Calcutta Football League: দু’দিন আগে হারিয়েছেন মাকে, কাছা পরে মাঠে, ম্যাচ জিতিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন অর্ণব

East Bengal vs Patha Chakra: অর্ণবের গল্প এক অন্য জীবনযুদ্ধের লড়াই। এ লড়াইয়ে হার মানতে চায় না সে। ফুটবল মাঠকেই সে লড়াইয়ের ময়দান হিসেবে বেছে নিয়েছে। পাঠচক্রের হয়ে এবারে লিগের চারটে ম্যাচ খেলে ফেলা অর্ণব একটা গোলও হজম করেননি।

Calcutta Football League: দুদিন আগে হারিয়েছেন মাকে, কাছা পরে মাঠে, ম্যাচ জিতিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন অর্ণব
Image Credit source: OWN Arrangement

| Edited By: দীপঙ্কর ঘোষাল

Jul 15, 2025 | 11:56 PM

কলকাতা: বছর চারেক আগে পিয়ারলেসের আকাশ মুখোপাধ্যায়কে মনে পড়ে? বাবার মৃতদেহ বাড়িতে রেখে কলকাতা লিগের ম্যাচ খেলতে ইস্টবেঙ্গল মাঠে এসেছিলেন। পিয়ারলেসের কর্তারাও সেদিন অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। দলের প্রতি দায়বদ্ধতা। টালিগঞ্জ অগ্রগামীর বিরুদ্ধে সেদিন শেষ মিনিট পর্যন্ত মাঠে লড়াই জারি রেখেছিলেন আকাশ। খেলতে গিয়ে কপালও ফেটেছিল। মাথায় ব্যান্ডেজ পরেই বাকি সময়টা খেলেছিলেন। বাড়ি ফিরে বাবার সৎকার করেছিলেন। তারও দেড় দশক আগে মোহনবাগানে খেলার সময় বাসুদেব মণ্ডলের বাবা মারা যান। ধরাকাছা খুলে মাঠে খেলতে নেমে গিয়েছিলেন। পাঠচক্রের গোলকিপার অর্ণব দাসও দেখালেন দায়বদ্ধতা কাকে বলে।

রবিবার অর্ণবের মা প্রয়াত হন। আবেগকে দূরে সরিয়ে পরদিনই অনুশীলনে নেমে পড়েন। রবিবার রাতেই মায়ের সৎকারের পর কোচকে ফোনে বলে দেন, তিনি মাঠে আসছেন সোমবার। দলের সঙ্গে অনুশীলন করবেন। চার বছর আগে অর্ণবের বাবা মারা যান। বাবার মৃত্যু শোক ভুলতে পারেননি মা। চার বছরের মধ্যেই ২২ বছরের তরুণ গোলকিপার অনাথ হয়ে গেলেন। তবে সেই শোককে দূরে সরিয়ে রেখে মাঠে নামতে দ্বিধা করেননি শিমুরালির ছেলে। কান্না চেপে রেখেই মঙ্গলবার ব্যারাকপুরে লিগের ম্যাচে খেলতে নামেন অর্ণব। প্রতিপক্ষ ইস্টবেঙ্গল। শেষ মিনিট পর্যন্ত পাঠচক্রের দুর্গ আগলে রাখলেন তিনি। ম্যাচ শেষে কান্নায় ভেঙে পড়লেন অর্ণব। ১-০ গোলে জিতল পাঠচক্র।

অর্ণবের গল্প এক অন্য জীবনযুদ্ধের লড়াই। এ লড়াইয়ে হার মানতে চায় না সে। ফুটবল মাঠকেই সে লড়াইয়ের ময়দান হিসেবে বেছে নিয়েছে। পাঠচক্রের হয়ে এবারে লিগের চারটে ম্যাচ খেলে ফেলা অর্ণব একটা গোলও হজম করেননি। বড় ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন লেগে আছে মায়াভরা ওই দুটো চোখে। ইউনাইটেড কর্তা নবাব ভট্টাচার্য বললেন, ‘ভবিষ্যতে ও বড় দলের জার্সি না পাওয়া পর্যন্ত আমরা ওকে রেখে দেব।’ ম্যাচ শেষে ধরাকাছা পরেই বাড়ি ফিরলেন অর্ণব।

অশৌচ চলছে অর্ণবের। খেলার পরে তাঁর খাবার এখন সাবু আর ফল। মাঠে নামার আগে খেয়েছিলেন শুধু সাবু। ইস্টবেঙ্গলকে হারানোর পর পাঠচক্রের কর্তা পুরো দলকে ব্যারাকপুরের এক নামী হোটেলে বিরিয়ানি খেতে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান। অর্ণবের সতীর্থরা তা ফিরিয়ে সেই কর্তাকে অনুরোধ করলেন, ওই টাকা অর্ণবের মায়ের কাজের জন্য দেওয়া হোক। দিনের শেষে এটাই ফুটবলের বড় জয়।