Birds Laying Eggs Earlier: জলবায়ুর পরিবর্তনে সময়ের আগেই ডিম পাড়ছে পাখিরা, বিজ্ঞানীদের গবেষণায় চরম বিপদের ইঙ্গিত!
Climate Change And Seasonal Disruptions: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বসন্ত আগেই চলে আসছে! আর সেই কারণে উত্তর আমেরিকায় দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি সময়ের আগেই ডিম পাড়ছে।
উত্তর আমেরিকার একটা বিস্তীর্ণ অংশজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের (Climate Change) কারণে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বসন্ত শুরু হয়ে যায়। আর সেই কারণে অনেক পাখিই (Birds) বছরের শুরুতে ডিম (Eggs) পাড়ছে। সম্প্রতি একটি নতুন গবেষণায় ঠিক এমনই তথ্য উঠে এসেছে, যেখানে বিশ্ব উষ্ণায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে পশু-পাখিদের স্বাভাবিক অভ্যাস ওলটপালট হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে। শিকাগোর আশেপাশে মোট ৭২টি ভিন্ন প্রজাতির পাখির পরীক্ষা করা হয়েছে, যাদের মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশ পাখি ২৫ দিন আগেই ডিম পেড়ে দিয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি এ-ও বলা হয়েছে যে, এমন কাণ্ড এক শতাব্দী আগে দেখা গিয়েছিল পাখিদের মধ্যে। শুক্রবার জার্নাল অফ অ্যানিম্যাল ইকোলজিতে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে এমনই তথ্যের উল্লেখ করা হয়েছে।
মূলত যে সব পাখিরা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং এই ভাবে সময়ের আগেই ডিম পাড়ছে, তাদের মধ্যে রয়েছে মোর্নিং ডাভ, আমেরিকান কেস্ট্রেল এবং কুপার্স হক। আকার বা পরিযায়ী অবস্থা, এমন ধরনের কোনও বৈশিষ্ট্য এখনও এই পাখিগুলির মধ্যে বিজ্ঞানীরা দেখতে পাননি, যাতে করে পরিষ্কার হওয়া যায় এবং ব্যাখ্যাও করা যায় যে, কেন তারা ডিম পাড়ার সময়সূচীর পরিবর্তন করছে।
শিকাগোর ফিল্ড মিউজ়িয়ামের বার্ড ডিভিসনের কিউরেটর এবং ওই জার্নালের মূল লেখক জন বেটস দাবি করছেন, “আমরা যে সব পাখি মূলত লক্ষ্য করেছি, তাদের বেশির ভাগই পোকামাকড় খায়। আর সেই সব পোকামাকড়েরও মরশুমি আচরণ জয়বায়ু দ্বারা ব্যাপক ভাবে প্রভাবিত হয়।” আরও যোগ করে বেটস বললেন, “কী ভাবে জলবায়ু পরিবর্তন এবং ঋতুগত বাধাগুলির দ্বারা প্রাণী এবং উদ্ভিদের জীবনচক্র কীভাবে প্রভাবিত হয়, এই সব বিষয়ে মানুষের মনে এখন আরও বেশি করে প্রশ্ন জাগছে।”
দীর্ঘমেয়াদী গড় তাপমাত্রা থেকে মাত্র কয়েক ডিগ্রি কম তাপমাত্রা পোকামাকড়ের আবির্ভাবের উপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। তার থেকেও বেশি প্রভাব ফেলে কখন গাছের পাতা ফুটছে, কখন ফুল ফুটছে এবং নতুন গবেষণা অনুসারে, যখন ডিম ফুটছে, এই সব বিষয়গুলি। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে, এই পরিবর্তনগুলি ১৯৭০ সাল থেকে পাখির জনসংখ্যার তীব্র হ্রাসের অনেক কারণের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, যার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা তাদের প্রায় এক তৃতীয়াংশ পাখি বা প্রায় ৩ বিলিয়ন পাখির সংখ্যা কমে যাওয়ার বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়েছিল। ২০১৯ সালের সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা থেকে এমনই তথ্য জানা গিয়েছিল।
জন বেটস এবং তাঁর সহকর্মীরা শিকাগোর ফিল্ড মিউজিয়ামে সংরক্ষিত ১৫০০-রও বেশি ডিমের খোসা সম্পর্কে অধ্যয়ন করেছেন। তাদের মধ্যে অনেকগুলিই ১৮৭২ থেকে ১৯২০ সালের মধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই সময় ডিম সংগ্রহ করা ছিল বিজ্ঞানীদের একটা অন্যতম পছন্দের পাসটাইম। এই ভিক্টোরিয়ান যুগের এগ সেল বা ওভা উৎসাহীরা বা ডিম সংগ্রহকারীরা পাখির প্রজাতি এবং সংগ্রহের তারিখের মতো বিস্তারিত তথ্য হাতে লিখে তালিকাভুক্ত করে গিয়েছেন।
তারপরে বিজ্ঞানীরা তাদের বিশ্লেষণের জন্য ৩০০০-এরও বেশি আধুনিক রেকর্ডের সঙ্গে সেই পুরাতন রেকর্ডগুলিকে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বর্ণনা করার ডেটার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। ইউনাইটেড কিংডমেও সম্প্রতি পরিচালিত গবেষণার ফলাফল একই রকমের তথ্যই প্রতিধ্বনি করে। সেখানেও দেখা গিয়েছে যে, সময়ের আগেই ডিম পাড়ছে পাখিরা।
আরও পড়ুন: লেটুস পাতার ফলন মহাকাশে! ভাল রাখবে নভশ্চরদের হাড়ের গঠন
আরও পড়ুন: জানেন কেন ৫ মিনিটের বেশি স্নান করলেই বিশ্বযুদ্ধের আহ্বান করছেন আপনি?
আরও পড়ুন: নতুন ধরনের বরফ আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা, পৃথিবীতে থাকার সম্ভাবনাই নেই!