EV Fire Incidents: বারবার ইলেকট্রিক স্কুটারে আগুন ধরছে কেন? ফরেন্সিক তদন্তের নির্দেশ দিল কেন্দ্র, ভুলচুক বেরোলে কঠোর শাস্তি
Nitin Gadkari: ইলেকট্রিক স্কুটারগুলিতে আগুন ধরার কারণ খুঁজতে ফরেন্সিক তদন্তের নির্দেশ দিল কেন্দ্র। এক্সপার্ট কমিটিও তৈরি করা হয়েছে তার জন্য।
গত এক সপ্তাহে চারটি ভিন্ন সংস্থার ইলেকট্রিক স্কুটারে (Electric Scooter) আগুন ধরেছে। আর তা নিয়েই রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে দেশের ইলেকট্রিক ভেহিকল ইন্ডাস্ট্রিতে। বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতারাও এ নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, যে দেশে ইলেকট্রিক গাড়ির চাহিদা তরতর করে বাড়ছে, সে দেশে যদি গাড়িগুলিতে বারংবার আগুন (EV Fire) ধরে যাওয়ার কাণ্ড ঘটে, তাহলে আর কতজনই বা এমন ই-স্কুটার কেনার প্রতি আগ্রহ দেখাবেন? আর এমনই এক সংকটজনক পরিস্থিতিতে নড়ে চড়ে বসল কেন্দ্র সরকার। কেন ওই ইলেকট্রিক স্কুটারগুলিতে আগুন ধরেছিল, তা নিয়ে ফরেন্সিক তদন্তের নির্দেশ দিল কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রণালয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি (Nitin Gadkari) জানিয়েছেন, সরকার বিষয়টি খুব সিরিয়াসলি দেখছে এবং দু’চাকা ইলেকট্রিক গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি এই বিষয়ে কোনও ভুল করে থাকলে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
গত ২৭ মার্চ পুণের ব্যস্ততম রাস্তায় দাউদাউ করে জ্বলতে দেখা যায় একটি ওলা এস১ প্রো ইলেকট্রিক স্কুটারকে। ওলা ইলেকট্রিকের তরফ থেকে জানানো হয় যে, কী কারণে এই আগুন ধরেছে, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। তার ঠিক আগেই ২৫ মার্চ তামিলনাড়ুতে একই পরিবারে এক বাবা ও তার কন্যার মৃত্যু হয় ওকিনাওয়ার একটি ইলেকট্রিক স্কুটারে আগুন ধরে যাওয়ার ফলে। সেটিই ছিল এই গরমের মরশুমে ভারতে কোনও একটা ইলেকট্রিক স্কুটারে প্রথম বার আগুন ধরার ঘটনা। তার ঠিক এক দিনের মধ্যেই সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের অটো জার্নালিস্ট সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় ট্যুইট করেন পিওর ইভি নামক একটি ইলেকট্রিক দু’চাকা গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থার স্কুটারে আগুন লেগে যাওয়ার ভিডিয়ো। তিনি জানিয়েছিলেন যে, এই নিয়ে পরপর ৪ দিনে চারটি ইলেকট্রিক স্কুটারে আগুন ধরল।
কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও হাইওয়ে মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি বলছেন, “গত এক সপ্তাহে মোট চারটি ইলেকট্রিক স্কুটারে আগুন ধরার ঘটনা ঘটেছে, যা সত্যিই একটা সিরিয়াস ইস্যু। সেন্টার ফর ফায়ার এক্সপ্লোসিভ, ডিআরডিও এবং আইআইএসসি বেঙ্গালুরুর বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত ইলেকট্রিক দু’চাকা গাড়ির নির্মাতাদের ফরেন্সিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।” প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক বছর ধরেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়কড়িকে ইলেকট্রিক ভেহিকল সম্পর্কে যথেষ্ট আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে প্রোমোট করতে দেখা গিয়েছে। এমনকি সম্প্রতি তিনি লোকসভায় পৌঁছে গিয়েছিলেন দেশের প্রথম হাইড্রোজেন জ্বালানি দ্বারা চালিত গাড়ি টয়োটা মিরাই নিয়ে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলছেন,ভারতে তৈরি ইলেকট্রিক ভেহিকল ও তার ব্যাটারি গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কিন্তু বিদেশের ইলেকট্রিক ভেহিকেলেও যে আগুন লাগে না, এমনটা তো নয়! টেসলার ইলেকট্রিক গাড়িতেও প্রায়শই আমরা আগুন লেগে যাওয়ার ঘটনা শুনতে পাই। আর যদি ভারতের ইলেকট্রিক গাড়িও গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ডের হয়, তাহলে কেনই বা আগুন ধরছে? মন্ত্রীর কথায়, “এক্সপার্ট কমিটির কাছ থেকে আসা রিপোর্টের অপেক্ষা করছি আমরা। সেই রিপোর্টটি পাওয়ার পরই আমরা বলতে পারব যে, কেন এই চারটি ইলেকট্রিক স্কুটারে আগুন লেগেছিল। আর সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই আমরা ইভি প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির বিরুদ্ধেও অ্যাকশন নিতে পারব।”
যদিও নীতিন গড়কড়ি মনে করেন যে, এই ইলেকট্রিক গাড়িগুলিতে আগুন ধরার জন্য একটা বড় অংশ দায়ী হল ভারতের উচ্চ তাপমাত্রা। এই একই কথা শোনা গিয়েছিল সংশ্লিষ্ট ইলেকট্রিক স্কুটার প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির মুখেও। এটা সত্যিই ভাববার বিষয় যে, শীতকালেও ওলা এস১ প্রো বাদ দিয়ে অন্যান্য সংস্থার ইলেকট্রিক স্কুটারগুলি চলেছে, সে সময় তো আগুন ধরে যাওয়ার কোনও অভিযোগ আসেনি। তাহলে কেন এই সময়ে? তার একমাত্র কারণই হল এই উচ্চ তাপমাত্রা। তাহলে গরম কালে কী মানুষ ইলেকট্রিক স্কুটার ব্যবহার করবেন না? মন্ত্রী বলছেন, “একমাত্র রিপোর্ট আসার পরই সে বিষয়ে আমরা বলতে পারব এবং মানুষের নিরাপত্তার দিকটাতেও নজর দিতে পারব।”
ভারতে এই মুহূর্তে যে সব ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরি হয় বা লঞ্চ হয়েছে, তার সবেতেই রয়েছে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি। ইলেকট্রিক ভেহিকল বা যে কোনও ইলেকট্রনিক ডিভাইসে এই ধরনের ব্যাটারি ব্যবহার করলে সেগুলি তখনই আগুন ধরতে পারে, যখন তাদের ঠিক করে ম্যানুফ্যাকচার করা হয় না বা যে সফ্টওয়্যার ওই ব্যাটারি অপারেট করে তা ঠিক ভাবে ডিজ়াইন করা হয় না।
আরও পড়ুন: ফের আগুন লাগল আর একটি ইলেকট্রিক স্কুটারে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিয়ো