Ram Baboo: ওয়েটার থেকে এশিয়ান গেমসে পদক, রাম বাবুর কাহিনি শুনলে চোখে জল আসবে

Asian Games 2023: আজ বুধবার ছিল এশিয়ান গেমসের ১১তম দিন। সকাল সকাল ভারতের ৩৫ কিমি হাঁটা মিক্সড টিমের দুই সদস্য রাম বাবু ও মঞ্জু রানি দেশকে ব্রোঞ্জ এনে দিয়েছেন। কঠিন পথ পেরিয়ে বিশ্বমঞ্চে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পথে এগিয়ে চলেছেন রাম বাবু।

Ram Baboo: ওয়েটার থেকে এশিয়ান গেমসে পদক, রাম বাবুর কাহিনি শুনলে চোখে জল আসবে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 05, 2023 | 12:12 AM

হানঝাউ: ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখতে নেই… অনেককেই এ কথা শুনতে হয়। তারপর একদিন সাফল্য ধরা দিলে… বাধনভাঙা খুশি ছাড়া আর কিছু হয় না। এক সময় রাস্তায় কাটত দিন, জীবন যাপনের জন্য ওয়েটারের চাকরিও করেছেন উত্তরপ্রদেশের সোনভদ্রের বহুরা গ্রামের রাম বাবু। কিন্তু কখনও নিজের লক্ষ্য থেকে সরে যাননি রাম বাবু। ২০১৮ সালে রামবাবু বাড়ি ছেড়েছিলেন নিজের স্বপ্নপূরণের জন্য। কাঁটায় ভরা পথ পেরিয়ে সেই রাম বাবু এখন বিশ্বমঞ্চে ভারতের নাম উজ্জ্বল করছেন। হানঝাউ গেমসে (Asian Games 2023) ৩৫ কিমি হাঁটা মিক্সড টিমের সদস্য ছিলেন রাম বাবু। মঞ্জু রানির সঙ্গে জুটিতে ব্রোঞ্জ পেয়েছেন তিনি। TV9Bangla Sports এর এই প্রতিবেদনে জেনে নিন রাম বাবুর (Ram Baboo) জীবনের দুঃখের কাহিনি।

বরাবর লং ডিসট্যান্স রানার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন রাম বাবু। যে কারণে বছর পাঁচেক আগে বাড়িও ছাড়েন। কিন্তু হাতে অর্থ ছিল না। বারাণসীতে পৌঁছে যান তিনি। সেখানে কাছাকাছি অ্যাথলেটিক্স স্টেডিয়াম ছিল। অনুশীলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য এবং থাকা ও খাওয়ার জন্য অর্থের প্রয়োজন ছিল রাম বাবুর। সেই সময় ওয়েটারের কাজ করা শুরু করেন তিনি। তাঁর স্বপ্ন তাতে দমেনি। ওয়েটারের কাজ করার সময় রাম বাবুকে অনেক অপমান সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু দু’টো পয়সার জন্য মুখ বুজে তিনি সব সহ্য করে নিতেন। অনেক সময় রাস্তায় রাতও কাটাতে হয়েছে রাম বাবুকে।

কষ্টের দিনগুলোর কথা মনে করে রাম বাবু বলেন, ‘অনেকের অনেক অপমান সহ্য করেছি। খুব কষ্ট হত অপমান হজম করতে। অনেক সময় আমি মাঝরাত অবধি কাজ করতাম। রবিবারও কাজ করতাম। ভোর ৪টে থেকে সকাল ৮টা অবধি তারপর অনুশীলন করতাম। ফের কাজ করতে যেতাম। যে অল্প টাকা পেতাম, তাতে পেট চলত না। সঠিক ট্রেনিং করতে পারতাম না। মাঝে মাঝে চোট পেলে তার চিকিৎসাও করাতে পারতাম না। তবে সব কিছুর থেকে বেশি কষ্ট হত, যখন দেখতাম অনেকে আমাকে মানুষ বলেও ভাবে না। চরম অপমান করে।’

অবশ্য শেষ অবধি রাম বাবুর লং ডিসট্যান্স রানার হয়ে ওঠা হয়নি। হাঁটুর চোট তাঁকে বেশ সমস্যায় ফেলেছিল। তা পুরোপুরি সেরে উঠছিল না কারণ, তাঁর কাছে ভালো খাবার এবং চিকিৎসা করানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ছিল না। সেই সময় একজন কোচ তাঁকে লং ডিসট্যান্স রানের জায়গায় রেসওয়াকে মনোযোগ দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কারণ তাতে হাঁটুতে কম চাপ পড়ে। এরপর রাম বাবু ওয়েটারের চাকরি ছেড়ে দিয়ে কুরিয়ার এজেন্সির ব্যবহৃত পাটের ব্যাগ সেলাই শুরু করেন। পরবর্তীতে সেই কাজটিও ছেড়ে দেন।

রাম এরপর ভোপালে যান। তিনি জানতেন ভারতীয় স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার (SAI) কেন্দ্রে ভারতীয় রেস ওয়াকারদের একটি শক্তিশালী দল রয়েছে। ভোপালে তাঁর দেখা হয় প্রাক্তন অলিম্পিয়ান বসন্ত বাহাদুর রানার সঙ্গে। তিনি রাম বাবুকে অনেক সাহায্য করেন। এরপর বেঙ্গালুরুতে আর এক কোচের সাহায্য পান। এ ভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন রাম। হঠাৎ করোনা মহামারি সব ওলটপালট করে দেয়। তাঁর অনুশীলন বন্ধ হয়ে যায়। তিনি উত্তরপ্রদেশ ফিরে যান। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে সব স্বাভাবিক হলে তিনি আবার ট্র্যাকে ফেরেন। এবং একের পর এক ইভেন্ট থেকে পদক জিততে থাকেন।