Relativity: আইনস্টাইনের ১০৬ বছর আগের হিসেব নির্ভুল ছিল, এমনটাই জানালেন আজকের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা…

এরই কথা আপেক্ষিকতাবাদে বলেছিলেন আইনস্টাইন। তাও, ১০৬ বছর আগে। আর তা যে একেবারেই ভুল ছিল না এই প্রথম সেটা জানিয়ে দিল আড়াই হাজার বছর আগেকার দু’টি যুগ্ম তারা, পালসার।

Relativity: আইনস্টাইনের ১০৬ বছর আগের হিসেব নির্ভুল ছিল, এমনটাই জানালেন আজকের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা...
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 17, 2021 | 7:04 AM

১০৬ বছর আগে আইনস্টাইনের কষে দেওয়া অঙ্ক যে একেবারেই নির্ভুল ছিল, আড়াই হাজার বছর আগেকার দু’টি তারা সে কথা দ্ব্যর্থহীন ভাবেই জানিয়ে দিল। ফের প্রমাণিত হল আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদের সত্যতা। পৃথিবী থেকে দু’হাজার ৪০০ আলোকবর্ষ দূরে থাকা ওই দু’টি তারার উপর একটানা ১৬ বছর ধরে নজর রেখেছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাদের বলা হয়- ‘বাইনারি পালসার’। যার বৈজ্ঞানিক নাম-Re ‘PSR J0737−3039A/B’।

সেই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে লেখা গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘ফিজিক্যাল রিভিউ এক্স’-এ। গবেষকরা দেখেছেন, ১০৬ বছর আগে তাঁর আপেক্ষিকতাবাদে আইনস্টাইন অঙ্ক কষে ঠিক যেমনটা জানিয়েছিলেন সেই ভাবেই জোড় বেঁধে থাকা দু’টি তারা (বাইনারি) একে অন্যের উপর যে টান (যাকে অভিকর্ষ বল বলা হয়) দেয় তা তাদের মধ্যেকার স্থান (স্পেস) ও কাল (টাইম)-কে আরও বেশি দুমড়িয়ে মুচড়িয়ে দেয়।

তার ফলে, একটি তারার বিকিরণের আলো অন্য তারাটিতে পৌঁছনোর সময়ে হেরফের ঘটে। আলোর কণা ফোটনের গতিবেগ (সেকেন্ডে এক লক্ষ ৮৬ হাজার কিলোমিটার) ধ্রুবক হলেও এক তারা থেকে তার জোড় বাঁধা অন্য তারটিতে আলো পৌঁছতে কখনও দেরি হয়ে যায়। ১০৬ বছর পর ঠিক সেই ঘটনাটাই প্রথম চাক্ষুষ করলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।


কোনও তারা অন্তিম দশায় পৌঁছলে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ হয়। তাকে বলা হয় ‘সুপারনোভা’। তার পর যে কোনও তারারই কপালে থাকে সাধারণত দু’ধরনের ভবিষ্যত। হয় সেটি ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর হয়ে যায়। যার কোপ এড়িয়ে কোনও বস্তু, এমনকি আলোও বেরিয়ে আসতে পারে না। আর ব্ল্যাক হোল না হলে সেক্ষেত্রে সুপারনোভার পর কোনও তারা নিউট্রন নক্ষত্র হয়ে যায়।

পালসার এক ধরনের নিউট্রন নক্ষত্রই। তাদের এমন নামকরণের কারণ, নির্দিষ্ট সময় অন্তর তাদের থেকে বেরিয়ে আসে বিকিরণ। রেডিয়ো তরঙ্গে। যা আলোক বর্ণালীর একটি প্রান্তে রয়েছে। বর্ণালীতে দৃশ্যমান আলোর এলাকা থেকে অনেকটা দূরে। তাই এই রেডিয়ো তরঙ্গ কখনও খালি চোখে দেখা যায় না। এই রেডিয়ো তরঙ্গ বেরিয়ে আসে কোনও পালসারের মেরু অঞ্চল থেকে।

পালসারের রেডিয়ো তরঙ্গের বিকিরণ দেখা সম্ভব হয় শুধুই রেডিয়ো টেলিস্কোপে। জার্মানির ‘ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর রেডিয়ো অ্যাস্ট্রোনমি’-র জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা রেডিয়ো টেলিস্কোপেই ১৬ বছর ধরে নজর রেখে চলেছিলেন এই যুগ্ম তারা— ‘PSR J0737−3039A/B’-র উপর। তাঁরা দেখেছেন, নির্দিষ্ট সময় অন্তর একটি পালসারের মেরু থেকে বেরিয়ে আসা রেডিয়ো তরঙ্গ অন্য পালসারে পৌঁছতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। যেন আলোর কণার গতিকে কেউ থামিয়ে দিচ্ছে। দু’টি তারার একে অন্যকে টানই সেই আলোর গতি আটকে দেওয়ার কারণ।

এরই কথা আপেক্ষিকতাবাদে বলেছিলেন আইনস্টাইন। তাও, ১০৬ বছর আগে। আর তা যে একেবারেই ভুল ছিল না এই প্রথম সেটা জানিয়ে দিল আড়াই হাজার বছর আগেকার দু’টি যুগ্ম তারা, পালসার।

আরও পড়ুন: NASA’s Parker Probe: সূর্যের করোনাকে ছুঁয়ে ফেলেছে নাসার মহাকাশযান পার্কার, ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী মানবজাতি

আরও পড়ুন: Water on Mars: মঙ্গলগ্রহের গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে গোপন জলের রিজার্ভারের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা