নতুন অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে মার্কিন স্পেস এজেন্সি নাসা। ২০২৩ সালে Volatiles Investigating Polar Exploration Rover বা VIPER লঞ্চ করতে চলেছে নাসা। চাঁদের দক্ষিণ মেরুর ‘ক্লোজার ভিউ’ পাওয়ার জন্য লঞ্চ করা হবে এই রোভার। মূলত, চাঁদের দক্ষিণ ভাবে কতটা পরিমাণ জল বা জলজাতীয় জিনিস রয়েছে বা ছিল এবং অন্যান্য কী কী প্রয়োজনীয় উপাদান রয়েছে, সেইসব নমুনা পর্যবেক্ষণ করবে নাসার এই নতুন VIPER রোভার। নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, চাঁদের ওই দক্ষিণ মেরু অংশে আদৌ প্রাণের অস্তিত্ব থাকা সম্ভব কি না, তা জানতেই এই রোভার পর্যবেক্ষণ চালাবে। ওই অংশের নমুনা সংগ্রহ করবে। নাসা জানিয়েছে, VIPER মোবাইল রোবট হল কোনও ‘সেলেস্টিয়াল বডি’- তে হওয়া প্রথম রিসোর্স ম্যাপিং মিশন।
নাসার কমার্শিয়াল লুনার পেলোড সার্ভিসেস (CLPS) এই লঞ্চ ভেহিকেল এবং ল্যান্ডার সরবরাহ করবে। জানা গিয়েছে, ১০০ দিনের জন্য এই অভিযান করতে চলেছে নাসা। গলফ কোর্টের আকার-আয়তনের VIPER আসলে ৫ ফুট বাই ৫ ফুট মাপের। এর ওজন ৪৩০ কিলোগ্রাম। নাসা জানিয়েছে, এই মুন রোভার সরাসরি চন্দ্রপৃষ্ঠের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলের জল, বরফ পর্যবেক্ষণ করবে। মাটির নীচে এবং উপরে, দুই জায়গাতেই জলের খোঁজ চালাবে এই রোভার। এর পাশাপাশি VIPER চাঁদের চারটি মূল মৃত্তিকা পরিবেশে বিভিন্ন গভীরতা এবং তাপমাত্রা পরিমাপের কাজও করবে এই রোভার।
চন্দ্রপৃষ্ঠে নমুনা সংগ্রহের পর তা পৃথিবীতে পাঠাবে এই মুন রোভার। তারপর সেই ডেটা পর্যবেক্ষণ করে গবেষণা এবং বিশ্লেষণ করবেন নাসার বিজ্ঞানীরা। মূলত রিসোর্স ম্যাপ তৈরিতে কাজে লাগবে এইসব ট্রান্সমিট ডেটা। চন্দ্রপৃষ্ঠে কত পরিমাণ বরফ বা জমাটবদ্ধ অবস্থায় জল রয়েছে অর্থাৎ আইস ক্রিস্টাল, মলিকিউল, কেমিক্যাল বাউন্ড বা রাসায়নিক গঠন এইসবও বোঝা যাবে। আগামী দিনের Artemis প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে কোথায় ‘ফিউচার ল্যান্ডিং’ হবে, সেটাও জানান দেবে এই মুন রোভার VIPER। অর্থাৎ যেসব লোকেশনে জলের সন্ধান পাওয়া যাবে যা মানুষের অস্তিত্বের জন্য কাজে লাগবে, সেই সঠিক জায়গায় অবতরণের জন্য লোকেশন পাঠাবে এই রোভার। জানা গিয়েছে, ২০২৮ সালে হবে নাসার Artemis প্রোগ্রাম।
নাসা জানিয়েছে, তিনটি যন্ত্রাংশ নিয়ে চাঁদের চারপাশে প্রদক্ষিণ করবে এই VIPER। তার সঙ্গে থাকবে একটি ৩.২৮ ফুটের ড্রিল। বিভিন্ন ধরনের লুনার সয়েল এনভারয়নমেন্ট ভিন্ন উষ্ণতা এবং গভীরতায় পরিমাপ করবে এই রোভার। চাঁদের থাকা বিভিন্ন ছায়াচ্ছন্ন গহ্বরগুলোও পর্যবেক্ষণ করবে VIPER রোভার। এর মাধ্যমে চন্দ্রপৃষ্ঠের শীতলতম স্থানগুলো চিহ্নিত করবে এই রোভার।
আরও পড়ুন- আগামী সপ্তাহে কাছাকাছি আসবে মঙ্গল-শুক্র-চাঁদ! সাক্ষী থাকবেন আপনিও