এক বিরল প্রজাতির ডাইনোসর কঙ্কালের সন্ধান পেলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একদল বিজ্ঞানী। সম্প্রতি সে দেশের মিসৌরিতে সেই বিশালাকার ডাইনোসরের কঙ্কালের হদিশ মিলেছে। বিজ্ঞানী দলের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, এটি একটি নতুন প্রজাতির ডাইনোসর, যার সন্ধান আগে কখনও পাওয়া যায়নি। প্যারোসরাস মিসৌরিয়েনসিস (Parrosaurus Missouriensis) নামক ডাইনোসরের কঙ্কাল প্রায় ২৫-৩০ ফুট লম্বা। বিজ্ঞানীরা তাঁদের এই ডাইনোসর সন্ধানস্থলটি সুরক্ষিত না করা পর্যন্ত সেটিকে গোপন রেখেছেন বলে খবর।
প্যালিওন্টোলজিস্ট গাই ডাররোহ, যিনি কঙ্কালটি আবিষ্কার করেছিলেন, তিনি এটিকে একটি স্থানীয় যাদুঘরে স্থানান্তরিত করেছিলেন। পরবর্তীতে শিকাগোর ফিল্ড মিউজিয়ামকে এই বড় সংবাদটি প্রকাশের জন্য ডেকেছিলেন। তিনি ফিল্ড মিউজিয়ামের ডাইনোসরের কিউরেটর পিট মাকোভিকির সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানা গিয়েছে। ডাররোহের কথায়, “আমরা এখানে যা আবিষ্কার করেছি তার চেয়ে বেশি চিত্তাকর্ষক কিছু আমি আজ পর্যন্ত কল্পনাও করতে পারিনি। প্রজাতিতে একটি নতুন জেনাস, এটি একটি বিশ্ব বিখ্যাত আবিষ্কার হতে চলেছে।”
মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ম্যাকোভিকি ইতিমধ্যেই মিসৌরির সেই সন্ধান স্থলে খননকার্য শুরু করার সময়ই দেখতে পান যে, গাই ডাররোহ দ্বারা আবিষ্কৃত ডাইনোসরের কঙ্কালের ঠিক পাশেই রয়েছে আর একটি প্রাপ্তবয়ষ্ক প্যারোসরাস মিসৌরিয়েন্সিস। ফক্স ২-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ম্যাকোভিকি দাবি করেছেন, “এটি প্রকৃতপক্ষে গ্রেট প্লেইনগুলির পূর্বে সেরা ডাইনোসর লোকালগুলির মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য সাইট।”
মাকোভিকি, যিনি ডাইনোসরের অবশেষ খুঁজে বের করার জন্য সারা বিশ্বের সাইটগুলি খনন করেছেন, মিসৌরি সাইটটিকে সবচেয়ে অনন্য হিসাবে বর্ণনা করেছেন। পাশাপাশি তিনি এ-ও বিশ্বাস করেন যে, সেখানে আরও ডাইনোসরের জীবাশ্ম পাওয়া যাবে। যদিও এই ডাইনোসরের অবশেষ খোঁজার কাজটি অত্যন্ত দুষ্কর। এক দিকে যেমন ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয়, আর এক দিকে ঠিক তেমনই সুক্ষ্মতারও দরকার হয়। মিসৌরির এই অনুসন্ধানে প্রায় ৮০ বছরেরও বেশি সময় লেগেছে বলে খবর।
১৯৪০ সালে এই সম্পত্তির তৎকালীন মালিকরা কিছু হাড় খুঁজে পেয়েছিলেন, যেগুলি তখন ওয়াশিংটনের স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশন, বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘর, শিক্ষা এবং গবেষণা কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছিল। পরবর্তীতে জানা যায়, এই হাড়গুলি আসলে একটি ডাইনোসরের। কিন্তু তখন বিজ্ঞানীরা সেই ভাবে আগ্রহ প্রকাশ করেননি। ১৯৭০ সালে যখন এই সম্পত্তি কিনে নেওয়া হয়, তখন পুনরায় খননকার্য শুরু হয়। প্যারোসরাস মিসৌরিয়েনসিসের কঙ্কাল আবিষ্কার আসলে সেই দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফল বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
আরও পড়ুন: DART Mission: দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান, DART মিশন লঞ্চ করল নাসা, একবছর ধরে চলবে অভিযান
আরও পড়ুন: Hubble Telescope: প্রায় একমাস পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে নাসার এই স্পেস টেলিস্কোপ