান হয়ে উঠেছেন। আরব দেশে আইপিএলের দ্বিতীয় পর্বে যে কটা ম্যাচে খেলেছেন তাতে নিজের ছাপ রেখে গিয়েছেন বারবার। আজকের ম্যাচেও তার অন্যথা হল না। পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ৬৭ রানের ঝকঝকে ইনিংস ভেঙ্কটেশ সাজিয়েছিলেন ৯টি চার ও একটি ছয় দিয়ে। নাইটদের ওপেনিং জুটি আজ সেভাবে দলের হয়ে ভিত গড়তে পারেনি। অর্শদীপের হাতে বল তুলে দিয়ে লোকেশ রাহুলরা পেয়ে যান গিলের (৭) উইকেট। তারপর ক্রিজে আসেন রাহুল ত্রিপাঠী। তাঁর সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন ভেঙ্কি। সেই জুটিকে ভাঙতে বোলিংয়ে পরিবর্তন আনেন পঞ্জাব অধিনায়ক। দলকে দ্বিতীয় উইকেট এনে দেন রবি বিষ্ণোই। ৩৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন রাহুল ত্রিপাঠী। তিনি ফেরার পর নীতিশ রানার সঙ্গে পার্টনারশিপ গড়া শুরু করেন ভেঙ্কটেশ। ফর্মে থাকা ভেঙ্কটেশের উইকেট তুলে নেন রবি বিষ্ণোই। ব্যাট হাতে মরুশহরের আইপিএলে ব্যর্থতাই সঙ্গী ইওন মর্গ্যানের। আজ মাত্র ২ রান করে মহম্মদ শামির বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। তারপর রানা নাইটদের রান বাড়ানোর দায়িত্ব নেন। কিন্তু সেখানেও কেকেআরকে ধাক্কা দেয় পঞ্জাবের তরুণ বোলার অর্শদীপ সিং। ৩১ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন রানা। তারপর মাঠে নামেন টিম সেইফার্ট। অভিষেক ম্যাচে ব্যাট হাতে নজর কাড়তে এক্কেবারে ব্যর্থ সেইফার্ট। ২ রান করে রান আউট হন তিনি। আজ দলকে বেশি রান এনে দিতে পারেননি দীনেশ কার্তিকও। ১১ রান করে অর্শদীপকে উইকেট দিয়ে মাঠ ছাড়েন নাইটদের প্রাক্তন অধিনায়ক।

১৬৬ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতে কোনও তাড়াহুড়ো করেনি পঞ্জাবের ওপেনিং জুটি। শুরু থেকেই ফর্মে ছিলেন লোকেশ রাহুল ও মায়াঙ্ক আগরওয়াল। একটা সময় এমন এসে দাঁড়ায় যেখানে উইকেট হাতড়াতে থাকে নাইট বোলিং বিভাগ। স্কোরবোর্ডে ৭০ রান তুলে আউট হন ছন্দে থাকা মায়াঙ্ক। ২৭ বলে ৪০ রানের দুরন্ত ইনিংস মায়াঙ্ক সাজিয়েছিলেন ৩টি চার ও ৩টি ছয় দিয়ে। উইকেটের সন্ধানে থাকা নাইটদের স্বস্তি এনে দেন বিস্ময় স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী। নিকোলাস পুরান এ বারের আইপিএলে সেভাবে ছন্দে নেই। আজও দলের জন্য খুব একটা অবদান রেখে যেতে পারলেন না। ১২ রান করেই বরুণের শিকার হন তিনি। তবে পঞ্জাব অধিনায়ক এক্কেবারেই তাড়াহুড়ো করেননি। নাইটদের বিরুদ্ধে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে যেতে নিজের হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করে ফেলেন লোকেশ রাহুল। এইডেন মার্করাম ১৮ রান করে সুনীল নারিনের শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন। দীপক হুডা লোকেশ রাহুলের সঙ্গে শেষ অবধি থাকতে পারতেন। কিন্তু তার সুযোগ দেননি শিবম মাভি। ৩ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন হুডা। শাহরুখ খানের সঙ্গে শেষ অবধি জুটি বেঁধে দলকে জেতাতে চেয়েছিলেন কেএল রাহুল। তবে তার সৌভাগ্য হল না। ১৯.২ ওভারে উইকেট ছুড়ে দিয়ে মাঠ ছাড়েন পঞ্জাবের নেতা। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ৬৭ রান। তবে ম্যাচের নায়ক বনে গিয়েছেন শাহরুখ খান। ৮ বলে ২২ রান করেছেন তিনি। কিন্তু ৩ বল বাকি থাকতে তিনি ভেঙ্কটেশ আইয়ারের বলে (১৯.৩ ওভারে) ছয় মেরে দলকে জিতিয়েছেন।

ভেঙ্কটেশ আর লোকেশ রাহুলের মধ্যে আজকের ম্যাচে একটা বড়সড় মিল রয়েছে। দু’জনই লড়ে গেছেন দলের জন্য। করেছেনও একই রান (৬৭)। কিন্তু আজ ভাগ্য সাথ দিল না নাইটদের। ফলে কাজে এল না নাইটদের নতুন তারা ভেঙ্কির দুরন্ত ইনিংস। প্লে অফে যাওয়ার জন্য কেকেআরকে পরের বাকি দুটো ম্যাচেই জিততে হবে। সঙ্গে লক্ষ্য রাখতে হবে নেট রান রেটের দিকেও। আরব দেশে ভেঙ্কটেশ আইয়ারের উত্থান হলেও ইওন মর্গ্যান এক্কেবারেই ফর্মে নেই। প্লে অফে জেতে হলে নাইটদের বোলিং-ব্যাটিং দুই বিভাগকেই আরও পোক্ত হতে হবে।