কলকাতা: নিজের দল বলে কিছু হয় আইপিএলে? কারও কারও ক্ষেত্রে হয় তো বটেই! মহেন্দ্র সিং ধোনি, বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাদের ক্ষেত্রে চেন্নাই-বেঙ্গালুরু-মুম্বই নিজেরই টিম। ঘরে ফেরার হাতছানি ছিল তাঁর কাছেও। পরিস্থিতি এগোচ্ছিল সে দিকেই। দর আকাশ ছুঁতেই, সরে দাঁড়াল ব়য়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। আরসিবিতে ফেরা হল না যুজবেন্দ্র চাহালের। একই ভাবে রাজস্থানেও থাকা হল না তাঁর। পুরনো দল আগেই ছেড়ে দিয়েছিল তাঁকে। আইপিএলের সেরা স্পিনারের ঠিকানা এ বার পঞ্জাব কিংস। আইপিএলের দুনিয়ায় সবচেয়ে দামি স্পিনারের নাম রশিদ খান। তাঁর বন্ধনীতেই ঢুকে পড়লেন চাহাল। পঞ্জাব ১৮ কোটিতে চাহালকে তুলে নিল।
চেন্নাই সুপার কিংস বিড শুরু করেছিল চাহালের জন্য। রশিদ খান থাকা সত্ত্বেও ময়দানে নামে গুজরাট টাইটান্সও। ৫.৭৫ কোটি দর তোলে গুজরাট। চেন্নাই আসরে থাকতেই লড়াইয়ে প্রবেশ পঞ্জাব কিংসের। গুজরাট ও পঞ্জাবের মধ্যে লড়াই চলে। ৬.৭৫ কোটি দর দেয় পঞ্জাব। মাঝে ঢোকে লখনউ সুপার জায়ান্টস। ১০ কোটি পার। ১১.২৫ কোটি দর তোলে লখনউ। সেখান থেকে ১৪ কোটি দর ওঠে চাহালের। ঠিক এখানেই প্রবেশ আরসিবির। ১৪.২৫ দর দেয় আরসিবি। মনে হয়েছিল চাহালকে পেতে মরিয়া তার পুরনো দল। তারা সরে যায়। সানরাইজার্স লড়াইয়ে ঢুকে ১৪.৭৫ কোটি দর দেয়। পঞ্জাব ১৮ কোটিতে দর দেয়। সানরাইজার্স দান ছেড়ে দেয়। ১৮ কোটিতে পঞ্জাব কিংস নিল যুজবেন্দ্র চাহালকে।
মেগা অকশন হওয়ায় প্রতিটি দলেই যে বড় রদবদল হবে এমনটাই প্রত্যাশিত ছিল। রাজস্থান রয়্যালসও এ বার রিটেন করতে পারেনি যুজবেন্দ্র চাহালকে। অকশনে রেজিস্টার করেন ভারতের এই তারকা লেগ স্পিনার। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে তিন ফ্র্যাঞ্চাইজি মিলিয়ে একযুগ কাটিয়ে দিয়েছেন।
একটা সময় অবধি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে সবচেয়ে বেশি উইকেটের রেকর্ড ছিল ডোয়েন ব্র্যাভোর। সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন ভারতের লেগ স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল। আইপিএলে প্রথম বোলার হিসেব ডাবল সেঞ্চুরিও পেরিয়েছেন। কিন্তু এ বার তাঁকে রাজস্থান রয়্যালস রিটেন করতে পারেনি। ১০টি ফ্র্যাঞ্চাইজির মধ্যে রাজস্থান এবং কলকাতাই ছ’জন প্লেয়ার রিটেন করেছিল। পরে রাজস্থান রয়্যালসের কোচ রাহুল দ্রাবিড় বলেছিলেন, সুযোগ থাকলে তিনি সকলকেই রিটেন করতেন।
শুধু যে রাজস্থান রয়্যালসেই খেলেছেন তা নয়। একটা সময় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর প্রাইম বোলার ছিলেন যুজবেন্দ্র চাহাল। যদিও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে যাত্রা শুরু মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে। সেখানে তিন বছর থাকলেও খেলার সুযোগ হয়েছে মাত্র ১ ম্যাচ। আইপিএলে তাঁর কাছে ব্রেক থ্রু বলা যায় ২০১৪ সাল। ‘আনক্যাপড’ চাহালকে মাত্র ১০ লক্ষ টাকায় নিয়েছিল আরসিবি। সেই সুযোগটাই তাঁর কেরিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট। শুরুটা ১০ লক্ষ হলেও আরসিবিতে তাঁর দর দাঁড়িয়েছিল ৬ কোটি। সাত বছর এই ফ্র্যাঞ্চাইজিতেই ছিলেন। ২০২২ সালে তাঁকে নেয় রাজস্থান রয়্যালস। সাড়ে ছ’কোটি টাকায় তাঁকে নিয়েছিল রয়্যালস।
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে সব মিলিয়ে ১৬০ ম্যাচে ২০৫ উইকেট নিয়েছেন যুজবেন্দ্র চাহাল। ইকোনমি মাত্র ৭.৮৪। ফাইফার নিয়েছেন একবার। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৮-এর নিচে ইকোনমি, যে কোনও বোলারের অনবদ্য দক্ষতাই প্রমাণ করে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেও ভারতের অন্যতম সফল বোলার। ৮০ ম্যাচে ৯৬ উইকেট নিয়েছেন।