ইউটিউব (YouTube) ব্যবহার করেন আট থেকে আশি প্রায় সকলেই। এই ভিডিয়ো প্ল্যাটফর্মে যেরকম ক্রিয়েটররা নিজেদের ভিডিয়ো নিয়মিত পোস্ট করতে থাকেন, তেমনই আবার সাধারণ মানুষই স্মৃতি টাটকা রেখে দিতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পোস্ট করে থাকেন। এবার মেটাভার্সে (Metaverse) পদার্পণ করতে চলেছে ইউটিউব, সম্প্রতি সংস্থার তরফে সেই ঘোষণা করা হয়েছে। ২০২২ সালেই শুরু হয়ে যাবে ইউটিউব-এর মেটাভার্স যাত্রা। সংস্থার তরফ থেকে এ-ও জানানো হয়েছে যে, ব্লকচেন নির্ভর নন ফাঞ্জিবল টোকেন বা এনএফটি-ও (NFT) নিয়ে আসা হবে। মেটাভার্সের জন্য ইউটিউবের ভিডিয়ো সিস্টেমও অনেকটাই বদলে যাবে বলে আরও জানা গিয়েছে।
এমনই একটা সময়ে যেখানে প্রতিদিনই প্রায় অনলাইনে প্রতারণার ঘটনা সামনে আসছে, সেখানে এই মেটাভার্স জালিয়াতির সম্ভাবনা অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারবে। শুধু তাই নয়, ব্যবহারকারীরা এর থেকে অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম হবেন। তার জন্য ইউটিউব ভিডিয়ো এবং গেমিং কনটেন্ট, ডিজিটাল আর্ট ইত্যাদি আরও একধিক নতুন বিষয় বাজারে নিয়ে আসা হবে।
বড় আয়ের উৎস হয়ে উঠবে মেটাভার্স
ব্লকচেন-ভিত্তিক এনএফটি প্রযুক্তির মাধ্যমে ইউটিউবের কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। পাশাপাশি আবার যে কোনও ইউটিউব ব্যবহারকারী কিছু অনবদ্য ভিডিয়ো, ছবি বা যে কোনও আর্টওয়ার্ক ইউটিউবে প্রদর্শন করলে তাঁরাও এনএফটি-র মাধ্যমে টাকা রোজগার করতে পারবেন। যে কোনও মানুষ এখান থেকে ছবি, ভিডিয়ো এবং বিভিন্ন আর্টওয়ার্ক কিনতে পারবেন। প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগেই এনডিটি ভিত্তিক একক ডিজিটাল আর্ট ওয়ার্ক লক্ষ কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছে।
ফেসবুক জানিয়েছে যে, তারা আরও বেশি করে মেটাভার্সের দুনিয়া এক্সপ্লোর করবে। ফেসবুকের পর ইউটিউবও মেটাভার্সে প্রবেশের ঘোষণা করে দিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে যে, তারা ওয়েবথ্রি প্রযুক্তি যেমন নন-ফাঞ্জিবল টোকেন বা এনএফটির পরিকল্পনা করছে এবং সেই মোতাবেক কাজও শুরু করে দিয়েছে।
এদিকে আবার দেশের নামজাদা টেলিকম সংস্থা রিলায়েন্স জিও সম্প্রতি মেটাভার্সে অর্থ বিনিয়োগ করেছে। সিলিকন ভ্যালির ডিপ টেক স্টার্ট-আপ ‘টু প্ল্যাটফর্ম’-এ ১৫ মার্কিন ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে মুকেশ আম্বানির সংস্থাটি, তাদের ইক্যুয়িটি স্টেক ২৫ শতাংশ। এই ‘টু প্ল্যাটফর্ম’-এর প্রতিষ্ঠাতা প্রণব মিস্ত্রি। ‘টু’ একটি আর্টিফিশিয়াল রিয়্যালিটি বা এআর কোম্পানি, যা তৈরি করা হয়েছিল ইন্টার্যাক্টিভ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম মেধার অভিজ্ঞতা দেওয়ার জন্য।
রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ়-এর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুকেশ আম্বানি বলছেন, আগামী দশকে ভার্চুয়াল দুনিয়ার জনপ্রিয়তা ব্যাপক ভাবে বাড়বে এবং তার অসাধারণ মূল্যও সৃষ্টি হবে। ইনফিনিটি ফোরামের সময় তিনি উদাহরণ দিয়েই বিষয়টি পরিষ্কার করে বলেছিলেন, “একটা সময় মানুষ ভার্চুয়াল দুনিয়ায় জায়গা কিনবেন, বিক্রি করবেন এবং ভার্চুয়াল রিয়্যাল এস্টেট ব্যবহার করবেন।”
এই বিপুল বিনিয়োগের পরে এই ‘টু’ নামক ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি প্ল্যাটফর্মটি নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে দ্রুত ট্র্যাক ও অ্যাডাপ্ট করতে জিও-কে সাহায্য করবে। পাশাপাশি জিও-র জন্য এআই, মেটাভার্স ও মিক্সড রিয়্যালিটি-সহ একাধিক প্রযুক্তিও তৈরি করবে।
আরও পড়ুন: দেশের স্মার্টওয়াচ মার্কেটের লং জাম্প! ২৭৪% বৃদ্ধি, চিনাদের হার মানিয়ে শীর্ষে দেশি বোট-নয়েজ়
আরও পড়ুন: বদলে যাচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ কল! নতুন লুক কেমন হচ্ছে, দেখে নিন
আরও পড়ুন: ইনস্টাগ্রামে মিউট করা ডিএম বা ডিরেক্ট মেসেজ পাঠাবেন কীভাবে? জেনে নিন সহজ পদ্ধতি