একটা সময় ছিল যখন গেমের চল ছিল না। তখন দিনে দুঘণ্টার বেশি খেলাধুলা করার নিষেধ ছিল। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে সেই খেলাধুলার সময়সীমা একদম শুন্যতে ঠেকল। যদিও, খেলাধুলার পুরো ভস্মীভূত হওয়া হয়নি। মোবাইল গেম বা আরও নানান মাধ্যমের ‘গেম’ আমাদের জীবনে শুরু হয়েছিল। কেউ কেউ সারাদিনে ১২ থকে ১৪ ঘণ্টা বা তারও বেশি এই গেম খেলা শুরু করল। সময় যত এগোল তত গেম খেলার ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে নিত্য নতুন প্রবন্ধ আসা শুরু হল। অনেকে সত্যিই অতিরিক্ত গেম খেলার কারণে মানসিক চাপের রোগী হয়ে উঠেছে। কিন্তু, গেম খেলার পরিমাণ কমানো যায়নি। তবে, এবার সেই অসম্ভবকে সম্ভব করার দোরগোড়ায় চিন। গেমিং জগতে বড়সড় দুঃসংবাদ নিয়ে হাজির হচ্ছে চিন।
১৮ অনুর্ধরা সপ্তাহে ৩ ঘণ্টার বেশি গেম খেলতে পারবে না।
বেইজিং কর্তৃক চিনের সমাজ ও অর্থনীতির মূল সেক্টরগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার জন্য সোমবার কয়েকটা নিয়ম নতুন করে জারি করা হয়। এই নিয়মগুলি আগামীকালে প্রযুক্তি, শিক্ষা এবং সম্পত্তির ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আনতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
নিষেধাজ্ঞাগুলি, ফোন সহ যেকোনো ডিভাইসের জন্যই প্রযোজ্য। এটি একটি বিশ্বব্যাপী গেমিং শিল্পের জন্য সরাসরি আঘাত এনেছে। গেমিং ইন্ডাস্ট্রি বিশ্বের সবচেয়ে লাভজনক মার্কেট। লক্ষ লক্ষ তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে নিজেদের একটা স্বতন্ত্র দুনিয়া গড়ে তুলেছে এই গেমিং ইন্ডাস্ট্রি।
সিনহুয়া স্টেট নিউজ এজেন্সি অনুসারে, তারা ১৮ বছরের কম বয়সীরা সপ্তাহে শুধুমাত্র শুক্র, শনি আর রবিবার দিনে এক ঘন্টা করে রাত ৮ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত গেম খেলতে পারবে। সরকারি ছুটির দিনেও এই একই সময়ে তারা এক ঘণ্টা গেম খেলতে পারবে।
ন্যাশনাল প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনপিপিএ) রেগুলেটরের নিয়মগুলি আলিবাবা গ্রুপ এবং টেনসেন্ট হোল্ডিংসের মতো চিনের টেক জায়ান্টদের বিরুদ্ধে বেইজিংয়ের অসন্তোষেরই বহিঃপ্রকাশ বলে ধরে নেওয়া যায়।
চিনের গেমস মার্কেট ২০২১ সালে আনুমানিক ৪৫.৬ বিলিয়ন ডলার (মোটামুটি ৩,৩৪,০২০ কোটি টাকা) আয় করবে বলে অনুমান করা হয়েছিল।
আমস্টারডাম-তালিকাভুক্ত টেক ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি প্রোসাস, যা চিনা সোশ্যাল মিডিয়া এবং টেনসেন্টের ২৯ শতাংশ অংশীদার, তার শেয়ার প্রাইস ১.৪৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে ইউরোপীয় অনলাইন ভিডিয়ো গেমিং স্টক ইউবিসফট এবং এমব্রেসার গ্রুপ উভয়েরই স্টক প্রাইস ২ শতাংশেরও বেশি নেমে গেছে।
চিনে প্রায় ৬২.৫ শতাংশ অপ্রাপ্তবয়স্করা অনলাইনে গেম খেলে। এছাড়া ১৩.২ শতাংশ অপ্রাপ্ত বয়স্ক কাজের দিনে প্রতিদিন ২ ঘণ্টার বেশি গেম খেলে থাকে।
একটি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এই মাসে অনলাইন গেমগুলিকে “আধ্যাত্মিক আফিম” (spiritual opium) হিসেবে বর্ণনা করেছিল। টেনসেন্টের ‘অনার অফ কিংস’ নামের গেমকে একটি নিবন্ধে উদ্ধৃত করে বলেছিল কীভাবে এরা নিজেদের স্বার্থের জন্য দেশের যুবক সম্প্রদায়কে নষ্ট করছে।
আরও পড়ুন: ব্যাটেলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়ার নতুন গেমিং টুর্নামেন্টের ঘোষণা করেছে iQOO