
প্রোটিয়া কাঁটা উপড়ে ফেলতে পারলেই বিশ্বকাপের অধরা মাধুরী লাভ হবে ভারতের মেয়েদের। অস্ট্রেলিয়াকে মেয়েদের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হারিয়ে মহারণের মেগা ম্যাচের টিকিট পেয়েছে হরমনপ্রীত কৌরের ভারত। তাই এ বার স্মৃতি-জেমিদের কাছে কাপ আর ঠোঁটের দূরত্ব একটা মাত্র ম্যাচ। তবে এর জন্য ভারতের (India Women’s Cricket Team) সামনে রয়েছে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকা (South Africa Women’s Cricket Team) যথেষ্ট শক্তিশালী এক দল। চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রোটিয়াদের দুর্বলতা, শক্তি আর কোন ক্রিকেটার ভারতের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বড় ভরসা তাদের ওপেনিং জুটি লরা উলভার্ট (Laura Wolvaardt) ও তাজমিন ব্রিটস (Tazmin Brits)। এই দু’জনই ধারাবাহিকভাবে ভাল পারফর্ম করছেন। বিশেষ করে ক্যাপ্টেন ও ওপেনার লরা সেমিফাইনালে ১৬৯ রানের এক অনবদ্য ইনিংস খেলেছেন।
প্রোটিয়া টিমের অন্যতম অলরাউন্ডার মারিজানে ক্যাপ, সুনে লুস ও নাডিন ডি ক্লার্ক। তাঁরা ব্যাটে ও বলে দুই বিভাগেই অবদান রাখছেন। তাঁদের জন্যই দলটিতে যথেষ্ট ভারসাম্য রয়েছে। প্রোটিয়াদের সবচেয়ে বড় শক্তি হল দলের আত্মবিশ্বাস। আগের টুর্নামেন্টগুলোয় ব্যর্থ হলেও এ বার তাঁরা নিজেদের সেরাটা তুলে ধরে ফাইনালে এসেছে।
প্রোটিয়াদের সবচেয়ে বড় সমস্যা স্পিন বোলিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যাটিং। এশিয়ার পিচে বল ঘোরে বেশি, আর সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা মাঝে মাঝে সমস্যায় পড়েন। এছাড়া ওপেনাররা ভাল শুরু করলেও, মাঝের ব্যাটাররা অনেক সময় ইনিংস ধরে রাখতে পারেন না। চাপের ম্যাচে মাঝেমাঝি সময়ে উইকেট পড়ে যাওয়াটা তাঁদের জন্য বিপদের হতে পারে। এ বার দেখার ফাইনালের মতো বড় মঞ্চে মানসিক শক্তি কতটা সঙ্গ দেয় প্রোটিয়াদের।
লরা উলভার্ট দলের সেরা ব্যাটার। শান্ত মাথায় ইনিংস গড়তে পারেন এবং বড় রান করতে জানেন। তিনি চলতি ওডিআই বিশ্বকাপে ৮ ইনিংসে ৪৭০ রান করেছেন। তাঁর গড় ৬৪.১৪। টুর্নামেন্টের সর্বাধিক রানও (এক ইনিংসে) লরার। যা এসেছিল সেমিফাইনালে। অন্যদিকে মারিজানে ক্যাপ ব্যাট ও বল দুই দিকেই দলের তুরুপের তাস। তাঁর আগ্রাসী বোলিং ভারতের ওপেনিং ব্যাটারদের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে।
ভারতের বোলারদের নজর রাখতে হবে উলভার্ট ও ব্রিটস জুটির দিকে। যদি এই দুই ওপেনারকে দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়া যায়, তা হলে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংয়ে ভাঙন ধরবে। এছাড়া অলরাউন্ডার ক্যাপ, সুনে লুস ও নাডিন ডি ক্লার্ক ভারতের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক। এঁরাই হঠাৎ ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন। ভারতের স্পিনাররা যদি শুরু থেকেই ঘূর্ণি দিয়ে চাপ সৃষ্টি করতে পারেন, তবে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা সমস্যায় পড়বেন। আর এটাই ভারতের বড় সুযোগ।
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা এ বার আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। ওদের ওপেনিং, অলরাউন্ড পারফরম্যান্স এবং লড়াইয়ের মনোভাবই ফাইনালে সবচেয়ে বড় শক্তি। তবে স্পিনের বিপরীতে দুর্বলতা ও চাপের মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিজ্ঞতা তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে। ভারত যদি এই জায়গাগুলোয় পরিকল্পনা করে খেলে, তা হলে ট্রফি জেতা সম্ভব। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার এই দলকে হালকা ভাবে নেওয়া যাবে না। এমনটাই বলছে ক্রিকেটমহল।