চিনের একটি মিশনের মাধ্যমে চাঁদ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল কঠিন লাভার অবশিষ্টাংশ। কয়েক দশক আগেও এই একই ধরনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে সম্প্রতি কঠিন লাভার যে অবশিষ্টাংশ সংগ্রহ করা হয়েছে তা আগের নমুনাগুলোর তুলনায় এক বিলিয়ন বছর ছোট। সায়েন্স জার্নালে এই নতুন সংগৃহীত কঠিন লাভার অবশিষ্টাংশের উল্লেখ করা হয়েছে। আর এই নমুনা থেকেই বিজ্ঞানীরা অনুমান করেছেন, যে সময়ে চাঁদ শীতল হয়ে গিয়েছিল বলে মনে করা হয়েছিল, তার থেকে পরেই ঠাণ্ডা হয়েছে চন্দ্রপৃষ্ঠ।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত মিশনের মাধ্যমে যে নমুনা সংগ্রহ করে ফিরিয়ে আনা হয়েছে সেগুলি ২.৯ বিলিয়ন বছরেরও বেশি পুরনো। অন্যদিকে। চিনের Chang’e-5 মিশন হয়েছিল গত বছরের শেষের দিকে। সেই মিশনে যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল, তা ১.৯ বিলিয়ন বছরের পুরনো। আর এই সমত কঠিন লাভার অবশিষ্টাংশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, তাঁরা যা ভেবেছিলেন তাঁর থেকে অনেক বেশি সময় ধরে চন্দ্রপৃষ্ঠে স্থায়ী হয়েছিল আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে চাঁদের এমন একটি অংশ, যেখানে আগে যাওয়া হয়নি, তেমনই একটি লাভা ভূমিতে শুরু হয়েছিল চিনের আনক্রুড মিশন। যে লাভা ভূমিতে এই মিশন শুরু হয়েছিল তাকে Oceanus Procellarum বা Oceans of Storms বলা হয়। এই অঞ্চল থেকে ১৭৩১ grammes লুনার স্যাম্পেল সংগ্রহ করে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, Chang’e-5- এর নামকরণ করা হয়েছে চিনের চন্দ্র দেবতার নাম অনুসারে। এই মিশনের অন্যতম মূল লক্ষ্য ছিল এটা আবিষ্কার করা যে চন্দ্রপৃষ্ঠে কতদিন পর্যন্ত আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ সক্রিয় ছিল।
জানা গিয়েছে, চাঁদের বুকে Oceanus Procellarum অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, থোরিয়াম এবং ইউরেনিয়াম সঞ্চিত রয়েছে। মূলত এইসব উপকরণ দীর্ঘস্থায়ী তেজস্ক্রিয় অবক্ষয়ের ফলে তা উৎপাদন করতে পারে। শুধু তাই নয়, চাঁদের চারপাশের এলাকায় চৌম্বক ক্ষেত্রও তৈরি করতে পারে। এই প্রসঙ্গের গবেষণায় বলা হয়েছে, যে তাপের কারণে চৌম্বক ক্ষেত্রে তৈরি হয়, তা আসলে সম্ভবত উৎপন্ন হয় ‘টাইডাল হিট’ বা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানের মাধ্যমে।
চিনের এই Chang’e-5 অভিযানের কারণে আমেরিকা এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের পর চিনই তৃতীয় দেশ, যারা লুনার স্যাম্পেল বা চাঁদের নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে নিয়ে এসেছে। জানা গিয়েছে, আগামী দিনে Chang’e-6 এবং Chang’e-7- এই দুই মিশনেরও পরিকল্পনা করছে চিন। সেক্ষেত্রেও এই মিশন হবে uncrewed। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে মূলত চাঁদের দক্ষিণ মেরু অন্বেষণের কারণেই এই দুই অভিযান করবে চিন। বিভিন্ন সূত্রে এমনটাই শোনা গিয়েছে।
আরও পড়ুন- Perseverance Rover: মঙ্গলগ্রহের Jezero crater আসলে একটি হ্রদ, জানিয়েছে মার্স রোভার পারসিভের্যান্স