WhatsApp End-to-End Encryption: হোয়াটসঅ্যাপে আপনার মেসেজগুলি আদেও সুরক্ষিত নয় বলেই জানালো নতুন রিপোর্ট!
এই বছরের শুরুর দিকে হোয়াটসঅ্যাপ যখন একটি নতুন প্রাইভেসি নীতি ঘোষণা করেছিল তখনই তারা ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপের মধ্যে ডেটা ভাগ করে নেওয়া সহজ করে দিয়েছিল। যদিও, এই শেয়ারিংয়ের বিষয় শুধুমাত্র ব্যবসায়িক কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, ফেসবুক কয়েক মাস ধরে অন্তত এমনটাই উল্লেখ করেছিল।
হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজগুলি এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপ্টেড হয়। এমনকি আপনি যখন মাল্টি-ডিভাইস ফিচার ব্যবহার করেন তখনও এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপ্টেড থাকে। আবারও এই দুটো বাক্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলো। প্রথমবার নয়, এর আগেও হোয়াটসঅ্যাপের প্রাইভেসি আর সিকিউরিটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। যদিও, একটি নতুন প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজগুলি এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপ্ট করা হয় না। এর পাশাপাশি এরা আরও দাবি করেছে যে ফেসবুক আমাদের মেসেজের বিষয়বস্তু দেখে থাকে।
বিস্ফোরক এই দাবি করেছে প্রপাবলিকা। এরা খুব ডিটেল্ড স্টাডি দিয়ে দেখায় কীভাবে ফেসবুক ২০১৬ সাল থেকে হোয়াটসঅ্যাপের এই এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশনকে নিজেদের মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি হিসেবে ব্যবহার করছে। ২০১৬ সালেই এই এন্ড-টু-এন্ড ফিচার কার্যকর করা হয়েছিল।
প্রোপাবলিকা রিপোর্টের দাবিগুলি হোয়াটসঅ্যাপের ১,০০০ জন চুক্তিবদ্ধ কর্মীদের পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। এরা জানিয়েছে যে লক্ষ লক্ষ ইউজারদের কন্টেন্ট পরীক্ষা করার পর তারা এই স্টাডি করতে পেরেছে। এই কর্মীদের ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ, ছবি এবং ভিডিয়ো চেক করার জন্য ফেসবুক সফ্টওয়্যারের একটা বিশেষ ধরনের অ্যাক্সেস আছে। এমনকি, এই রিপোর্ট সেই মেসেজগুলির উদ্ধৃতি দেয় যা একজন ইউজার জানিয়েছিলেন। “এই কর্মীরা তাঁদের স্ক্রিনে যা কিছু আসে, সে জালিয়াতিই হোক বা স্প্যাম থেকে শুরু করে চাইল্ড পর্ন সবকিছুতেই সাধারণত এক মিনিটেরও কম সময়ে নিজেদের মতামত জানায়।” প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে এই কর্মীরা অস্টিন, ডাবলিন, সিঙ্গাপুর এবং টেক্সাসে থাকেন।
WABetainfo, একটি টুইটে, একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে দেখিয়েছে যখন কেউ কোনও কনভার্সেশন রিপোর্ট করে তখন ঠিক কী ঘটে। শেয়ার করা স্ক্রিনশটটি হোয়াটসঅ্যাপের পুরনো ২.২১.১৮.৯ ভার্সেনকে দেখিয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে একটা পপ-আপ উইন্ডো এসেছে যাতে লেখা আছে, “এই কন্ট্যাক্টের থেকে একদম শেষের দিকের কিছু মেসেজ হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হবে। এই বশয়ে এই কন্ট্যাক্ট কিছু জানতে পারবে না।”
হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ভার্সেনে একটা অন্য ধরনের পপ-আপ আসে। সেখানে বলা থাকে, “এই কন্ট্যাক্টের শেষ ৫ টি মেসেজ হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হবে। আপনি যদি এই কন্ট্যাক্টটিকে ব্লক করে চ্যাটটি ডিলিট করে দেন তবে এটি কেবল এই ডিভাইস থেকে ডিলিট হবে। কন্ট্যাক্টের কাছে কোনও নোটিফিকেশন যাবে না। “
ProPublica রিপোর্টে গত বছরের একটি মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিও তুলে ধরা হয়েছে যা দেখায় কীভাবে হোয়াটসঅ্যাপ তাদের প্রাইভেসি আর সিকিউরিটির ভয়ঙ্কর বেশি প্রচার করেছিল। এছাড়াও, প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে সংস্থাটি তার ব্র্যান্ডকে একজন ইমিগ্রেন্ট মায়ের সঙ্গে তুলনা করেছে।
এই বছরের শুরুর দিকে হোয়াটসঅ্যাপ যখন একটি নতুন প্রাইভেসি নীতি ঘোষণা করেছিল তখনই তারা ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপের মধ্যে ডেটা ভাগ করে নেওয়া সহজ করে দিয়েছিল। যদিও, এই শেয়ারিংয়ের বিষয় শুধুমাত্র ব্যবসায়িক কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, ফেসবুক কয়েক মাস ধরে অন্তত এমনটাই উল্লেখ করেছিল।
ফেসবুক প্রো -পাবলিক রিপোর্টের একটি লিখিত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, “আমরা এমনভাবে হোয়াটসঅ্যাপ তৈরি করেছি যা আমাদের সংগ্রহ করা ডেটার পরিমাণ লিমিটেড রেখেছে। যা আমাদের ইউজারদের স্প্যাম যেমন হুমকি তদন্ত করতে এবং অন্যান্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নিষিদ্ধ করতে ব্যবহার করতে হয়। আর এর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা দল দিনরাত পরিশ্রম করে থাকে।” ফেসবুকও কি তাহলে এই ‘দল’-এর কথা মেনে নিল? প্রোপাবলিকা কি তবে ঠিক? ফেসবুকের এই বিবৃতিতে প্রোপাবলিকার করা অভিযোগ অস্বীকারের কোনো ছাপ দেখা যায় নি।
আরও পড়ুন: হোয়াটসঅ্যাপে আসতে চলছে একগুচ্ছ নতুন ফিচার, দেখে নিন তালিকায় রয়েছে কী কী