নাসার পারসিভের্যান্স রোভার (Perseverance Mars rover) মঙ্গলগ্রহে নতুন করে রেকর্ড তৈরি করেছে। মার্কিন স্পেস এজেন্সি নাসার পাঠানো এই মার্স রোভারে (Mars Rover) রয়েছে সেলফ ড্রাইভিং ফাংশান। আর তার সাহায্যেই লালগ্রহের পৃষ্ঠদেশে একদিনে সবচেয়ে বেশি দূরত্ব অতিক্রম করেছে পারসিভের্যান্স। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মঙ্গলগ্রহের একদিনকে (Martian Day) বলা হয় sol। নাসা মঙ্গলগ্রহের পারসিভের্যান্স রোভার পাঠিয়েছিল অর্থাৎ যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের ৩০ জুলাই। মঙ্গলগ্রহে এই রোভার অবতরণ করেছিল গত বছর মানে ২০২১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। সম্প্রতি লালগ্রহের পৃষ্ঠদেশে এই রোভার একদিনে ২৪৫.৭৬ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছে। এখানে বলে রাখা ভাল মঙ্গলগ্রহে একদিনের দৈর্ঘ্য পৃথিবীতে একদিনের দৈর্ঘ্যের তুলনায় সামান্য বেশি। মূলত লালগ্রহে প্রাচীন প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়াই মার্স রোভার পারসিভের্যান্স এবং তার সঙ্গী মার্স হেলিকপ্টার Ingenuity- র একমাত্র লক্ষ্য।
রোভার পারসিভের্যান্সের অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকে একটি টুইট করে জানানো হয়েছে যে বেশ কয়েকদিন মঙ্গলগ্রহের একটি এলাকা পর্যবেক্ষণ এবং অন্বেষণের পর এবার ফের চলতে শুরু করেছে রোভার। এর সঙ্গেই জানানো হয়েছে এর আগে একটি মার্সিয়ান ডে- তে যতটা দূরত্ব পারসিভের্যান্স অতিক্রম করেছিল, এবার তার থেকে অনেকটা বেশি দূরত্ব অতিক্রম করেছে। self-driving function- এর মাধ্যমেই এমনটা সম্ভব হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। টুইটে একটি ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে মার্সিয়ান সারফেস বা মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠদেশে রয়েছে রোভার পারসিভের্যান্সের চাকার দাগ। নাসার রিপোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে অপরচুনিটি রোভার ২০১৫ সালে একটি মার্সিয়ান ডে- তে মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠদেশে ২১৪ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছিল।
নাসার মার্স রোভার পারসিভের্যান্স এখন মঙ্গলগ্রহের বুকে ঘুরে বেরিয়ে রক স্যাম্পেল বা পাথুরে নমুনা সংগ্রহে ব্যস্ত রয়েছে। এইসব নমুনা পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হবে। গত বছর ডিসেম্বর মাসে রক স্যাম্পেল সংগ্রহ করে স্টোরেজে ঢোকানোর সময়, সিস্টেম চোকড (choked) হয়ে গিয়েছিল। প্রায় এক সপ্তাহ পরে সেই সমস্যার সমাধান হয়েছিল। জানা গিয়েছে, আপাতত রোভার পারসিভের্যান্স কাছাকাছি ডেল্টা অঞ্চলের দিকে একটি multi-kilometre drive পরিকল্পনা করছে। তবে রোভার পারসিভের্যান্স যে এলাকা ছেড়ে যেতে চাইছে সেখানে যাতে কোনও সুযোগ থেকে না যায় তাই ভালভাবে স্কাউটিং করা হচ্ছে। অন্যদিকে, ডেল্টা অঞ্চল বলতে সেই এলাকাকে বোঝায় যেখানে একসময় জল বইত। ওই এলাকায় এখনও কিছু তথ্য লুক্কায়িত থাকতে পারে যা খুঁজে পেলে বৈজ্ঞানিকদের সুবিধা হবে। মঙ্গলগ্রহে বহুদিন আগে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা তা বোঝার জন্য পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে পারবেন তাঁরা।