এটিকে মোহনবাগান-১ : চেন্নাইয়িন এফসি-১
(লিস্টন ১৮) (কোমান ৪৫)
মারগাও: স্বস্তি এল। কিন্তু অস্বস্তি কমল না আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের! পর পর দুটো ম্যাচ হারের পর গত বারের আইএসএল রানার্সদের ডিফেন্স নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। তিরি ফিরতে চাপ কমল সবুজ-মেরুনের। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন তিনি। কিন্তু গোল খাওয়া হয়তো কিছুটা কমাতে পারলেন স্প্যানিশ কোচ, কিন্তু সেরা দুই ফরোয়ার্ডের পায়ে গোল কোথায়? রয় কৃষ্ণা আর হুগো বোমাস জুটি এই আইএসএলের অন্যতম ভয়ঙ্কর, কোনও সন্দেহ নেই। মরসুমের প্রথম ম্যাচ থেকে ছন্দেও ছিলেন দু’জন। কিন্তু গত তিন ম্যাচে একেবারেই ছন্দে নেই বোমাস। কৃষ্ণার ঝলক দেখা গেল না, সাপোর্ট না পাওয়ায়। কোনও টিমের ফরোয়ার্ড লাইন যদি নির্বিষ হয়, তা হলে ম্যাচ জেতা যায় না। হাবাস নিজেও বোধহয় জানতেন, দু’ম্যাচে হারের ধাক্কা থেকে টিমের আত্মবিশ্বাস ফেরাতে একটা পয়েন্ট অনেক সময় কার্যকরী ভূমিকা নেয়। বিশেষ করে আইএসএলের মতো ম্যারাথন লিগে।
এখনও আইএসএলে একটাও ম্যাচ হারেনি চেন্নাইয়িন এফসি। তার উপর দুরন্ত ভারসাম্য ভ্লাদিমির কোমান, অনিরুদ্ধ থাপাদের টিমের। মাঝমাঠের সঙ্গে ডিফেন্সের বোঝাপড়াও চমৎকার। বোজিদার বান্দোভিচের টিমের বিরুদ্ধে তাই পয়েন্ট খোয়াতে চাননি হাবাস। শেষ পর্যন্ত ১-১ ড্র করে একটা পয়েন্টও তুলে নিল বাগান। পাঁচ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের ছয়ে থেকে গেলেন কৃষ্ণারা। ৪ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে তিনে উঠে এল চেন্নাই।
দুরন্ত দুটো জয় দিয়ে আইএসএল শুরু করা বাগান পর পর দুটো হারের ধাক্কা কী ভাবে সামলে ওঠে, সেটা দেখার অপেক্ষাতেই ছিলেন সমর্থকরা। টিম হারুক বা জিতুক, টিমে খুব বেশি বদল করেন না হাবাস। এই ম্যাচেও তিরি ছাড়া আর কোনও বদল ছিল না। ডার্বি ম্যাচ জেতার পর থেকে বাগানের রক্ষণ নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। কার্ল ম্যাকহিউ, প্রীতম কোটাল, শুভাশিস বসুরা বিপক্ষ স্ট্রাইকারদের সামলাতে পারছিলেন না। এতে তিতির মতো স্টপারের চোট, তার উপর হাবাসের হাতে ভালো বিকল্প ছিল না। যে কারণে শেষ দুটো ম্যাচে হারতে হয়েছে বাগানকে। শুধু তাই নয়, সবুজ-মেরুন ডিফেন্স ভেঙে বড় ব্যবধানে জিতেছে বিপক্ষ টিম। কিন্তু তিরি ফিরতেই পাল্টে গেল এটিকে-মোহনবাগান। কোমানদের চমৎকার সামলে দিলেন তিনি।
FULL-TIME | #ATKMBCFC
A closely fought contest ends in a draw as @ChennaiyinFC extend their unbeaten run in the #HeroISL ?#LetsFootball pic.twitter.com/XwD1QDKpsk
— Indian Super League (@IndSuperLeague) December 11, 2021
চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে এই ম্যাচে জিততে পারত এটিকে মোহনবাগান। ১৮ মিনিটে এগিয়েও গিয়েছিল তারা। মাঝমাঠ থেকে রয় কৃষ্ণার দুরন্ত থ্রুটাই চেন্নাইয়িনের ডিফেন্স ভেঙে দেয়। লিস্টন কোলাসো চমৎকার শটে এগিয়ে ১-০ দেন টিমকে। এই মরসুমে ৩টে গোল করার পাশাপাশি ১টা অ্যাসিস্টও করেছেন লিসটন। যত সময় গড়াচ্ছে, ততই যেন ভরসার মুখ হয়ে উঠছেন তিনি।
বান্দোভিচের চেন্নাইয়ে অভিজ্ঞতার ছড়াছড়ি। বিশেষ করে মাঝমাঠে। বাগানের আক্রমণ সামলে এত দ্রুত কাউন্টার অ্যাটাকে আসছিল যে, চাপে পড়ে যাচ্ছিলেন জনি কাউকোরা। প্রথমার্ধের শেষ দিকে পাল্টা আক্রমণে এসেই ১-১ করে ফেলে মিডফিল্ডার ভ্লাদিমির কোমান। মোহনবাগান ডিফেন্স একটাই ভুল করল। আর তারই খেসারত দিতে হল টিমকে। বিরতির ওপারে অবশ্য সবুজ-মেরুন বেশ কয়েকবার গোলের সুযোগ পেয়েছিল ঠিকই, তবে তা কাজে লাগাতে পারেননি কৃষ্ণা, বোমাসরা।
A sublime pass from @RoyKrishna21 to @colaco_liston whose clean finish makes it 1-0! ?#ATKMBCFC #HeroISL #LetsFootball @atkmohunbaganfc pic.twitter.com/ziSZsewncB
— Indian Super League (@IndSuperLeague) December 11, 2021
এক পয়েন্টের লক্ষ্য যে ছিল হাবাসে, তা পরিষ্কার। কিন্তু ছন্দে না থাকা বোমাসকে আশি মিনিট কেন টানলেন মাঠে, বোঝা গেল না। বিরতির পরেই ডেভিড উইলিয়ামসকে নামিয়ে ম্যাচ জেতার চেষ্টা করলেন না!
মোহনবাগান: অমরিন্দর, আশুতোষ, প্রীতম, তিরি, শুভাশিস, মনবীর, দীপক (লেনি ৮৫), জনি, লিস্টন (সুসাইরাজ ৮২), কৃষ্ণা, বোমাস (উইলিয়ামস ৮৯)।
আরও পড়ুন: Maradona: দুবাইয়ে চুরি যাওয়া মারাদোনার ঘড়ি মিলল অসমে