অবশেষে আংশিক ভাবে ঠিক হয়েছে নাসার হাব্বল স্পেস টেলিস্কোপ। প্রায় একমাস ধরে কার্যত অন্ধ হয়ে ছিল এই স্পেস টেলিস্কোপ। বন্ধ ছিল মহাকাশ সংক্রান্ত সমস্ত ধরনের কাজ। তবে একমাস পর নাসা অবশেষে এই টেলিস্কোপের সেকেন্ড ইন্সট্রুমেন্ট কিছুটা হলেও ঠিক করতে পেরেছে। আর তাই ফের শুরু হয়েছে হাব্বল টেলিস্কোপের কাজকর্ম। গত ২৫ অক্টোবর সেফ মোডে রাখা হয়েছিল এই স্পেস টেলিস্কোপকে। সেই সময় থেকেই বন্ধ ছিল এই টেলিস্কোপের যাবতীয় কাজকর্ম। তব তখন থেকেই এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেছিলেন বৈজ্ঞানিকরা। অবশেষে তাঁদের তাঁদের প্রচেষ্টায় আংশিক ভাবে হলেও সফল হয়েছেন।
Wide Field Camera 3- হাব্বল টেলিস্কোপের মধ্যে থাকা এই ইন্সট্রুমেন্ট বা যন্ত্রাংশ প্রায় একমাস পর আংশিক ভাবে ঠিক হয়েছে। মঙ্গলবার হাব্বল স্পেস টেলিস্কোপের এই যন্ত্রাংশ প্রায় একমাস বন্ধ থাকার পর ফের কাজ শুরু করেছে। কয়েক সপ্তাহ আগে সেফ মোড থেকে বের করে আনা হয়েছিল সার্ভে করার অ্যাডভান্সড ক্যামেরা। এবার দ্বিতীয় যন্ত্রাংশ হিসেবে সেফ মোড থেকে বের করে আনা হয়েছে ওই Wide Field Camera 3। আর সেই যন্ত্রাংসজই ঠিকভাবে কাজ শুরু করেছে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, হাব্বল স্পেস টেলিস্কোপের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ইন্সট্রুমেন্ট হল Wide Field Camera 3। এই স্পেসক্র্যাফটের অবজারভেশন টুলের অনেকটা অংশ জুড়ে রয়েছে এই ক্যামেরা। আর তাই এই যন্ত্রাংশ ঠিক করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন নাসার বৈজ্ঞানিকরা। জানা গিয়েছে, গত ২৩ অক্টোবর সমস্যা শুরু হয়েছিল হাব্বল স্পেস টেলিস্কোপে। তারপর ২৫ অক্টোবর ফের সমস্যা দেখা দেওয়ায় এই টেলিস্কোপকে সেফ মোডে পাঠানো হয়েছিল।
কিছুদিন আগে প্রায় একমাসের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল হাব্বল টেলিস্কোপের সমস্ত কাজ। দীর্ঘদিন ধরে জটিল পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে অবশেষে ঠিক হয়েছিল এই টেলিস্কোপ। কিন্তু ফের একবার সমস্যা দেখা দেওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তবে সমস্যার সমাধান করার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা।
মহাকাশের বিস্তীর্ণ অংশ ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য নাসার মূল হাতিয়ার হল এই স্পেস টেলিস্কোপ। দীর্ঘদিন ধরে মহাকাশের বিভিন্ন বিস্ময়কর ছবি আমাদের সামনে তুলে ধরেছে এই স্পেস টেলিস্কোপ। জ্যোতির্বিজ্ঞানে বিপ্লব আনতেই এই টেলিস্কোপের উদ্ভাবন হয়েছিল। মহাকাশ, ছায়াপথ, গ্রহ-নক্ষত্র… এইসব প্রসঙ্গে আদি ধারণা পরিবর্তন করে, নতুনভাবে সকলের কৌতূহল নিবারণের জন্যই আবিষ্কার করা হয়েছিল Hubble স্পেস টেলিস্কোপ। মিল্কি ওয়ে বা আকাশগঙ্গা ছাড়াও মহাকাশে যে আরও অসংখ্য ছায়াপথ রয়েছে সেই ধারণা দিয়েছে নাসার এই Hubble স্পেস টেলিস্কোপ।
Hubble টেলিস্কোপ আসলে মার্কিন স্পেস এজেন্সি নাসা এবং ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সির যৌথ উদ্যোগে নির্মিত একটি স্পেস টেলিস্কোপ। ১৯৯০ সালে প্রথম এটি লঞ্চ করা হয়েছিল। তারপর থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত ১.৩ মিলিয়নেরও বেশি পর্যবেক্ষণ করেছে এই স্পেস টেলিস্কোপ। আপাতত এই সমস্যার পুরোপুরি সমাধান করে ৩০ বছরেরও বেশি পুরনো স্পেস টেলিস্কোপকে সঠিক জায়গায় ফিরিয়ে আনা নাসার জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে এখন একটা চ্যালেঞ্জ।