ISL 2021-22: মারিওর ভাগ্য, মহেশের জোড়ায় অবশেষে প্রথম জয় লাল-হলুদের

টানা ১৫ ম্যাচ পর জয়ের সরণিতে ফিরল এসসি ইস্টবেঙ্গল। ৪৯ সপ্তাহ ৩দিন পর ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ল লাল-হলুদ। একটা জয়েই টেবিলের লাস্ট পজিশন থেকে এক ধাপ উপরে উঠল এসসি ইস্টবেঙ্গল।

ISL 2021-22: মারিওর ভাগ্য, মহেশের জোড়ায় অবশেষে প্রথম জয় লাল-হলুদের
ISL 2021-22: মারিওর ভাগ্য, মহেশের জোড়ায় অবশেষে প্রথম জয় লাল-হলুদের (ছবি-এসসি ইস্টবেঙ্গল টুইটার)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 19, 2022 | 9:55 PM

কৌস্তভ গঙ্গোপাধ্যায়

এসসি ইস্টবেঙ্গল ২ : এফসি গোয়া ১ (মহেশ ৯, ৪২) (আলবার্তো ৩৭)

ম্যাচ জিততে গেলে কখনও কখনও ভাগ্যের প্রয়োজন। মারিও রিভেরা স্পেন থেকে বোধহয় লাল-হলুদের জন্য ভাগ্যকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন। চলতি আইএসএলে ১১ ম্যাচ জয়হীন থাকার পর অবশেষে জয়ে ফিরল মশাল ব্রিগেড। মারিও রিভেরার হাত ধরে। ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০। মারিও রিভেরা কোচ হয়ে এসেই ইস্টবেঙ্গলকে আই লিগের ম্যাচে জিতিয়েছিলেন। ইন্ডিয়ান অ্যারোজকে ১-০ হারায় লাল-হলুদ। আলেজান্দ্রো দলকে ডুবিয়ে মাঝপথে দায়িত্ব ছেড়েছিলেন। মারিওর কোচিংয়ে সেবার বাকি ম্যাচ আর হারেনি ইস্টবেঙ্গল। এ বারও স্পেন থেকে হয়তো ভালো সময়কে নিয়ে এসেছেন তিনি। তবে ভাগ্যের সঙ্গেও দরকার ভালো ফুটবল। নাওরেম মহেশ সিং যেটা করে দেখালেন। অনেক দিন বাদে ভারতীয় ফুটবলারের জোড়া গোলে ম্যাচ জিতল লাল-হলুদ। রেনেডি সিং দলের খেলার ধরণ পাল্টে দিয়েছিলেন। দেখিয়ে দিয়েছিলেন কি ভাবে শেপ ধরে রেখে খেলতে হয়। মানোলো দিয়াজের অগোছালো এসসি ইস্টবেঙ্গলকে গুছিয়ে দিয়ে গিয়েছেন। সেই মডেল ফলো করেই মাঠে দাপিয়ে বেড়ালেন অঙ্কিত, মহেশরা।

এ দিন দলগঠনেই হিমসিম খেতে হয়েছে লাল-হলুদকে। চোট আর কোভিডে মিনি হাসপাতাল এসসি ইস্টবেঙ্গল। লাইনআপে তিন গোলকিপার। মাঠে অরিন্দম আর সাবস্টিটিউটে বাকি ২ গোলকিপার। গতকালই করোনা সংক্রমিতের সংস্পর্শে আসায় লাল-হলুদের ২ ফুটবলারকে আইসোলেশনে থাকার নির্দেশ দেয় এফএসডিএল। কিন্তু রাতেই সিদ্ধান্ত বদল। রেজাল্ট নেগেটিভ আসলে তাঁদের স্কোয়াডে রাখতে পারবে টিম, জানিয়ে দেয় এফএসডিএল। আরও ১ ফুটবলার ক্লোজ কনট্যাক্ট থাকায় তাঁকেও রাখা হয় স্কোয়াডে।

অরিন্দম ভট্টাচার্য নেতৃত্ব ছেড়েছেন। টমিস্লাভ মার্সেলা চোটে কাবু। তাই আর্মব্যান্ড পরে দলকে নেতৃত্ব দিলেন মহম্মদ রফিক। খেলার শুরুতেই এফসি গোয়ার মিস পাসের ফায়দা তোলে এসসি ইস্টবেঙ্গলের। ৯ মিনিটে গোয়ার রক্ষণের মিস পাস থেকে বল ধরেই বাঁ-পায়ের দুরন্ত প্লেসিংয়ে গোল করে লাল-হলুদকে এগিয়ে দেন নাওরেম মহেশ সিং (১-০)। গোল হজমের পর আক্রমণ শানাতে থাকে এফসি গোয়া। বেশ কয়েকবার লাল-হলুদ বক্সে হানা দিয়ে ৩৭ মিনিটে সুফল পায় গোয়া। আদিল খানের ভুলে ফাঁকায় বল পেয়ে যান আলবার্তো। সেখান থেকেই বাঁ-পায়ের শটে অরিন্দমকে পরাস্ত করেন আলবার্তো (১-১)। তবে ৩ মিনিট বাদেই ফের গোল লাল-হলুদের। এবারও স্কোরার সেই নাওরেম মহেশ সিং। এফসি গোয়ার মিস পাস ফলো করেই দুরন্ত গোল মহেশের (২-১)। ক্রস পিসে লেগে বল গোললাইনের ভেতরে পড়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। রেফারির চোখ অবশ্য এড়ায়নি এক্ষেত্রে।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মহম্মদ রফিকের পরিবর্তে রাজু গায়কোয়াড়কে নামান মারিও। রফিক উঠে যাওয়ায় আর্মব্যান্ড পরে লাল-হলুদকে নেতৃত্ব দেন আদিল খান। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতেই প্রথম থেকে আক্রমণের চাপ বাড়াল এফসি গোয়া। একের পর এক আক্রমণের ঢেউ আছড়ে পড়ল লাল-হলুদ বক্সে। এক ঝটকায় বেশ কয়েকটা কর্নার আদায় করলেন আলবার্তো-এদু বেদিয়ারা। দ্বিতীয়ার্ধ জুড়ে আক্রমণ শানিয়ে গেল গোয়া। আর দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে মূল্যবান ৩ পয়েন্ট ছিনিয়ে আনলেন আদিল, অঙ্কিত, রাজুরা।

টানা ১৫ ম্যাচ পর জয়ের সরণিতে ফিরল এসসি ইস্টবেঙ্গল। ৪৯ সপ্তাহ ৩দিন পর ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ল লাল-হলুদ। একটা জয়েই টেবিলের লাস্ট পজিশন থেকে এক ধাপ উপরে উঠল এসসি ইস্টবেঙ্গল।

এসসি ইস্টবেঙ্গল: অরিন্দম, অঙ্কিত, ফ্রাঞ্জো, আদিল, অমরজিত্‍, সিডুল, সৌরভ, আঙ্গুসানা, রফিক (রাজু), নাওরেম মহেশ (বলবন্ত), হাওকিপ (জ্যাকিচাঁদ)।